ভিডিও এডিটিং : অসীম রায়চৌধুরী
পড়ানো তাঁর পেশা। শিক্ষা দেওয়া তাঁর নেশা। এই টানেই বছর বাহান্নর পুরুষমানুষটি নারী সেজে বেরিয়ে পড়েন পথে পথে। হুগলির খানাকুলে মাজপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায় তখন পরিচয় বদলে গোলাপসুন্দরী। বেশ তাঁর নারীর। কণ্ঠে তাঁর গান।
ছোট ছোট পঙ্ক্তির ছড়া। তাতে বসানো পাঁচালির সুর। কখনও কোনও স্কুলের গেটের সামনে সেটাই গলা ছেড়ে গাইতে থাকেন। বুকের কাছে রাখা ছোট্ট স্টিলের পাত্রে আঙুলের টোকায় তাল ঠোকেন। পায়ের ঘুঙুরে ওঠে শব্দছন্দ। গোলাপসুন্দরী গাইছেন, ‘ছেলেদের ২১ আর মেয়েদের ১৮ হলে, তবেই তাদের দু’জনের বিয়ে দেওয়া চলে…।’ গাইতে থাকেন নিজেরই লেখা বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সচেতনতার ছড়া-গান।
ইচ্ছা আর ভাবনার সূত্রপাত বছরখানেক আগে। শুরু করেছেন মাস সাতেক। গোলাপসুন্দরী হয়ে কোথায় না কোথায় চলেছেন! শ্যাওড়াফুলি থেকে পায়ে হেঁটে তারকেশ্বরের শ্রাবণীমেলা। কৌশিকী অমাবস্যার ভিড়-ঠাসা তারাপীঠ। হেঁটে খানাকুল থেকে কলকাতা। গিয়েছেন বিধানসভাতেও। দেবাশিসের লক্ষ্য একটাই, বাল্যবিবাহ বন্ধ হোক। আর সে কারণেই নারীরূপে তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন নিজের গ্রাম, পাশের গ্রাম, ভিন্জেলা, এমনকি ভিন্রাজ্যেও।