ভাঙতে ভাঙতে এক দিন গঙ্গা হয়তো প্রিয় স্কুলবাড়িটা গ্রাস করে ফেলবে। সেই বিপদের আশঙ্কায় হুগলির বলাগড়ের চরখয়রামারির অনেক অভিভাবকই অন্য স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন তাঁদের সন্তানকে। তাদের মধ্যে রয়েছে চরখয়রামারির পড়ুয়া নয়ন মজুমদারও। কিন্তু জীবনের প্রথম স্কুলের স্মৃতি ভুলতে পারেনি নয়ন। এখন সময় পেলেই ভাঙনের কিনারায় দাঁড়ানো স্কুলে গিয়ে সেই স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায় সে।
স্কুলবাড়ির ছাদে উঠলে এক সময় নয়ন দেখতে পেত গঙ্গা। ওই স্কুলে সে শিশু শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। তখন অবশ্য নদী ছিল বেশ খানিকটা দূরে। কিন্তু এখন নদী এগিয়ে এসেছে স্কুলের চৌহদ্দির মধ্যে। সেই স্কুল ছেড়ে দিলেও, সেখানে কাটানো দিনগুলি আজও তাড়া করে বেড়ায় নয়নকে। তাই সে সময় পেলেই চলে আসে জিরাটের চরখয়রামারির সেই স্কুলে। ঘুরে দেখে তার প্রিয় স্কুলবাড়ি। নয়ন জানিয়েছে, এক সময় স্কুল লাগোয়া একটি মাঠও ছিল। সেখানে সে তার বন্ধু-বান্ধবী দিয়া, সায়ন, অর্ণব এবং আরও অনেকের সঙ্গে খেলত। কিন্তু এখন ভাঙনের কবলে পড়ে সেই মাঠ গঙ্গার গর্ভে মিলিয়ে গিয়েছে।
নয়নের কথায়, ‘‘স্কুলে পা দিলেই সেই পুরনো দিনের কথা আমার মনে পড়ে যায়। ওই সময়টা আমি কিছুতেই ভুলতে পারি না। ভুলতে চাইও না। স্কুল যদি ভাঙনে তলিয়েও যায় তা হলেও আমার মনে সেই ছবিগুলি থেকে যাবে। সেটা গঙ্গা কখনই কেড়ে নিতে পারবে না।’’