বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় ৪৬ ঘণ্টা। উদ্ধারকাজ শেষ করে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতির কাজ চলছে বলে জানিয়েছে রেল। প্রায় ১০০০ জন রেলকর্মী নিরলস ভাবে কাজ করছেন। রবিবার দুপুর ১২টার একটু পরে ডাউন লাইনটি মেরামতির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে। তবে এখনও ওই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু করা হয়নি। রবিবার দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, “আমরা আজ রেললাইন মেরামতির চেষ্টা করছি। দেহ সরানো হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য বুধবারের মধ্যে মেরামতির কাজ শেষ করা, যাতে এই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে।”
রবিবার সকালে রেল জানায়, শালিমার-করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যে ২১টি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছিল বা লাইনের উপর আটকে ছিল, সেগুলি আপাতত সরানো হয়েছে। সরানো হয়েছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত মালগাড়ির তিনটি কামরাও। ভেঙে যাওয়া কামরার অংশবিশেষ, যন্ত্রপাতি, চাকা ইত্যাদি এখন দুর্ঘটনাস্থল থেকে পরিষ্কার করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে কাজ করছে রেলের তিনটি মালগাড়ি এবং ক্রেন। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব এলাকা পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার অভিঘাতে ওই এলাকার রেললাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সেই লাইন সংযোগের কাজও চলছে জোরকদমে। রবিবার রাত থেকেই ঘটনাস্থলে থেকে মেরামতির কাজ তদারকি করছেন রেলমন্ত্রী। রেল সূত্রে খবর, অন্তত একটি লাইনে যাতে দ্রুত ট্রেন চালানো যায়, সেই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ হাওড়ার অদূরে শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়েছিল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রায় চার ঘণ্টা পরে ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ কামরার ট্রেনটি। তা লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়িকে ধাক্কা মেরে লাইনচ্যুত হয়। করমণ্ডলের একাধিক কামরা ছিটকে গড়িয়ে যায় পাশের লাইনে। সেই সময় পাশের ডাউন লাইনে আসছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনেরও দু’টি কামরা বেলাইন হয়।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রেল। আহত ৮০০-র বেশি মানুষ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে রেল। এ ছাড়া, গুরুতর আহতদের ২ লক্ষ টাকা এবং অপেক্ষাকৃত কম আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।