মুলখারকা গ্রামের একেবারে উপরে একটি ঝিল রয়েছে। তার জলে কাঞ্চনজঙ্ঘার প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলে ভ্রমণ সার্থক। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় চলেই এল দোল। বসন্তের হাওয়া উপভোগ করার বদলে তপ্ত রোদের চোখরাঙানি। দোলের ছুটিতে শহরের চাঁদিফাটা রোদ এবং দূষণ এড়াতে চাইছেন? দার্জিলিঙে এখন সারা বছরই পর্যটকের ভিড়। তবে এই জনপ্রিয় পাহাড়ি শহরের কাছেই রয়েছে নিরিবিলি একাধিক পাহাড়ি গ্রাম। ঘুরে আসুন ৫টি জায়গা থেকে। খুব বেশি টাকা খরচও হবে না তিন-চার দিনের জন্য।
বুংকুলুং
বালাসুন নদী এবং মুরমা খোলার সঙ্গমস্থলে ছোট্ট গ্রাম বুংকুলুং। মিরিক-কার্শিয়াং যাতায়াতের জন্য যে নতুন রাস্তাটি তৈরি হয়েছে, সেই রাস্তা এই গ্রামের মধ্যে দিয়েই গিয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকটি সুন্দর হোমস্টে এবং হোটেল রয়েছে এই গ্রামে। যাওয়ার আগে বুক করে নিতে পারেন অথবা পৌঁছেও ঘর খুঁজতে পারেন। খুব বেশি পর্যটকের পা পড়েনি বুংকুলুং-এ। তাই নিরিবিলিতে সময় কাটাতে পারেন এই গ্রামে। ঘুরে আসতে পারেন মিরিক লেক থেকেও।
কী ভাবে যাবেন- মিরিক থেকে প্রায় ১৫-২০ কিমি দূরে। কলকাতা থেকে ট্রেনে চেপে নিউ জলপাইগুড়ি নেমে গাড়ি বুক করে নিতে পারেন। যেতে লাগবে দেড় ঘণ্টা মতো।
বুংকুলুং- বালাসুন নদী এবং মুরমা খোলার সঙ্গমস্থলে ছোট্ট গ্রাম বুংকুলুং। ছবি: সংগৃহীত।
চংটং
চা বাগানের মধ্যে পোস্টকার্ডের মতো সুন্দর এই গ্রাম। অনেকে দার্জিলিং থেকেও এক দিনের জন্য এই গ্রামে ঘুরে আসেন। ঘুম থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রামটি। রাস্তায় পড়বে পাহাড়ি ঝর্না, চা বাগান এবং জঙ্গল।
কী ভাবে যাবেন- কলকাতা থেকে ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছে গাড়ি বুক করে নিলে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যাবেন এই গ্রামে।
চংটং- চা বাগানের মধ্যে পোস্টকার্ডের মতো সুন্দর। ছবি: সংগৃহীত।
বার্মিক
পাইন গাছের ঘন বনে ঘেরা উত্তরবঙ্গের গ্রাম। নিরিবিলিতে বসে তিস্তা নদীর গর্জন এবং কাঞ্চনজঙ্ঘার শ্বেতশুভ্র সৌন্দর্য, দুই-ই এখান থেকে উপভোগ করার মতো। বার্মিক থেকেই ঘুরে আসা যায় রামধুরা, ইচ্ছেগাঁওয়ের মতো গ্রাম থেকেও।
কী ভাবে যাবেন- নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ৬১ কিমি দূরে অবস্থিত এই গ্রাম। সেখান থেকে অথবা তিস্তা বাজার থেকে গাড়ি বুক করে নিলে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টায় পৌঁছে যাওয়া বার্মিকে।
বার্মিক- পাইন গাছের ঘন বনে ঘেরা উত্তরবঙ্গের গ্রাম। ছবি: সংগৃহীত।
দাওয়াইপানি
দার্জিলিং থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মেঘে ঢাকা পাহাড়ি গ্রাম। লম্বা লম্বা পাইন গাছ এবং চা বাগান ঘেরা এই গ্রামে সবুজের শান্তি পাবেন পর্যটকেরা। দাওয়াইপানিতে ট্রেকিং, হাইকিং করতে পারেন। আবার পাখি দেখার নেশা থাকলে এটি তার উপযুক্ত জায়গা।
কী ভাবে যাবেন- এই গ্রামের নিকটতম রেল স্টেশন হল নিউ জলপাইগুড়ি। সেখান থেকে গাড়িতে করে ৩ ঘণ্টায় পৌঁছে যাওয়া যায় দাওয়াইপানিতে।
দাওয়াইপানিতে ট্রেকিং, হাইকিং করতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
মুলখারকা
এখনও খুব বেশি জনপ্রিয় হয়নি মুলখারকার নাম। সম্ভবত সেই কারণেই জায়গাটির সৌন্দর্য এখনও অক্ষত। মুলখারকা গ্রামের একেবারে উপরে একটি ঝিল রয়েছে। সেই জলে কাঞ্চনজঙ্ঘার প্রতিচ্ছবি দেখার সৌভাগ্য হলে আপনার ভ্রমণ সার্থক। ঝিলের ধারে রয়েছে শিব মন্দির। সেখানে পুজো হয়, গ্রামীণ মেলাও বসে।
কী ভাবে যাবেন- শিলিগুড়ি থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন এই অফবিট গ্রামে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে গাড়ি বুক করে নিলে সবচেয়ে সুবিধা