১৪ অগস্ট। মেয়েদের রাত দখলের রাতেই ঘটে যায় অঘটন। প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী, রাত ১১টা ৫০ থেকে শুরু হয় গোলমাল। শ্যামবাজার থেকে আরজি করের দিকে এগিয়ে আসে বামেদের মিছিল, যার অগ্রভাগে ছিল বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। সেই সময়ই বিপরীত দিকে থাকা বেলগাছিয়া ব্রিজ থেকে আরজি করের মেইন গেটের দিকে ধেয়ে আসে একদল উন্মত্ত জনতা। প্রথমে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, তার পর ব্যারিকেড ভেঙে সোজা হাসপাতালের ভিতরে। সে সময় কম করে ৫,০০০ মানুষ ছিলেন বলেই অনুমান হাসপাতাল কর্মীদের। ১২টা ৩৫ থেকে জরুরি বিভাগের সামনে শুরু হয় তাণ্ডব। প্রথমেই ভেঙে দেওয়া হয় সিসিটিভি। ধ্বংসলীলা চলে রাত দুটো পর্যন্ত। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে নামে র্যাফ।
আরজি করের জরুরি বিভাগের ধ্বংসের যে ছবি আনন্দবাজার অনলাইনের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, সেখানে পরিষ্কার দেখা গিয়েছে তছনছ হওয়া টিকিট কাউন্টার, হাইব্রিড ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট, ওষুধের স্টোর রুমের দৃশ্য। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আন্দোলকারীদের মঞ্চ। আক্রান্ত হয়েছে পুলিশও। ‘ডুওলিন’, ‘বুডিকর্ট’, ‘রেসপাইট’, ‘স্ট্রেপ্টোকিনেস’ ইনজেকশনের মতো জীবনদায়ী ওষুধ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। কত স্যালাইন যে আরজি কর হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে রয়েছে, তার হিসাবই করা যাবে না। আইভি ক্যানুলা, ট্রপ টি কিটের মতো চিকিৎসার সরঞ্জামও নষ্ট করেছে দুষ্কৃতীরা। আরজি করের চিকিৎসকেরাই বলছেন এই সমস্ত ওষুধ হাঁপানির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হত। ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজ়িজ় অর্থাৎ ‘সিওপিডি’ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হত এই সব ওষুধ।
তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে সিপিএম এবং বিজেপি। বিরোধীদের তরফে আবার শাসক দলকেই আরজি করের তাণ্ডবের জন্য দোষারোপ করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।