মিরিকের কাছেই রয়েছে বংকুলুং, সবুজে মোড়া ছবির মতো গ্রাম। ছবি: সংগৃহীত।
শিলিগুড়ি শহর ছাড়ালেই শালের জঙ্গল। সেই সবুজে চোখ ডুবতে না ডুবতেই উঁকি দেয় চা-বাগান। খানিক যেতে না যেতেই শুরু হয় পাহাড়।
সেই পাহাড়ি পথ ধরেই পৌঁছনো যায় বংকুলুঙে। বালাসন ও মুরমা নদী বয়ে গিয়েছে কোলাহল বর্জিত ছোট্ট গ্রামটির উপর দিয়ে। চারদিক ঘন সবুজ। প্রকৃতি যেন উদারহস্ত। গ্রামের ছোট ছোট বাড়িতে রঙিন ফুলের সম্ভার। বংকুলুঙের আনাচ-কানাচে রয়েছে দারচিনির ক্ষেত।
শিলিগুড়ি বা মিরিক, দুই জায়গা থেকেই বংকুলুং বেশ কাছে। শিলিগুড়ি থেকে জায়গাটির দূরত্ব ৪৮ কিলোমিটার। মিরিক থেকে ১৬ কিলোমিটার মতো। যদি পাহাড়ের ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে একটা বা দু’টি দিন প্রকৃতির সান্নিধ্য চান, তবে এই গন্তব্য হতে পারে মনের মতো।
উত্তরবঙ্গের সুন্দর পাহাড়ি গ্রাম বংকুলুং। ছবি: সংগৃহীত।
বংকুলুঙের উচ্চতা খুব বেশি নয়। তাই এখানে ঠান্ডা তেমন পড়ে না। বরং ভীষণ গরমে এলে ঠান্ডা না পেয়ে কিঞ্চিৎ হতাশ হতে হবে। তবে বর্ষায় এই স্থান হয়ে ওঠে আর পাঁচটা পাহাড়ি এলাকার মতো ঘন সবুজ। আর পুজোর মরসুমে এলে প্রাপ্তি হবে কমলালেবু।
বংকুলুঙের মতো ছোট্ট জায়গায় এলে আশপাশটা পায়ে হেঁটে উপভোগ করাটাই ভাল। সঙ্গে যদি বয়স্ক কেউ থাকেন, তা হলে পাহাড়ে ওঠার টানা ধকল থেকে স্বস্তি দিতে পথেই এমন সুন্দর এক রাতের ঠিকানা বেছে নিতে পারেন।
বংকুলুঙের রাস্তায় হাঁটলে চোখে পড়বে ঘন সবুজের মধ্যে মুরমাহ নদীর জলধারা। আর রয়েছে বালাসন। এখান থেকে ঘুরে নিতে পারেন গ্যামন সেতু। দু’পাশে পাহাড়, নীচ দিয়ে বয়ে গিয়েছে পাহাড়ি নদী। স্থানীয়দের কাছে এই জায়গাটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পট। বর্ষায় এলে কাদাপথে নদীর উপত্যকা পর্যন্ত পৌছঁনো না গেলেও পুজোর সময় বা শীতে সেখানেই গাড়ি চলে যায়।
কী দেখবেন?
বংকুলুংয়ে এক কিংবা দু’রাত থাকলেই যথেষ্ট। ঘুরে নিতে পারেন গয়াবাড়ি ও মুরমা চা-বাগান। গ্যামন ব্রিজ থেকেও আশপাশের প্রকৃতি দেখতে বেশ লাগবে। জঙ্গল ও গ্রাম্য পথের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে হাঁটতে পারেন গ্রামটিতে।
থাকার জায়গা
বংকুলুঙে বেশ কয়েকটি হোমস্টে রয়েছে। ঘরোয়া খাবার মেলে সেখানে। পাওয়া যায় পাহাড়ি মানুষের আতিথেয়তা।
কী ভাবে যাবেন?
শিলিগুড়ি বা নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দুধিয়া হয়ে বংকুলুং যাওয়া যায়, আবার মিরিক হয়েও যাওয়া যায়। সরাসরি গাড়ি বুক করে নেওয়া যায়। নিউ জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে মিরিক যাওয়ার রাস্তায় পড়ে দুধিয়া। দুধিয়া ছাড়িয়ে গেলে মঞ্জু পার্ক। সেখান থেকে ৭-৮ কিলোমিটার গেলেই বংকুলুং। মিরিক থেকে সৌরিনী হয়ে আসা যায়।
মিরিকগামী শেয়ার গাড়িতে উঠে সৌরিনী বাজারে নেমে, সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করেও বংকুলুং আসতে পারেন। আবার দুধিয়া পর্যন্ত শেয়ার গাড়িতে এসে, বাকি রাস্তার জন্য হোমস্টে থেকে গাড়ি নিয়ে নিতে পারেন।