এক জন সম্ভবত বিশ্বকাপের পরই ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন। অন্য জন কেরিয়ারের মাঝপথে। কিন্তু দু’জনের মধ্যে একটা বড় মিল বিশ্বকাপ শুরুর দু’সপ্তাহ আগে দু’জনেই আগুনে ফর্মে।
কুমার সঙ্গকারা এবং হাসিম আমলা। দুই ব্যাটসম্যানকে ঘিরে এখন থেকেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে তাঁদের দেশ।
বুধবার রাত এবং বৃহস্পতিবার সকাল দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়ন এবং নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে দুই ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে আবার পাওয়া গেল দুরন্ত সেঞ্চুরি। সঙ্গকারার অপরাজিত ১১৩ রানের দৌলতে ৩৪ রানে নিউজিল্যান্ডকে হারাল শ্রীলঙ্কা। আর আমলার ১৩৩ রানের ইনিংসের সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হেরে গেল ১৩১ রানে।
সঙ্গকারা এ দিন শুধু ২১তম সেঞ্চুরি করে টিমকেই জেতাননি, এক দিনের ক্রিকেটে সনৎ জয়সূর্যের শ্রীলঙ্কার হয়ে মোট রানের রেকর্ডও ভাঙলেন। এ ছাড়া উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে অ্যাডাম গিলক্রিস্টের সবার্ধিক শিকারের বিশ্বরেকর্ডও ভেঙে দিলেন তিনি। ওয়ান ডে-তে সঙ্গাকারার শিকার এখন সংখ্যা ৪৭৪। ৩৭৮ ক্যাচ এবং ৯৬টা স্টাম্প।
বিশ্বকাপের আগে এ রকম স্বপ্নের ফর্ম নিশ্চয়ই আপনার টিমকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে? নিউজিল্যান্ডের কাছে সাত ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজ ২-৪ হেরে গেলেও সঙ্গকারা বলছেন, “এ বছরটা আমাদের ভালই যাচ্ছে। টিমটাও খুব খাটছে। পরিশ্রমের ফলটা আমরা মাঠে পাচ্ছি।”
শ্রীলঙ্কা সিরিজ হারলেও অবশ্য আমলার টিমের জয়রথ থামছে না। এবি ডে’ভিলিয়ার্স খেলেননি। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমলার ১৯ নম্বর সেঞ্চুরি দক্ষিণ আফ্রিকার জেতার রাস্তাটা খুবই সহজ করে দেয়। ক্রিকেট বিশ্বে এখন একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, ডে’ভিলিয়ার্স আর আমলা মিলে কি দক্ষিণ আফ্রিকাকে অধরা বিশ্বকাপটা এ বার এনে দিতে পারবেন? ডে’ভিলিয়ার্স যে কতটা বিধ্বংসী হতে পারেন, সেটা ক্রিকেট দুনিয়া জানে। এর সঙ্গে আমলা যে শুধু ধারাবাহিক ভাবে বড় স্কোর করছেন, তা নয়। রানটাও অত্যন্ত দ্রুত তুুলছেন।
টেস্ট ক্রিকেটে যিনি পুরোপুরি কপিবুক স্টাইল, রক্ষণাত্মক ব্যাটসম্যান হিসাবে পরিচিত, সেই আমলার এখনকার ওয়ান ডে গেমপ্ল্যানটা খুব সোজাসাপটা: “আমরা চেষ্টা করেছিলাম প্রতিটা বল বাউন্ডারিতে পাঠাতে। আর সেই স্ট্র্যাটেজিটা খেটে গিয়েছে,” বলছিলেন আমলা।
বিশ্বকাপে প্রতিবার ফেভারিট হিসাবে নামেন আপনারা। কিন্তু শেষ পযর্ন্ত দেখা যায় ফাইনালের আগেই বিদায় নিচ্ছেন? এ বার কতটা আশাবাদী? আমলা বলছেন, “আমাদের প্রত্যেকেই ভাল ফর্মে আছে। আর এ ব্যাপারটাই এ বার আমাদের বাড়তি আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।”
আর মাস দেড়েক পরেই বোঝা যাবে ক্রিকেট দেবতা এঁদের কারও উপর প্রসন্ন হলেন কি না।