কোথাও যাওয়ার আগে কোন কোন দিকে খেয়াল রাখা দরকার? —প্রতীকী ছবি।
বেড়াতে যাওয়া যেমন আনন্দের, তেমনই তা উদ্বেগের হয়ে উঠতে পারে, যদি থাকার ঘর থেকে ঘোরা, কোনওটাই মনের মতো না হয়। আচমকা পরিস্থিতি প্রতিকূল হলে বা শরীর খারাপ হলেও আনন্দ মাটি হয়ে যেতে পারে। বিপদ-আপদ বলেকয়ে আসে না ঠিকই, কিন্তু বেড়ানোর আগে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সমস্যা বাড়তে পারে। কোন ৫ ভুলে বেড়ানো মাটি হতে পারে?
জায়গাটি সম্পর্কে ধারণা
যে জায়গায় বেড়াতে যাবেন, সেই জায়গাটি সম্পর্কে যত বেশি জেনে যাবেন, ততই বেড়ানোর পরিকল্পনা করতে সুবিধা হবে। জায়গাটির ভৌগোলিক অবস্থান, ঋতুভেদে রূপবদল, যে সময় যেতে চাইছেন তখন আবহাওয়া কেমন থাকে, সমস্তটাই জেনে রাখা দরকার। হয়তো কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতেই দার্জিলিং যেতে চান। সেপ্টেম্বর মাস বেছে নিলেন। সে সময় কিন্তু পাহাড়ে বর্ষা। শ্বেতশুভ্র শৃঙ্গের দৃশ্যমান হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। কিন্তু সেই একই ভ্রমণ যদি অক্টোবরের শেষ ভাগে বা নভেম্বরে করেন, কাঞ্চনঙ্ঘা দেখার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।
পরিকল্পনার অভাব
পরিকল্পনার অভাবে যে কোনও ভ্রমণ ভেস্তে যেতে পারে। যে জায়গা বর্ষায় যাওয়ার নয়, বা যাওয়ার কয়েক দিন আগেই হয়তো রাস্তা ভেঙেচুরে গিয়েছে, সেখানে না জেনে পৌঁছে গেলে, সমস্যা ঠেকায় কে! কোন কোন জায়গায় ঘুরতে চাইছেন, কোন জায়গার জন্য কত সময় দেওয়া প্রয়োজন, খরচ, থাকার জায়গা সমস্ত কিছু সম্পর্কে আগাম জানা প্রয়োজন। ভ্রমণস্থল সম্পর্কে যত বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন, ততই সুষ্ঠু পরিকল্পনা করা সম্ভব হবে। ধরুন, পুজোর সময় বেড়াতে যাবেন। ভাবলেন, গিয়ে দেখেশুনে ঘর বুক করবেন। পৌঁছেই বুঝতে পারলেন, বড় ভুল হয়েছে। পর্যটন মরসুমে ঘর আগে থেকেই বুক করা। যে ঘর পেলেন, তার জন্য বাড়তি ভাড়া গুনতে হল। তা-ও মনের মতো হল না বা সুবিধাজনক জায়গায় ঘর পেলেন না। গাড়ি থেকে থাকার জায়গা, কোথায় ঘুরবেন, সমস্তটাই পরিকল্পনা করে না গেলে এমন অনেক ফ্যাসাদে পড়তে হতে পারে।
গোগ্রাসে খাওয়া
বেড়াতে গেলে স্থানীয় খাবার চেখে দেখবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোথা থেকে খাবার কিনছেন, সেখানে পরিচ্ছন্নতা বজায় রয়েছে কি না, দেখে নেওয়া দরকার। না হলে এক বার বেশি খেয়ে বদহজম হলে বা খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়ে গেলে, বেড়ানো তো শেষ, সেখানেই ডাক্তারখানা খুঁজতে যেতে হবে। বেড়াতে গিয়ে শরীর খারাপ হতেই পারে, তাই সঙ্গে জরুরি ওষুধ রাখা দরকার।
টাকাপয়সা
অনেকেই ট্রেন-বাসে খোয়া যাবার ভয়ে সঙ্গে বেশি নগদ রাখেন না। কেউ মনে করেন, সেখানে গিয়ে এটিএম থেকে তুলে নেবেন। কেউ ভাবেন, অনলাইনে টাকা দিয়ে দেবেন। কিন্তু, বেড়াতে গেলে সঙ্গে বেশ কিছুটা নগদ হাতে রাখা দরকার। হতেই পারে যেখানে গেলেন, সেখানে এটিএমে টাকা শেষ কিংবা যন্ত্রটি খারাপ। এমনও হতে পারে যে, আশপাশের তিন-চারটি টাকা তোলার যন্ত্র কাজ করছে না। আবহাওয়া খারাপ হলে কোথাও কেথাও নেটওয়ার্কের অভাবে অনলাইন পেমেন্টে অসুবিধা হতে পারে। এগুলি মাথায় না রাখলে অজানা-অচেনা জায়গায় সমস্যা হতে পারে।
সময়ানুবর্তিতা
বেড়াতে লোকজন যান বিভিন্ন জায়গা ঘোরার জন্য। একটি নির্দিষ্ট সময়ে গাড়ি আসতে বলে, নিজেরাই প্রস্তুত হতে না পারলে দিনটা পণ্ড হতে পারে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কোন কোন জায়গায় যাবেন, স্থির করা থাকলে সময়ে বেরোনো দরকার। না হলে কোনও জায়গা না দেখেই ফিরতে হবে। সময় সম্পর্কে সচেতন না হলে ট্রেন বা উড়ানও ধরতে ব্যর্থ হতে পারেন। বাড়তি টাকা দিয়ে ফেরার বা যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হলে, মনে আর আনন্দ থাকবে না।