জেনে নিন কোন কোন পদ রাখবেন খাঁটি বাঙালি বিয়ের ভোজে।
বিয়ে মানেই চুটিয়ে মজা, হই-হুল্লোড় আর কব্জি ডুবিয়ে খাওয়াদাওয়া। ভোজনরসিকতার মাপকাঠিতে মাপতে গেলে বাঙালিদের নাম তালিকার উপরের দিকেই থাকে। বাঙালি মানেই ‘রসে-বশে জমিয়ে না খেলে আর খাওয়া হল কোথায়’? এমন অনেকেই আছেন যাঁরা বিয়ের ভোজন তালিকার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুধুই বাঙালি পদ রাখতে চান। জেনে নিন কোন কোন পদ রাখবেন খাঁটি বাঙালি বিয়ের ভোজে।
প্রথমেই আপনাকে নিরামিষ এবং আমিষ দু’রকম খাবারেরই পদ বিয়ের ভোজে রাখতে হবে। শীত হোক বা গ্রীষ্ম কোন ঋতুতে বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে সেই অনুযায়ী আপনাকে খাবারের পদ বাছতে হবে। শীতের মরসুমে বিয়ে হলে খাবারের তালিকায় একটু মশলাদার খাবার অনায়াসেই রাখতে পারেন, আবার গরমকালের জন্য একটু হাল্কা পদই বেছে নিন।
শীতকালীন বিয়েতে সন্ধ্যার শুরুতেই থাক আদা-এলাচ দেওয়া চা কিংবা কফি। সঙ্গে থাকুক ফিশ ফিঙ্গার, চিকেন পকোরা। নিরামিষের ক্ষেত্রে রাখতে পারেন মোচার চপ অথবা ফুলকপির বা পনির পকোরার মতো কিছু।
খাওয়ার শুরুতেই পাতে পড়ুক গরম গরম ফিস ফ্রাই বা ফিস কবিরাজী সঙ্গে কাসুন্দি আর স্যালাদ।
ছবি সৌজন্যে: গেট ইওর মেনু ব্লগ।
এর পরই পাতে পড়ুক পদ হিং বা কড়াইশুঁটির কচুরি বা নানপুরী। সঙ্গে থাকুক কাশ্মীরি আলুর দম বা নতুন বা নতুন আলুর দম। একটু অন্য রকম কিছু চাইলে স্টাফড আলুর দম কিংবা লুচির সঙ্গে নারকেল দিয়ে ছোলার ডালও করতে পারেন।
‘মাছে ভাতে বাঙালির’ বিয়ের ভোজন তালিকা মাছ থাকবে না তা কী করে হয়! মেন কোর্সের জন্য বেছে নিতে পারেন বাসমতী চালের ধোঁয়া ওঠা সাদা ভাতের সঙ্গে ভেটকি বা ইলিশ পাতুরির মতো খাঁটি বাঙালি পদ। এ ছাড়াও দই কাতলা, কাতলা কালিয়া, পাবদার ঝাল কিংবা চিংড়ির মালাইকারি এ সবের মধ্যে থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দসই যে কানও পদ। অনেক ক্ষেত্রেই নিমন্ত্রিতরা ভাজা-ভুজি পছন্দ করেন না। সে ক্ষেত্রে যদি শুরুর দিকে যদি কিছু ভাজা পদ থাকে তা হলে মেন কোর্সে রাখতে পারেন ভেটকি ভাপা বা ইলিশ ভাপা।
ছবি সৌজন্যে: গেট ইওর মেনু ব্লগ।
কলকাতায় এসে বিরিয়ানির প্রেমে পড়েননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। বিরিয়ানির সঙ্গে থাকুক পোস্ত, দই, কাজু দিয়ে তৈরি চিকেন বা মটন রেজালা। বিরিয়ানির সঙ্গে চিকেন বা মাটন কষাও বেশ ভাল বিকল্প হতে পারে। তবে বাসন্তী পোলাও পেলে বাঙালি আরও খুশি হবেন। নিরামিষাশীদের জন্য এ বেলায় থাক মিষ্টি পোলাও বা ফ্রায়েড রাইসের মতো পদ। সঙ্গে ছানার বা ধোকার ডালনা। ফুল কপির রোস্টও কিন্তু দারুণ বিকল্প হতে পারে।
ছবি সৌজন্যে: গেট ইওর মেনু ব্লগ।
এ সবের পরেই পালা আসে চাটনি, পাঁপড় মিষ্টির। চিরাচরিত খেজুর, টমেটো, কাজু-কিশমিশ, আলুবোখরার চাটনি তো রয়েছেই, আমসত্ত্বের চাটনি, কাঁচা পেঁপের চাটনি বা প্লাস্টিক চাটনি অথবা আনারসের চাটনিও রাখতে পারেন তালিকায়।
চাটনির সঙ্গে পাঁপড় ভাজা রাখতে ভুলবেন না কিন্তু।
বাঙালি বিয়েতে শেষ পাতে মিষ্টি থাকবে না, তা কখনও হতে পারে? খাওয়াদাওয়ার পরে মিষ্টিমুখের জন্য থাকুক নলেন গুড়ের রসোগোল্লা, সঙ্গে ক্ষীরপুলি বা অন্য কোনও সন্দেশ।
বাঙালি হোক বা অবাঙালি, কলকাতার মিষ্টি দইকে না বলবে এমন সাধ্য কার? এ ছাড়াও এখন নলেন গুড় বা রাবড়ির স্বাদও উপভোগ করতে পারবেন আইসক্রিম দিয়েও।
কথায় আছে, ‘সব ভাল যার, শেষ ভাল তার’। ভোজন তালিকা শেষ হোক মিষ্টি পানের মুখশুদ্ধি দিয়ে