Sandip Ghosh

মর্গের রেজিস্টার ‘গুম’ করে মরদেহ ‘কেলেঙ্কারি’! সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ

অধ্যক্ষ থাকাকালীন সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ ছাড়াও অভিযোগ রয়েছে সরকারি অর্থ নয়ছয়ের।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৪ ২১:৩৯
Share:
Advertisement

আরজি করের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আদালতের প্রশ্ন ছিল, কতটা ক্ষমতাবান হলে পদত্যাগের ৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে আবার নিয়োগ দেওয়া হয়— এটা কী ভাবে সম্ভব? প্রধান বিচারপতি টি শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, সন্দীপ ঘোষকে এখনই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। সোমবার সকালে আরজি কর হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দেন সন্দীপ ঘোষ। সোমবার বিকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, সন্দীপ ঘোষকে অন্যত্র পাঠানো হচ্ছে।

২৪ ঘণ্টাও কাটল না, অধ্যাপক সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট। এখন প্রশ্ন, কে এই সন্দীপ ঘোষ? ট্র্যাক রেকর্ড বলছে, ইনি আরজি কর হাসপাতালের ছাত্রাবাসের র‌্যাগিং বিতর্কে জড়িয়ে বদলি হয়েছিলেন এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই আবার অধ্যক্ষ হিসাবে পুনর্নিযুক্ত হয়েছিলেন। সন্দীপ ঘোষ সেই ব্যক্তি, যাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে মরদেহ লোপাটেরও। মর্গের রেজিস্টার গুম করে সরকারি নিয়ম উল্লঙ্ঘন করা হয়েছে, ২০২৩ সালে এই বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে নিয়ে এসেছিলেন আরজিকর হাসপাতালেরই এক চিকিৎসক।

Advertisement

সন্দীপ ঘোষের ছেলেবেলা কেটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয়। বনগাঁ হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ। আরজি কর থেকেই চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা। সেখানেই এমবিবিএস। তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত সন্দীপ ঘোষের আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ হিসাবে স্থলাভিষেক হয় ২০২১ সালে। ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে পদোন্নতির পর আরজি করে আসেন তিনি। প্রথমবার আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষের চেয়ার থেকে সরিয়ে তাঁকে পাঠানো হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। সে বার তিনি ফিরে এসেছিলেন মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে। এরপর ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আবার বদলি। সে বার ফিরতে সময় নিয়েছিলেন ২১ দিন।

আর তৃতীয়বার, তিনি নিজেই পদত্যাগ করলেন। অধ্যক্ষ থাকাকালীন সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ ছাড়াও সরকারি অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে। কোভিডের সময় অত্যাধুনিক যন্ত্র কিনেছিল আরজি কর হাসপাতাল। খরচ হয়েছিল ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। পরে জানা যায়, এই যন্ত্রের বাজার মূল্য ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। সন্দীপ ঘোষ নাকি টেন্ডারের ক্ষেত্রেও নিজের প্রভাব খাটিয়েছেন। ল্যাব টেকনিশিয়ান নিয়োগের ক্ষেত্রেও তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে স্বজনপোষণের অভিযোগ। অবৈধভাবে ইন্টার্ন নিয়োগের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। হাসপাতালের বর্জ্য বাংলাদেশে পাচার করার মতো গুরুতর অভিযোগও আছে তালিকায়।

Advertising
Advertising
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
সর্বশেষ ভিডিয়ো
Advertisement