পাহাড়, টিলা, শাল, শিমুল, মহুয়ার অরণ্যে ঘেরা শিমুলতলা যেন শান্তির পীঠস্থান। ছবি: সংগৃহীত।
চারিদিকে বসন্তের আমেজ। আর কয়েক দিনের অপেক্ষা। তার পরেও বসন্ত উৎসব। আবিরের রঙে রেঙে ওঠার দিন। চারদিকের এমন রঙিন আবহে দোল উদ্যাপনের জন্য অনেকেরই মন অন্য ঠিকানা খোঁজে। দৈনন্দিন রোজনামচা থেকে কিছুটা হলেও আলাদা ভাবে সময় কাটাতে ইচ্ছা হয়। তা ছাড়া দোল উপলক্ষে কয়েক দিন ছুটিও মেলে। দোলের ছুটিটা বাড়িতে বসে নষ্ট করার কোনও মানেই হয় না। তাই অনেকেই সপরিবার বেড়িয়ে পড়েন কাছেপিঠে। এ বছর দোলেও তেমন কোনও পরিকল্পনা থাকলে ঘুরে আসুন শিমুলতলা থেকে।
বিহারের একটি ছোট্ট গ্রাম শিমুলতলা। কলকাতা থেকে শিমুলতলার দূরত্ব প্রায় ৩৬৫ কিলোমিটার। শহরের কলরব থেকে নিভৃতে দোল যাপনের এর চেয়ে ভাল জায়গা আর হয় না। এখন অবশ্য সারি সারি শিমুলগাছ নেই। তবে শিমুলতলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিভোর হতে হয়। ছোটখাটো অজস্র জঙ্গল, ইউক্যালিপটাসের সারি, ছোট ছোট পাহাড় আর সবুজের সমারোহে মন ভাল হতে বাধ্য।
পাহাড়, টিলা, শাল, শিমুল, মহুয়ার অরণ্যে ঘেরা শিমুলতলা যেন শান্তির পীঠস্থান। শিশির ভেজা লাল মোরামের পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে সন্ধান পাবেন এক অসীম সৌন্দর্যের। যে সৌন্দর্য চোখে লেগে থাকবে আজীবন। শিমুলতলার মূল আকর্ষণ হল লাট্টু পাহাড়। নলডাঙার রাজবাড়িকে পাশে রেখে মাঠ পেরিয়ে উঠতে হবে এই পাহাড়ে। গাছপালা দিয়ে ঘেরা এই পাহা়ড়ের মাথায় চড়লে দেখতে পাওয়া যাবে আদিবাসী দেবতাদের স্থান।
শিমুলতলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিভোর হতে হয়। ছবি: সংগৃহীত।
শিমুলতলার রেললাইন পেরিয়ে ৬ কিমি দূরে পাহাড় আর অরণ্যের মাঝে মনোরম পরিবেশে হলদিঝোরাও দেখে আসতে পারেন। যাওয়ার পথে পড়বে টেলবা নদীর ধারে সিকেটিয়া আশ্রম, ধীরহারা ঝোরা, যা দেখে মনের মধ্যে উথালপাথাল করতে পারে। শিমুলতলার আবহাওয়া সারা বছরই মনোরম থাকে। বসন্তে তা যেন আরও স্বস্তিদায়ক হয়।
শিমুলতলার আশপাশেই রয়েছে বৈদ্যনাথ মন্দির, ত্রিকূট পাহাড়, নওলাখা মন্দির, তপোবন, নবদুর্গা মন্দির, ক্লক টাওয়ার-এর মতো অনেক দর্শনীয় স্থান। সেগুলিও দেখে আসতে ভুলবেন না।
কী ভাবে যাবেন?
হাওড়া স্টেশন থেকে রাতের ট্রেন মোকামা প্যাসেঞ্জারে করে যেতে পারেন শিমুলতলা। এ ছাড়া হাওড়া থেকে দিল্লি জনতা এক্সপ্রেসে চেপেও যেতে পারেন।
কোথায় থাকবেন?
শিমুলতলা স্টেশনে নেমেই চোখে পড়বে বড় বাসস্ট্যান্ড আর বাজার। সেই বরাবর প্রচুর বাংলো বাড়ি রয়েছে। আধুনিক মানের বিভিন্ন হোটেলও পেয়ে যাবেন। হোটেলে থাকলে আলাদা করে খাবারের ব্যবস্থা করার ঝক্কি নেই। বাংলোতে থাকলে নিজেরা রান্না করতে পারেন কিংবা ঘুরতে গিয়ে হেঁশেলে ঢুকতে না চাইলে এক জন রাঁধুনিও রাখতে পারেন।