কেউ ’৪৭-এর পরেই এ পারে চলে এসেছিলেন। কেউ বা তারও অনেক পরে। আর কোনও দিন নিজের পৈতৃক ভিটেয় ফিরে যাওয়া হয়নি। ওটা যে এখন বিদেশ। কাঁটাতারে ভাগ হয়ে যাওয়া মানচিত্র, আলাদা পতাকা, নোট— বাংলাদেশ। কিন্তু মন কি আর সীমানার রক্তচক্ষুকে ভয় পায়! এক বার যদি ফিরে যাওয়া যেত শৈশবের সেই খেলার মাঠ, উঠোন, পুকুরপাড়ে! এই ভাবতে ভাবতেই অনেকেই মারা গিয়েছেন, যাওয়া আর হয়নি। তাঁদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে অনেকেরই বাপ-কাকার ফেলে আসা গ্রাম, বাড়ি নিয়ে আগ্রহের অন্ত নেই। কিন্তু ৭০-৭৫ বছর আগে ছেড়ে আসা সে জায়গাজমি আদৌ আছে? চিনতে পারবেন তো? এই সবের চক্করে আর ফিরে যাওয়া যায় না হারিয়ে ফেলা শিকড়ে। লক্ষ লক্ষ বাঙালির দেশভাগে হারানো ভিটেমাটির খোঁজ দিতেই ফেসবুকে ‘বঙ্গ ভিটা’ নামের পেজের ভাবনা বাংলাদেশের সরকারি চাকুরে মহম্মদ সইফুল ইসলামের। সইফুল আর তাঁর বন্ধুদের দৌলতে প্রায় পাঁচশো পরিবার তাঁদের পূর্বপুরুষের ভিটের সন্ধান পেয়েছেন দুই বাংলায়। সীমান্ত তো সরকারের খাতায় আর ম্যাপে। মানুষের মন আর আন্তর্জাল— কাঁটাতারের জোর কি আর সেখানে খাটে!