গাওয়া ঘি, ময়দা, দুধ এবং মধু দিয়ে তৈরি করা হয় বাবরসা মিষ্টি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এই প্রসিদ্ধ মিষ্টির জন্য এ বার জিআই তকমা চাইছে ঘাটাল মহকুমায় ক্ষীরপাই পুরসভা। সে কারণে দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ল সায়েন্সের কাছে আবেদনও করেছে তারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাবরসার জন্ম প্রায় ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে। ওই শতকের পাঁচের দশকে বর্গীরা বাংলার বিভিন্ন জায়গায় লুঠপাট করে চলে যেত। ১৭৪৮ থেকে ১৭৫৩ সালের কোন এক সময়ে বর্ধমান থেকে বর্গীরা হামলা চালাতে চালাতে ক্ষীরপাইয়ের দিকে আসছিল। ক্ষীরপাইয়ের তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত ইংরেজ অফিসার এডওয়ার্ডস বাবরসের দ্বারস্থ হন বাসিন্দারা। বর্গী আক্রমণ থেকে ক্ষীরপাইকে রক্ষা করতে অনুরোধ করেন। বাবরস্ ক্ষীরপাইয়ের অনতিদূরে শ্যামদেবের কাছে বর্গীদের আটকে দেন। এর পরেই পরান আটা নামে জনৈক্য মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী ময়দা, দুধ, ঘি এবং মধু দিয়ে নতুন এক মিষ্টি তৈরি করে বাবরস্কে উপহার দেন। তার পর তাঁর নাম অনুসারে ওই মিষ্টির নাম হয় বাবরসা।নামকরণ নিয়ে ভিন্ন একটি মত রয়েছে। সেই মত অনুসারে, এলাকার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী মোঘল সম্রাট বাবরকে খুশি করতে তাঁর সেনাপতির হাতে এই নতুন ধরনের মিষ্টি তৈরি করে পাঠিয়ে দেন। খোদ বাবর এই মিষ্টি খেয়ে প্রশংসা করেন। তাঁর নামেই হয় মিষ্টির নামকরণ। ক্ষীরপাই পৌর এলাকার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা এত বছর ধরে এই মিষ্টিকে জিইয়ে রেখেছে। তাঁরা দীর্ঘদিন দাবি করছিলেন, বাবরসা মিষ্টান্নকে জিআই তকমা দেওয়া হোক। এ বার সেই নিয়ে সক্রিয় ক্ষীরপাই পুরসভা। পুরপ্রধান দুর্গাশঙ্কর পান বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি শীঘ্রই বাবরসা জিআই তকমা পেয়ে যাবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।’’ ক্ষীরপাই পৌর ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি সভাপতি বীরেশ্বর পাহাড়ি বলেন, ‘‘বাবরসা জিআই তকমা পেলে বিশ্ব বাজারে তার খ্যাতি বাড়বে।’’