প্রতিবেদন: প্রিয়ঙ্কর, সম্পাদনা: অসীম, উপগ্রহ চিত্র সৌজন্য: সায়ন্তন দাস
২০১৬ সালে এ রকম তীব্র তাপপ্রবাহ দেখেছিল শহর কলকাতা। তার সাত বছর বাদে আবার টানা ৭-৮ দিন খরতাপে নাজেহাল শহরবাসী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আপৎকালীন ছুটি দেওয়া হয়েছে। বেড়েছে এসি, কুলার কেনার হিড়িক। রাস্তায় সরবত-লস্যির দোকানে ভিড়। কিন্তু কেন এ রকম ঘামহীন, কাঠফাটা গরম? আবহাওয়ার এই চরিত্র কতটা স্বাভাবিক? এত দিন গ্রীষ্মে শীতলতার ছোঁয়া আনত যে কালবৈশাখী, তারও দেখা নেই। কারণ কী? প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের অধ্যাপক সৌমেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলছেন, এমনিতেই ‘এল নিনো’র পরের বছর তাপপ্রবাহ হওয়ারই কথা। সৌমেন্দু জানাচ্ছেন ভূ-পৃষ্ঠের অনেক উঁচু দিয়ে বয়ে যাওয়া বাতাস ‘জেট স্ট্রিমে’র কাণ্ডকারখানার কথা। তাঁর মতে, মার্চ-এপ্রিলে ভারতে এই তাপপ্রবাহ স্বাভাবিক। কিন্তু যেটা স্বাভাবিক নয়, সেটা হল কলকাতায় এ বারের এই ঘামহীন, শুকনো গরমের দাপট। বিশ্ব উষ্ণায়ন? অস্বীকার না করলেও সৌমেন্দু মনে করেন বিশ্ব উষ্ণায়নের উপর দায় চাপিয়ে বসে না থেকে প্রয়োজন স্থানীয় উদ্যোগের, তাপপ্রবাহের মোকাবিলায় সুষ্ঠু প্রশাসনিক নীতি নির্ধারণের।
নির্বিচারে জলাভূমি ও সবুজ ধ্বংসই বা কতটা দায়ী শহরের এই চরম আবহাওয়ার পিছনে? একটি হিসাব অনুযায়ী, ২০০৬ সালে প্রায় ৪ হাজার পুকুর ছিল কলকাতায়, ২০২১-এ সংখ্যাটা নেমে দাঁড়িয়েছে দেড় হাজারের একটু বেশিতে। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফল আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনা, পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের তা-ই বিশ্বাস। এক দিন আসবে যখন অন্য রাজ্য থেকে পর্যটকেরা এ শহরে মরুভূমি দেখতে আসবেন, আশঙ্কা সুভাষের।