প্রতিবেদন: প্রিয়ঙ্কর, চিত্রগ্রহণ: সুব্রত ও প্রিয়ঙ্কর, সম্পাদনা: সুব্রত, গ্রাফিক: বিজন
উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের গ্রাম রামেশ্বরপুর। ইচ্ছামতী এখানে স্রোতস্বিনী। ও পারে বাংলাদেশ। ঘোষবাড়ির ছাদ থেকে পড়শি দেশের আম, কাঁঠাল, বাঁশের বন চোখে পড়ে। ও পার থেকেই এসেছিলেন ঘোষেরা। এখন বাড়ির অধিকাংশটাই ভগ্নদশা, জঙ্গলে-আগাছায় ঢেকেছে মূল অংশ। তা সত্ত্বেও দুর্গাপুজো বন্ধ হয়নি। ঠিক কবে এ বাড়ির ঠাকুরদালানে একচালা প্রতিমা গড়ে পুজোর শুরু, তা আজ কেউই ঠিক বলতে পারেন না। তবে তিনশো বছরের বেশি তো হবেই, জানাচ্ছেন ঘোষ পরিবারের প্রৌঢ় সদস্য, প্রাক্তন রাজ্য সরকারি আমলা দীনবন্ধু ঘোষ। আজও সেই ঠাকুরদালানেই প্রতিমা গড়েন কুমোর। বছরের পর বছর ধরে একই বংশের মৃৎশিল্পীরা ঘোষেদের প্রতিমা গড়ে আসছেন। আরও অনেক প্রথার মতো দেবীমূর্তি নির্মাণেও ঘোষেরা তাঁদের পুরনো ধারা অটুট রেখেছেন— এখানে আজও ‘মা’র প্রতিমা তৈরিতে হাত লাগান মহিলা মৃৎশিল্পীরা। পরিবারের বিশ্বাস, কাদামাটির তালে নারীশক্তির আবাহনে সক্ষম মেয়েরাই। অতীতের জৌলুস ফিকে হয়েছে, সময়ের চাকার ঘূর্ণিতে ঘোষবাড়ির শরিকেরা ছড়িয়েছিটিয়ে পড়েছেন দূরদুরান্তে। তবে এখনও পুজোর অনেক রীতিনীতিই সযত্নে বাঁচিয়ে রেখেছেন বর্তমান প্রজন্ম।
ঘোষেদের পুজোর এ রকম আরও অনেক গল্প পরিবারের সদস্য দীনবন্ধু ঘোষের মুখে। আর সঙ্গে ইচ্ছামতীর কোল ঘেঁষা ইট-সুড়কির পুরনো অট্টালিকার স্মৃতির অলিন্দে হাঁটা বাড়ির সদস্যের হাত ধরে। আনন্দবাজার অনলাইনের ‘সাবের পুজোর পুরাতনী গল্প’ সিরিজ়ের প্রথম পর্বে হাসনাবাদের ঘোষ বাড়ি।