বিদেশ-বিভুঁইয়ে একলা বেড়াতে যাবেন? রোমাঞ্চের সঙ্গে থাক সতর্কতাও। ছবি: ফ্রিপিক।
তাইল্যান্ডের নীল সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান? কিংবা সুইৎজ়ারল্যান্ড গিয়ে বরফে ঢাকা আল্পসের সামনে দাঁড়াতে চান? দেশ-বিদেশে বেড়ানোর শখ অনেকেরই থাকে। কারও পছন্দ মাসাইমারার জঙ্গল, কাউকে আবার টানে রহস্যময় পিরামিড।
কেউ কেউ সঙ্গীর অভাবে, কেউ আবার নিজের সঙ্গটুকু উপভোগ করতেই একলা বেরিয়ে পড়েন। সেই তালিকায় যেমন পুরুষ থাকেন, তেমনই মহিলা। দেশ হোক বা বিদেশ, একলা বেড়াতে গেলে নিজের সুরক্ষার খেয়াল অবশ্যই রাখতে হয়। তবে বিদেশে গেলে আরও বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। বিশেষত মহিলাদের। কারণ সেখানে আলাদা ভাষা, আলাদা সংস্কৃতি, কোথায়, কী ভাবে সাহায্য মিলবে কোনওটাই জানা না থাকলে, সমস্যা হতেই পারে।
বিদেশ ভ্রমণে একাকী মহিলার কোন সতর্কতা প্রয়োজন?
পড়াশোনা: যে দেশে যাচ্ছেন সেই দেশটি সম্পর্কে যতটা সম্ভব বিশদ জেনে নেওয়া প্রয়োজন। সেই দেশের সংস্কৃতি, গণ পরিবহণ, নামকরা স্থান, মানুষজন সম্পর্কে ধারণা থাকলে শুধু বেড়ানো নয়, নিরাপত্তার দিকটাও বজায় রাখা সম্ভব হবে। কোথা থেকে কোথায় যেতে হবে, কোন ধরনের যানবাহন চলে আগাম জানা থাকলে চট করে বিপদে পড়ার ভয় থাকবে না।
ভাষা: সমস্ত দেশই কিন্তু ইংরেজি বোঝে না। তাইল্যান্ডে গেলেও অনেকেই ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন না। ফলে বিপদে পড়লে সমস্যার কথা বোঝানো যেমন কঠিন হবে, তেমন নিজেও প্রতিপদে সমস্যায় পড়তে পারেন। ভিন্দেশের ভাষা চট করে শিখে ফেলা সম্ভব নয়, কিন্তু জরুরি কিছু বাক্য, খাবারের নাম সে দেশের ভাষায় কী বলে জেনে নিতে পারেন। এ জন্য এইআই টুল কাজে লাগাতে পারেন।
হস্টেল: একা গেলে খরচ একটি বড় বিষয়। সে ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য কোনও হস্টেল থাকে সেগুলি বেছে নিতে পারেন। না হলে হস্টেল বুক করার আগে তার সম্পর্কে বিশদে জেনে নিন। এখন যে কোনও থাকার জায়গার ‘রিভিউ’ পাওয়া যায় সমাজমাধ্যমে। সেগুলি পড়ে নিতে পারেন।
পারিপার্শ্বিক পরিবেশ নিয়ে সতর্কতা: বাইরে বেরোলে চোখ-কান খোলা রাখতেই হবে। পাসপোর্ট, টাকা খুব সাবধানে রাখা দরকার। পাসপোর্ট কোনও কারণে খোওয়া গেলে দেশে ফেরা ভীষণ ঝক্কির হবে। বিদেশে ভ্রমণে গেলে সঙ্গে সব সময় পাসপোর্ট সামলে রাখার পাশাপাশি হোটেলের ব্যাগে পাসপোর্টের প্রথম এবং শেষ পাতার রঙিন প্রতিলিপি, পরিচয়পত্র, ছবিও রাখা দরকার। কোনও কারণে পাসপোর্ট খোয়া গেলে এই নথিগুলি কাজে আসবে।
জরুরি নম্বর: যে দেশে যাচ্ছেন সেই দেশের পুলিশ-প্রশাসন, পর্যটন সংক্রান্ত কোনও হেল্পলাইন নম্বর, বিদেশে অবস্থিত নিজের দেশের দূতাবাসের নম্বর সংগ্রহে রাখাটা সব সময়ই ভাল। বিপদে পড়লে সাহায্যের জন্য কোথায় যাবেন না ভেবে, আগাম এই ভাবনাগুলি থাকলে সুবিধা হতে পারে। পাশাপাশি বিদেশ থেকে দেশের কার সাহায্য পাওয়া যাবে সেগুলি মাথায় রেখে ফোন নম্বর, ইমেল সঙ্গে রাখুন। সবটুকু মোবাইল বন্দি না করে পুরনো পন্থায় ফিরে ডায়েরিতেও টুকে রাখতে পারেন। কোনও কারণে মোবাইল অচল হলে বা খোয়া গেলে এই পন্থাই কিন্তু কাজে আসবে।
সন্দেহ হলে সচেতন হওয়া দরকার: অনেক সময়ই মনে কাউকে নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। মনে হয় আদৌ সেই মানুষটি ঠিক তো! মন কিন্তু নানা কারণে আগাম সতর্ক হয়। সেই ব্যাপারটি অবহেলা না করাই ভাল। ভ্রমণে রোমাঞ্চ থাক, তবে সতর্কতাও খুব জরুরি।