বিদেশে বেড়াতে গেলে টাকাপয়সা বদলানোর বিষয়টা সবচেয়ে জরুরি। বেড়ানোর মোট খরচ দেশীয় মুদ্রায় কতটা হতে পারে, প্রথমে তার একটা আগাম আন্দাজ করে নিতে হবে। বিশেষত আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া অর্থাৎ যে সব জায়গার কারেন্সি ভ্যালু আমাদের দেশের চেয়ে বেশি। থাকা, ঘোরা, খাওয়া, কেনাকাটা এবং ইমার্জেন্সি— প্রতিটি খাতে আলাদা করে টাকা ধরে রাখবেন। হিসেব করার সময়ে একটু বেশি করেই টাকা ধরবেন।
এখন প্রশ্ন, দেশ থেকে কতটা টাকা কনভার্ট করে নিয়ে যাবেন? পুরো টাকা বদলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় এবং তা ঝুঁকিপূর্ণও। লাগেজ হারালে বা দেরি করে পৌঁছলে সমস্যা হতে পারে। মোট খরচের ৩০ শতাংশ বিদেশি মুদ্রায় নিয়ে যেতে পারেন। যাতে গন্তব্যে পৌঁছেই কারেন্সি এক্সচেঞ্জের জন্য না দৌড়তে হয়। বাকি টাকা আপনি কার্ডে তুলতে পারেন বা ভারতীয় মুদ্রা নিয়ে যেতে পারেন। খেয়াল রাখবেন, এক্সচেঞ্জ রেট কিন্তু প্রতিটি দেশে আলাদা। কার্ডে টাকা তোলার সময়েও অ্যাকাউন্ট থেকে এক্সচেঞ্জ রেট কাটা যাবে।
এমনও হতে পারে দেখলেন যে, আপনার ব্যাঙ্কের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ওই দেশে গ্রহণযোগ্য নয়। তবে সাধারণত মাস্টার কার্ড, ভিসা কার্ড প্রায় সব দেশেই ব্যবহার করা যায়। সাবধানতা অবলম্বন করতে ফোরেক্স কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। অনেক ব্যাঙ্কই এই কার্ড ইসু করে। সুবিধে হল, এই কার্ড যে কোনও দেশে প্রযোজ্য। খুব প্রয়োজনে এটিএম থেকেও টাকা তোলা, সরাসরি কেনাকাটা করা বা বিল মেটানোও যাবে ফোরেক্সে।
টাকা বদল করবেন নির্ভরযোগ্য স্থান থেকেই। এয়ারপোর্ট, হোটেল থেকে বদলাতে পারেন। দোকান দেখলেই বুঝতে পারবেন, সেটি সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কি না। দিনে একাধিক বার এক্সচেঞ্জ রেট বদলাতে পারে এবং আলাদা দোকান আলাদা চার্জ নিতে পারে। তাই দেখেশুনে টাকা বদলাবেন। বদলানোর সময়ে ভাল করে টাকা গুনে নেবেন। বিদেশে কোনও অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা বিনিময় করবেন না। অনেক সময়ে প্রতারণা চক্র জাল নোট গছানোর চেষ্টা করে।
ভারতীয় কারেন্সি সব দেশেই ভাঙানো যায়। কিন্তু খুব বেশি পরিমাণে টাকা ভাঙাতে গেলে সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ফোরেক্স বা আপনার ক্রেডিট কার্ড মুশকিল আসান হতে পারে। আরও একটি উপায় রয়েছে। দেশ থেকেই পাউন্ড, ডলার বা ইউরো নিয়ে গেলেন। ভারতীয় মুদ্রার তুলনায় এগুলি এক্সচেঞ্জ করতে সুবিধে হবে। মূল্যও বেশি পাবেন।
ইউরোপে বেড়ানোর ক্ষেত্রে কয়েকটি জিনিস মাথায় রাখুন। গোটা ইউরোপ জুড়েই ইউরোর মাধ্যমে লেনদেন হয়। তার সঙ্গে কিছু দেশ নিজস্ব কারেন্সিও ব্যবহার করে। সেই কারেন্সি ভারতীয় মুদ্রার অনুপাতে ইউরোর তুলনায় সস্তা। সে ক্ষেত্রে লেনদেন ওই দেশের কারেন্সিতেই করুন।
বেড়াতে গিয়ে কেনাকাটা বা খাওয়াদাওয়া করার সময়ে খেয়াল রাখবেন, ভারতীয় মুদ্রায় কতটা টাকা ব্যয় হচ্ছে। প্রয়োজনে মোবাইলে মানি কনভার্ট করে দেখে নিন। নয়তো বেহিসেবি খরচের সম্ভাবনা থাকে।