গত তিন বছর চেষ্টা করেও লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত লাল-হলুদ কর্তাদের চেষ্টা সফল। সামনের মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের জার্সি পরেই মাঠে নামতে চলেছেন র্যান্টি মার্টিন্স। শুক্রবার নতুন ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি হয়ে গেল নাইজিরিয়ান গোলমেশিনের। আর একই দিনে অধিনায়ক ওডাফাকে ছেড়ে দিল মোহনবাগান।
ইউনাইটেড ছেড়ে মাঝমরসুমে রাংদাজিদে চলে যাওয়া আই লিগের তিন বারের সর্বোচ্চ গোলদাতার সঙ্গে কথাবার্তা চলছিল অনেক দিন ধরেই। লড়াইতে ছিল মোহনবাগানও। তারাও চেষ্টা চালিয়েছিল র্যান্টিকে পাওয়ার। কিন্তু র্যান্টির আর্থিক দাবি বাগান পিছিয়ে যায়। শুক্রবারই শিলং থেকে কলকাতায় আসেন র্যান্টি। এর পর ইনোভা গাড়িতে চাপিয়ে তাঁকে ইস্টবেঙ্গল ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্যের বাড়িতে নিয়ে আসেন এক ক্লাব কর্মী। সন্তোষবাবু অবশ্য চুক্তির কথা স্বীকার করেননি। তবে বলেন, “র্যান্টিকে আমরা তিন বছর ধরে দলে নেওয়ার চেষ্টা করছি। আজ ওর সঙ্গে চুক্তি পাকা করেছি। কিন্তু সই হয়নি। আই লিগ শেষ হওয়ার পর সব চূড়ান্ত হবে। তবে আশা করছি ও এ বার আমাদের দলেই খেলবে।” আই লিগের নিয়মানুযায়ী টুর্নামেন্ট শেষ না হলে কোনও ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি করা যায় না। তাতে ফেডারেশন সংশ্লিষ্ট ক্লাবকে শাস্তি দিতে পারে। ফুটবলারটিকেও। সে জন্য চুক্তি করলেও সরকারি ভাবে তা বলা সম্ভব নয় কারও পক্ষেই। ফুটবল সচিবের মতো র্যান্টিও চুক্তি সইয়ের কথা স্বীকার করেননি। বলে দিলেন, “কলকাতায় খেলব। তবে কোন দলে তা বলব মরসুম শেষ হওয়ার পর।”
জেমস মোগার জায়গায় র্যান্টি মার্টিন্সকে নিল ইস্টবেঙ্গল। মোগা বাতিলের খাতায় চলে গেলেও এডে চিডিকে রাখা হবে কি না তা নিয়ে এখনও লাল-হলুদে ধোঁয়াশা। এটা কোচের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন কর্তারা। ইস্টবেঙ্গলের এক সূত্র জানাচ্ছেন, কোচ আর্মান্দো কোলাসো না কি একটি তালিকা জমা দিয়েছেন ক্লাবকে। তাতে নওবা সিংহ এবং ভাসুমের নাম নেই। সুয়োকা এবং উগা ওপারাকে চাইছেন না। লাল-হলুদ ফুটবল সচিব অবশ্য বললেন, “আর্মান্দো কোনও তালিকা জমা দেননি। উনি আগে পরের বার কোচিং করাবেন কি না তা ঠিক হোক। এখনও তো ম্যাচ বাকি। অনেক সময় আছে।” ইস্টবেঙ্গল অবশ্য এ দিন সই করাল ইউনাইটেডের মহম্মদ রফিককে।
ইস্টবেঙ্গল যখন র্যান্টিকে তুলে নিয়ে চমক দিচ্ছে, বাগানে তখন অশান্তি অব্যাহত। বুধবারের মতো এ দিনও অনুশীলনে আসেননি ওডাফা। অন্য ফুটবলারদের সঙ্গে কর্তারা আগামী মরসুমের চুক্তির জন্য কথা বললেও তাঁর সঙ্গে কথা বলেননি। ওডাফা কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ক্ষুব্ধ ওডাফা শেষমেশ রিলিজ চাইলে তাঁকে মোহনবাগান কর্তারা ছেড়ে দিয়েছেন বলে খবর। যদিও কর্তারা এ ব্যাপারে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। আপাতত করিম-ওডাফাকে বিদায় করে ভাল টিম গড়তে ঝাঁপিয়েছে বাগান। সেখানে না কি বড় চমক থাকবে। বিশ্বকাপার কর্নেল গ্লেন, সনি নর্ডি, শাবানাদের দিকে নজর আছে।
অন্য দিকে, কাতসুমি, শিল্টন পালের পর ইচের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ালেন কোচ করিম বেঞ্চারিফা। এ দিন ঝামেলার সূত্রপাত যুবভারতীতে অনুশীলন শুরুর সময়। কাতসুমি, শিল্টনদের সঙ্গে বাগান স্টপারও দৌড়োচ্ছিলেন। করিম হঠাৎ-ই ইচেকে ডেকে ‘সিরিয়াস’ হতে বলেন। মন দিয়ে অনুশীলন করতে বলেন। এর পরই ইচের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায় করিমের। দু’জনের কেউ মাঠ থেকে বেরিয়ে না গেলেও পুরো অনুশীলনে তাঁদের মধ্যে আর কথাবার্তা বলতে দেখা যায়নি। বাগান কর্তারা অবশ্য এ সব নিয়ে এখন জলঘোলা করতে চাইছেন না। শিলং লাজংয়ের সঙ্গে রবিবারের ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করছেন তারা।