সাধারণতন্ত্র দিবসে ঘুরে নেওয়ার তিন ঠিকানা। ছবি: সংগৃহীত।
সাধারণতন্ত্র দিবস মানেই ছুটির আবহ। যদিও এই বছর দিনটি পড়েছে রবিবার। এমনিতেই ছুটি। তবুও এমন দিনে টুক করে কোথাও থেকে ঘুরে আসতে চান অনেকেই। কিন্তু কোথায় যাবেন, সেই ভাবনাই হয়ে ওঠে কঠিন। সাধারণতন্ত্র দিবসে ট্রেন, বাসের ঝামেলা এড়িয়ে বেরিয়ে পড়তে পারেন গাড়ি নিয়ে। রইল কলকাতার আশপাশের কয়েকটি ঠিকানা।
বাঁকিপুট: সাধারণতন্ত্র দিবসে পিকনিকের ভিড়, পর্যটকদের ভিড় থাকবেই। তবে সেই কোলাহল এড়াতে চাইলে বেছে নিতে পারেন বাঁকিপুট। দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুর যতটা জনপ্রিয়, বাঁকিপুটের নাম লোকে জানলেও, সেখানে ভিড় তুলনায় কমই হয়।
বাঁকিপুটের সৈকতে সারাটা দিন কাটিয়ে সূর্যাস্ত দেখে ফিরে আসতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
দিঘার মতোই বাঁকিপুটও সমুদ্রসৈকত। তবে দিঘা, মন্দারমণির মতো ঢেউ নেই। বরং সমুদ্র অনেকটাই শান্ত। এই জায়গা এখনও নামীদামি রিসর্ট, সারবাঁধানো দোকানের ঔজ্জ্বল্যে পুরোপুরি ঝাঁ-চকচকে হয়ে ওঠেনি। বরং এখনও সেখানে খানিক ঝাউয়ের বন রয়ে গিয়েছে। বাঁকিপুটের কাছে রয়েছে দারিয়াপুর। কর্মসূত্রে এক সময়ে এই এলাকাতেই থাকতেন সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বাঁকিপুটে থাকার জন্য হাতেগোনা রিসর্ট রয়েছে সেখানে। কাছেই জুনপুট। সেখানেও ঘুরে আসা যায়। ভোরবেলায় বেরোলে সারা দিন ঘুরে রাতে ফিরতে পারেন।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে দিঘাগামী রাস্তা ধরতে হবে। কোলাঘাট, নন্দকুমার পার করে কাঁথি। সেখান থেকে বাঁকিপুট-জুনপুটের রাস্তা গিয়েছে অন্য দিকে। কাঁথি থেকে মোটমুটি আধ ঘণ্টায় বাঁকিপুটে পৌঁছনো যাবে।
হেনরি আইল্যান্ড: আগে যেতে হলে জোয়ার-ভাটার সময় দেখতে হত। তার পর বার্জ করে গাড়ি নিয়ে যেতে হত অন্য পারে। তবে হাতানিয়া, দোয়ানিয়া নদীর উপর সেতু নির্মাণের পর বকখালি যাওয়া এখন অনেক সহজ। কী ভাবছেন, সাধারণতন্ত্রে দিবসে বকখালি! বড্ড ভিড়। তা হলে বরং তালিকায় রাখুন হেনরি আইল্যান্ড এবং কার্গিল সৈকত। হেনরি দ্বীপেও সমুদ্রসৈকত রয়েছে। বড় ঢেউ না হলেও জায়গাটি সুন্দর। সৈকতে আসার পথে ভেড়ি, গাছগাছালি ভরা রাস্তাটিও সুন্দর। তবে হেনরি যদি না যেতে চান তা হলে যেতে পারেন কার্গিল সমুদ্রসৈকতেও। বকখালি থেকে একটি রাস্তা গিয়েছে ফ্রেজারগঞ্জ। সে দিকে না গিয়ে চলে যাওয়া কার্গিল সৈকতেও। সেখান থেকে ফেরার পথে ঢুঁ মারতে পারেন জোকায় স্বামীনারায়ণ মন্দিরেও।
নির্জনতা, সবুজের সান্নিধ্য পেতে হলে বেছে নিতে পারেন হেনরি আইল্যান্ডও। ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে হেনরি আইল্যান্ডের দূরত্ব কম বেশি ১৩০ কিলোমিটার। কাকদ্বীপ, নামখানা, রাজনগর, ১০ মাইল বাজার পার করে বকখালি রোড ধরে এগোতে হবে। ফ্রেজারগঞ্জ জেটি ঘাট থেকে রাস্তা বেঁকে গিয়েছে হেনরি আইল্যান্ডের দিকে। সেখান থেকে ৭ কিলোমিটার গেলে কার্গিল বিচ।
ওড়গ্রাম: সমুদ্র নয়, অনেকটা খোলা আকাশ, জঙ্গল, পরিত্যক্ত বিমানঘাঁটি দেখতে চান? তা হলে বরং ঘুরে আসতে পারেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতার ব্লকের ওড়গ্রাম থেকে। বেশ কিছু দিন আগে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাওয়া ‘ডাকঘর’ নামে ওয়েব সিরিজ়ের শুটিং হয়েছিল ওড়গ্রামেই। জঙ্গলের মধ্যে পরিত্যক্ত বিমানঘাঁটি। স্থানীয়েরা একে বলেন ‘চাতাল’। দেখার জায়গা বলতে পাবেন ধানজমি, চাষের ক্ষেত আর পরিত্যক্ত ‘চাতাল’। ওড়গ্রামের জঙ্গলে পৌঁছনোর পথের হদিস পেতে কাছাকাছি গিয়ে গ্রামবাসীদের জিজ্ঞাসা করে নিতে পারেন। সামনেই একটি রিসর্ট রয়েছে। সেখানে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও হয়ে যাবে। হাতে সময় থাকলে ঘুরে নেওয়া যায় আউশগ্রামের জলটুঙ্গি।
ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে ওড়গ্রামের দূরত্ব ১৩১ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে ডানকুনি হয়ে ধরতে হবে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে। সিঙ্গুর, ধনেখালি, গুড়াপ, জৌগ্রাম, পালসিট, শক্তিগড় হয়ে বর্ধমান। নবাবহাট মোড় থেকে সিউড়ি রোড দিয়ে সোজা গেলেই পৌঁছনো যাবে ওড়গ্রামে। সেখান থেকে গুসকরা হয়ে আউশগ্রাম।