তিনটি স্বল্প পরিচিত পাহাড়ি পর্যটনকেন্দ্র ছবি: সংগৃহীত
নববর্ষ যত এগিয়ে আসছে, ততই যেন বাড়ছে গরমের প্রকোপ। আর গরমের হাত থেকে বাঁচতে অনেকেই নববর্ষের সপ্তাহান্তে ছুটে যেতে চান কোনও না কোনও শৈল শহরে। কিন্তু বাঙালির শৈল শহর মানে শুধুই কি দার্জিলিং-কালিম্পং? মোটেই না। রইল তিনটি স্বল্প পরিচিত পাহাড়ি পর্যটনকেন্দ্রের হদিশ।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
১। লেপচাখা
ভুটান সীমান্তে অবস্থিত লেপচাখা বক্সা-জয়ন্তী জাতীয় উদ্যানের একটি অংশ। অনেকে ছোট্ট এই জনপদকে ডুয়ার্সের রানি বলেও ডাকেন। জনপদটির উচ্চতা প্রায় সাড়ে তিন হাজার ফুট।
কী দেখবেন?
শহরের কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে চাইলে লেপচাখার নৈসর্গিক দৃশ্যের মধ্যে দিব্যি দিন দু’য়েক কাটিয়ে দেওয়া যায়। তবে চাইলে ঘুরে দেখতে পারেন বক্সা ফোর্ট। ছোট ছোট ট্রেক করে ঘুরে আসা যায় চুনাভাটি, অংচুংলু, তাসিগাও ও রোভার্স পয়েন্ট। অনেকে এখান থেকে ১৪ কিলোমিটারের রূপম ভ্যালি ট্রেকও করেন।
কোথায় থাকবেন?
লেপচাখায় ৮০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে হোম স্টে পাওয়া যায়। হোম স্টেগুলি রাজকীয় না হলেও স্থানীয়দের আতিথেয়তা অসাধারণ। রয়েছে ইকো হাট ও বনদফতরের বাংলোও।
কী করে যাবেন?
কলকাতা থেকে ট্রেনে নামতে হবে আলিপুরদুয়ার জংশন বা নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে। সেখান থেকে ছোট গাড়ি করে সান্তালাবাড়ি অথবা রাজাভাতখাওয়া চেকপোস্টে নেমে হেঁটে লেপচাখা যাওয়া যায়।
২। চটকপুর
চটকপুর সুমদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭৮৮৭ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত একটি ছোট পাহাড়ি গ্রাম। সেনচাল অভয়ারণ্যের মধ্যে অবস্থিত ছোট্ট এই জনপদটি হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার নিয়ে গড়ে উঠেছে । শহুরে কোলাহল থেকে দূরে প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানোর জন্য চটকপুর হতে পারে আদর্শ গন্তব্য।
কী দেখবেন?
কাছেই রয়েছে পবিত্র একটি জলাশয় ও সূর্যোদয় দেখার একটি স্থান। টাইগার হিলের থেকে এটি কোনও অংশে কম নয়। চাইলে সোনাদা হয়ে ঘুম মনাস্ট্রি যেতে পারেন। জঙ্গলের পথ ধরে হেঁটে চলে যাওয়া যায় টাইগার হিল। তবে নিতে হবে গাইড। চটকপুরে সরকারি উদ্যোগে এখন অর্গানিক ফর্মিং হচ্ছে। পর্যটকরা গ্রামে হেঁটে দেখতে দেখতে সরাসরি কিনতে পারেন সব্জিও। আর কিছুই না করতে চাইলে হোমস্টের ঘরে বসে পাখির ডাকের মধ্যে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন করেই কেটে যাবে দু’টি দিন।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি। গাড়ি ভাড়া করে চলে যান চটকপুর। দার্জিলিং যাওয়ার পথে তিন মাইল মোড় থেকে সেনচাল অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার। যাওয়া যায় সোনাদা থেকেও।
কোথায় থাকবেন?
চটকপুরে থাকার জন্য রয়েছে ইকো হাট। ভাড়া মোটামুটি মাথাপিছু ১৫০০ টাকা। এ ছাড়াও রয়েছে একাধিক হোম স্টে।
৩। ছোটা মাংওয়া
ছোটা মাংওয়া এখনও পর্যটন মানচিত্রে খুব একটা পরিচিত নয়। কাজেই যাঁরা নির্জনতার স্বাদ পেতে ভালবাসেন, তাঁদের জন্য এটি বেশ আকর্ষণীয় স্থান হতে পারে। অন্তহীন সবুজ, ফুল ও প্রজাপতির সঙ্গে রয়েছে গগনচুম্বী হিমালয়ও।
কী দেখবেন?
হাঁটা দূরত্বে রয়েছে প্রাচীন একটি মনাস্ট্রি। পাশাপাশি এখানে বেশ কিছু কমলালেবুর বাগানও রয়েছে। হেঁটে হেঁটে দেখে নেওয়া যায় সেগুলিও। কাছেই তাকদহতে রয়েছে অপরূপ সুন্দর একটি চায়ের বাগান। তিনচুলেও বেশি দূর নয়।
কী ভাবে যাবেন?
নিউ জলপাইগুড়ি জংশন থেকে ছোটা মাংওয়ার দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। দার্জিলিং থেকে গাড়িতে ছোটা মাংওয়া পৌঁছতে সময় লাগে ঘণ্টা দেড়েক। তার বদলে তিস্তা বাজার থেকে যাওয়া কিছুটা সহজ।
কোথায় থাকবেন?
এখানে থাকার জন্য সৌর বিদ্যুত পরিচালিত একটি ‘ইকোটুরিজম কমপ্লেক্স’ রয়েছে। এখানেই একাধিক থাকার জায়গা রয়েছে। তা ছাড়া রয়েছে কিছু হোম স্টেও।