প্রতিবেদন: সৌরভ, সম্পাদনা: বিজন
প্রথমে বিরোধ, তারপর সংঘাত! তিলজলায় নাবালিকা খুনের ঘটনায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এসে প্রথমে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়ের সঙ্গে বাক্ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনগো। জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন যখন নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলছে তখন কেন ‘অনধিকার প্রবেশ’ করছে রাজ্য? এমনকি সুদেষ্ণা রায়ের বিরুদ্ধে ‘গুন্ডামি’ করার অভিযোগও তুলেছেন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো। পাল্টা রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় দাবি করেন, তাঁরা সহযোগিতাই করছেন। তাঁর বক্তব্য, এই ধরনের ঘটনায় কেন্দ্র এবং রাজ্য একে অপরের হাত ধরেই কাজ করবে, সুপ্রিম কোর্টই এই এক্তিয়ার দিয়েছে। বিরোধের সেই শুরু।
এরপর নির্যাতিতার পরিবারকে শ্রীধর রায় রোডের বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয় তিলজলা থানায়। ঠিক হয় জিজ্ঞাসাবাদ হবে থানায়। প্রাথমিক পর্যায়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে তদন্তকারী অফিসার বিশ্বক মুখোপাধ্যায়ের ঘরে থাকতে চেয়েছিলেন সুদেষ্ণা রায়। কিন্তু প্রিয়ঙ্ক কানুনগোর সম্মতি না থাকায় শেষ পর্যন্ত থানা ছাড়তে বাধ্য হন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন। সুদেষ্ণা রায় বেরিয়ে যেতেই নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রধান প্রিয়ঙ্ক কানুনগো।
এরপরেই গোটা ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে তদন্তকারী অফিসার বিশ্বক মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, যাবতীয় জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শেষ করে কলকাতা পুলিশের ‘বডিক্যাম’ নিয়ে যেতে চাইছেন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো। কেন তাঁকে না জানিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব চলাকালীন ‘বডিক্যাম’ রাখা হল, এই প্রশ্ন তোলেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান। অন্যদিকে তদন্তকারী অফিসারের দাবি, “আমরা বাজে কিছু বলে থাকলে সেটাও রেকর্ড হবে, আর উনি যদি কিছু বলে থাকেন সেটাও রেকর্ড থাকবে।” এই বচসা চলতে চলতেই উত্তপ্ত হতে থাকে পরিস্থিতি। শেষ পর্যন্ত প্রিয়ঙ্ক কানুনগো যখন ‘বডিক্যাম’ নিয়ে বেরোতে যান, তাঁকে বাধা দেন তিলজলা থানার অফিসার বিশ্বক মুখোপাধ্যায়। যার ফলস্বরূপ, তৈরি হয় চরম বিশৃঙ্খলা। থানা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রিয়ঙ্ক কানুনগো অভিযোগ করেন, পুলিশ তাঁর সঙ্গে গুন্ডামি করেছে, বিশ্বক মুখোপাধ্যায় তাঁকে মারধর করে বডিক্যাম ছিনিয়ে নিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে প্রিয়ঙ্ক জানান গোটা বিষয়টি তিনি ভারত সরকারকে জানাবেন। যদিও এই বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি রাজ্য পুলিশ।