রঘু-সুব্রত। আবার তিক্ততা।
ক্রিকেট আই পি এলে-র আবহ ফুটবলে আনতে দেব-সহ টলি তারকাদের মাঠে আনতে চাইছে টালিগঞ্জ অগ্রগামী। শনিবার দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করে রুপোলি পর্দার জনপ্রিয় নায়ক দেব এবং ফুটবল আইকন ভাইচুং ভুটিয়াকে মেন্টর নিযুক্ত করল তারা।
মাঠের বাইরে যে জৌলুসই আনার চেষ্টা করুন টলি কর্তারা, মাঠের ভিতর কিন্তু তীব্র ঝামেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। চলছে তীব্র ডামাডোল। সাংবাদিক সম্মেলনে টালিগঞ্জের প্রেসিডেন্ট রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, স্পনসর শ্রীকান্ত মোহতাকে পাশে বসিয়ে ঘোষণা করেছিলেন, “রঘু নন্দী-ই আমাদের কোচ থাকছেন। ওর সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি করছি আমরা।” আর এর ঘণ্টা খানেকের মধ্যে ঠিক উল্টো কাজ করে বসেন ময়দানের জায়ান্ট কিলার হিসাবে পরিচিত কোচ রঘু। নেমে পড়েনে প্রিমিয়ার ডিভিসনের অন্য ক্লাব এরিয়ানের অনুশীলনে। এবং কোচ হিসাবেই। রাতে রঘু বললেন, “টিডি সুব্রত ভট্টাচার্য যেভাবে শনিবার সকালে অনুশীলনের সময় আমাকে অপমান করেছেন তাতে আমি আর টালিগঞ্জে নেই। ওর সঙ্গে কাজ করতে পারব না।” আর এটা শুনে সুব্রতর হাসতে হাসতে মন্তব্য, “আরে আমি তো ওকে দেখতেই পাইনি। গ্যালারিতে ছিল কী না জানি না। আর আমি গিয়ে ওর সঙ্গে কথা বলব!” কিন্তু বাস্তব ঘটনা হল, সুব্রতকে টিডি হিসাবে নিযুক্ত করলেও আগের মতোই স্বাধীনভাবে তিনি কোচ হিসাবে কাজ করবেন বলে টালি-কর্তারা আশ্বাস দেওয়ার পর শনিবার সকালে মাঠে গিয়েছিলেন রঘু। বসে ছিলেন রিজার্ভ বেঞ্চে অন্য কর্তাদের সঙ্গে। সুব্রত তখন অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন। সহকারী কোচ বিশ্বজিৎ বিশ্বাস মাঠে গিয়ে সুব্রতকে জানান, ‘রঘু দা এসেছে মাঠে ডাকব’। সুব্রত তখন না কি তাঁকে বলেন, “ও জামা-প্যান্ট পরে এসেছে। নামার দরকার নেই।” তা শুনে আরও অপমানিত হন রঘু। বলে দিলেন, “টিমটাকে আমি তুলেছি। একটা আবেগ ছিল। আর যাব না।”
সুভাষ ভৌমিকের মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে টিডি-কোচ নিয়ে এই টালি-নাটক দেখে অনেকটাই আশ্বস্ত বাগানের লোকেরা। সোমবার সুভাষ-সুব্রত দ্বৈরথ নিয়ে ময়দানে যতই হইচই হোক, নতুন টিম নিয়ে সুব্রত কতটা লড়াই দিতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ টালিগঞ্জের পুরো টিমটাই কিন্তু রঘুর হাতে তৈরি।
দু’বারের আই লিগ জয়ী কোচ সুব্রত অবশ্য এটা নিয়ে ভাবছেনই না। বলে দিলেন, “আমি-ই টালিগঞ্জকে শেষ ট্রফি দিয়েছি। মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলকে আগেও হারিয়েছি। আবার না হারানোর কোনও কারণ নই। আমি কখনও নিজেকে আন্ডারডগ মনে করি না। আমি-ই এশিয়ার সেরা কোচ। আমি দেশের সব ট্রফি জিতেছি।” দলে দুই বিদেশি থাকলেও কয়েকদিনের মধ্যেই যোগ দেবেন প্রাক্তন ইউনাইটেড ডিফেন্ডার বেলো রাজাক। সুব্রত বলেন, “সব সময় বড় দলের বিরুদ্ধে খেলতে গেলে একটা মানসিক চাপ তৈরি হয় যারা বেশি দৌড়তে পারবে তারাই জিতবে ম্যাচ।” সুভাষের জন্য যেমন মোহনবাগান চেষ্টা করছে, তেমনই আবার সুব্রত-কে ‘এ’ লাইসেন্স দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠাতে চলেছে টালিগঞ্জ।