প্রতিবেদন: সুদীপ্তা, সম্পাদনা: অসীম
১৯১৮ সালের দোকান। হাতিবাগানে বিধান সরণির উপর এই তেলেভাজার দোকানের প্রতিষ্ঠাতা খেদু সাউ। তিনি ছিলেন নেতাজি অন্তপ্রাণ। ১৯৪২ সাল থেকে খেদুবাবু সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালন করা শুরু করেন। তখন থেকেই তিনি ব্রিটিশাধীন ভারতে নেতাজির জন্মদিনে বিনামূল্যে তেলেভাজা খাওয়াতেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথমবার নেতাজির জন্মদিনে একেবারে ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করে বিনামূল্যে তেলেভাজা খাইয়েছিলেন খেদু সাউ। সেই থেকেই শুরু। এখনও দাদুর দেখানো পথেই হাঁটছেন নাতিরা। কেষ্টকুমার গুপ্ত, মোহনকুমার গুপ্ত— ঘটনাচক্রে যাঁরা এখন দোকানের কর্ণধার, তাঁরাও প্রতি বছর নেতাজির জন্মদিনে তেলেভাজা খাওয়ান। সকাল ন’টা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত যাঁরাই হাতিবাগানের লক্ষ্মী নারায়ণ সাউ অ্যান্ড সন্সে আসেন, ‘নেতাজির প্রসাদ’ স্বরূপ তাঁদেরকে দেওয়া হয় ফুলুরি, আলুর চপ, পেঁয়াজি, বেগুনি।
কেষ্টকুমারের কথায়, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের একাধিক গুপ্ত বৈঠকের সাক্ষী ‘লক্ষ্মী নারায়ণ সাউ অ্যান্ড সন্স’ নামের এই তেলেভাজার দোকান। এই দোকান ছিল ‘ইনফেরমেশন সেন্টার’। বিপ্লবীদের উদ্দেশে কোনও বার্তা দেওয়ার থাকলে, এই দোকান থেকে চিঠি চালাচালি হত। সুভাষ চন্দ্র বসু যখন স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়তেন তখনও এই দোকানে এসে তেলেভাজা খেয়েছেন তিনি, দাবি কেষ্টকুমারের। দোকানের অপর কর্ণধার মোহনকুমার গুপ্ত যিনি ঘটনাচক্রে স্থানীয় কাউন্সিলরও, তাঁর বক্তব্য, এই দোকানে অনেক দূর থেকে মানুষ তেলেভাজা খেতে আসেন। নেতাজির সেই আবেগের কথা মাথায় রেখেই একাধিক জায়গায় এই দোকানের শাখা খোলার কথা ভাবা হচ্ছে।