প্রথম ম্যাচ হেরে মাঠ ছাড়ছেন ম্যান ইউ কোচ। ছবি: রয়টার্স
নতুন কোচ। কিন্তু সেই পুরনো গল্প। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের দুঃস্বপ্ন কিছুতেই কাটছে না।
ডেভিড মোয়েসের শেষের মতোই শুরুটা হল লুই ফান গলের। সমর্থকদের স্বপ্ন দেখাতে দেখাতে আছড়ে ফেললেন বাস্তবের জমিতে। ইপিএলের প্রথম ম্যাচেই হেরে গেল ম্যান ইউ। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ফান গলের দলকে ২-১ হারিয়ে দিয়ে গেল সোয়ানসি সিটি। প্রথমার্ধেই কি সিং ইয়ংয়ের গোলে ১-০ এগোয় সোয়ানসি। দ্বিতীয়ার্ধে সমতা ফেরান ওয়েন রুনি। কিন্তু গিল্ফি সিগার্ডসনের গোলে শেষ হাসি হাসে দুর্বল সোয়ানসি।
প্রিমিয়ার লিগের অভিষেক ম্যাচ হেরেই আবার কটাক্ষের মুখে পড়তে হল ম্যান ইউর নতুন ডাচ কোচকে। প্রশ্ন উঠে গেল ফান গলের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে। আদৌ কোচের আনা নতুন ৩-৫-২ ফর্মেশন কার্যকর হচ্ছে কিনা তা নিয়ে শুরু হয়ে গেল বিতর্ক। ম্যান ইউর কোচ হওয়ার পরে দলের পুরনো ছক বদলে তাঁর নেদারল্যান্ডসের মতোই ৩-৫-২-তে দল সাজানোর সিদ্ধান্ত নেন ফান গল। নেদারল্যান্ডসের ব্লু-প্রিন্ট তুলেই ম্যান ইউ দল গড়েন তিনি। কিন্তু ম্যাচে সেই ছক সফল হল না। তিন ডিফেন্ডারে দল সাজানোয় এমনিতেই রক্ষণে সাপোর্ট কম ছিল। তার উপরে আবার ‘বিল্ড-আপ-প্লে’ খুব স্লো হচ্ছিল রুনি-মাতাদের। প্রাক্তন ম্যান ইউ তারকা পল স্কোলস যেমন বলেই দিলেন, “যদি এই ফর্মেশনেই খেলতে চেয়েছিলেন ফান গল তবে ক্রুজ বা ফাব্রেগাসের মতো ফুটবলার সই করাননি কেন কোচ? ওরা বল আরও তাড়াতাড়ি পাস করতে পারে।”
হারের দ্বিতীয় কারণ হিসাবে উঠে আসল দলের অনভিজ্ঞতা। ভিদিচ-ফার্দিনান্দের মতো ডিফেন্ডাররা ওল্ড ট্র্যাফোর্ড ছাড়ায় রক্ষণে ভাল ফুটবলারের অভাব ছিল।
হারের পরে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট জুড়ে ঠাট্টার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ালেন ফান গল। কেউ কেউ মোয়েসের মুখোশ পরা ফান গলের ছবি পোস্ট করেন। আবার কেউ কেউ মনে করিয়ে দেন, ফান গলের পূর্বসুরি ডেভিড মোয়েস পুরো এক বছর টিকতে না পারলেও অন্তত প্রথম ম্যাচে এই সোয়ানসিকে হারিয়েছিলেন।
১৯৭২-এর পরে ঘরোয়া লিগে প্রথম ম্যাচ হেরে নিজের কাঁধেই দায়িত্ব নিচ্ছেন ফান গল। বলেন, “আমরা ভাল খেলতে পারলাম না। প্রাক্ মরসুমে যেমন খেলেছি তেমন খেলতে পারেনি দল। খুবই খারাপ হল। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিল এটা। সমর্থকদের আমরা হতাশ করেছি।” তবে নতুন ডিফেন্ডার সই করার প্রসঙ্গ এক প্রকার ভাসিয়ে রেখেই ফান গল বলেন, “অবশ্যই আমাদের দলে ডিফেন্ডার লাগবে। কিন্তু একটা ম্যাচ হেরেছি বলেই ডিফেন্ডারদের দোষ দেব, সেটা ঠিক নয়। দল ঠিক করেই খেলতে পারেনি। এই কারণেই হারলাম আমরা।” ৩-৫-২-এ শুরু করলেও ম্যাচ চলাকালীন ম্যান ইউর পছন্দের ৪-৩-৩ ফর্মেশনে পাল্টান দলের ছক। তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। “হাই-প্রেস করতে চেয়েছিলাম বিপক্ষকে। ৪-৩-৩ সেই ক্ষেত্রে উপযুক্ত ফর্মেশন। তাতেও কিছু হল না,” বলছেন নতুন কোচ। প্রথম ম্যাচে হারের পরে কত জন ফুটবলারকে ছাঁটতে চলেছেন ম্যান ইউ কোচ? ফান গল বলেন, “আমি কোনও ফুটবলারকে বলব না তুমি চলে যাও দল ছেড়ে। যদিও আমি সিদ্ধান্ত নেব কাকে রাখব আর কাকে নয়।”
এ দিন আবার প্রিমিয়ার লিগের অন্য ম্যাচে লাল কার্ড দেখলেও, দশ জন ফুটবলার নিয়েই ওয়েস্ট হ্যামের বিরুদ্ধে জিতল টটেনহ্যাম। এরিক ডায়ারের গোলের সৌজন্যে। অন্য ম্যাচে প্রথমে পিছিয়ে পড়েও ২-১ জিতল আর্সেনাল। ক্রিস্টাল প্যালেসের বিরুদ্ধে। গোল করলেন কশিয়েলনি এবং র্যামসি।