ইডেনে হাফ সেঞ্চুরির পথে মনোজ তিওয়ারি। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
রান আউট হয়ে যখন ফিরে যাচ্ছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা, তখন ক্রিজে দঁড়িয়েই হাত নেড়ে তাঁকে ‘সরি ভাই’ বললেন মনোজ তিওয়ারি। রান নেওয়ার জন্য তাঁকে ডেকেও ফিরিয়ে দেওয়ায় যে বিপত্তি বাধালেন মনোজই। তিন রানের জন্য সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ না হওয়ার দুঃখ নিয়ে যখন প্যাভিলিয়নে ফিরছেন ঋদ্ধি, তখন বাংলা ১৩০-২, ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে আট উইকেটে জয় থেকে মাত্র ২৩ রান দূরে। দলকে কার্যত মুস্তাক আলি ট্রফির মূলপর্বের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিলেন বটে বাংলার দুই তারকা, কিন্তু তাতেও অন্ধকার একেবারে কাটছে না।
দলকে জাতীয় টি টোয়েন্টির মূলপর্বে তুলে লক্ষ্মী, মনোজ, ঋদ্ধি, দিন্দারা আগামী সোমবার যখন রওনা হবেন আইপিএল অভিযানে, সঙ্গে থাকবে বাংলার আরও পাঁচ। ফলে মূলপর্বের জন্য মোটামুটি ‘বি’ টিম হাতে পাবেন হবু ক্যাপ্টেন সৌরাশিস লাহিড়ী। অন্য দলগুলিরও অবশ্য একই হাল। তারাও আইপিএল ক্রিকেটারদের পাবে না। বাংলা শিবিরে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস এই একটি কারণেই। বাকিটুকু নিয়ে শুধুই দুশ্চিন্তা। লক্ষ্মী অবশ্য বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝাড়খণ্ডকে হারিয়ে ইডেন থেকে বেরোতে বেরোতে বললেন, “জুনিয়ররা নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পাচ্ছে। ব্যাপারটাকে এ ভাবে ভাবাই ভাল।”
কোচ মলহোত্র বরাবরের মতোই বাস্তববাদী। বললেন, “যা জিনিস আছে, সেই দিয়েই তো দোকান চালাতে হবে। সে জন্য জিনিসগুলো ঝাড়পোঁছ করে তৈরি করে নিতে হবে।” বিনয়ী মনোজ, ঋদ্ধিদের অবশ্য ধারণা, “আমাদের অভাব পূরণ করার মতো প্রতিভা বাংলায় আছে বলেই মনে হয়। আশা করি ওরা হতাশ করবে না।” তবে মলহোত্র বললেন, “মনোজদের বিকল্প কোথায় পাব? ওদের কাছাকাছি কেউ পৌঁছতে পারলে, সেটাই বড় ব্যাপার।” মূলপর্বে বাংলার হবু নেতা সৌরাশিস অবশ্য বললেন, “জুনিয়রদের নিয়েই লড়ে যাব। ওদের ভাল খেলার তাগিদটা বেশি।”
এ দিন আগুনঝরা ইডেনে টস জিতে আগে ব্যাট করে ঝাড়খণ্ড ২০ ওভারে ১৫২-র বেশি তুলতে পারেনি। দিন্দা, সৌরাশিস, গনিদের দাপটে ন’উইকেট হারান সৌরভ তিওয়ারিরা। বীরপ্রতাপ ও দিন্দা দু’টো ক্যাচ না ফেললে আরও কম রান হত হয়তো। জবাবে মনোজ-ঋদ্ধিরাই বেশির ভাগ রান তুলে দেন। মনোজ ছ’টি চার ও একটি ছয় মেরে ৫২ বলে অপরাজিত ৬৭ করে উঠে বলেন, “আইপিএলের আগে এই ইনিংস আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিল।” মনোজের চেয়ে একটা বেশি চার ও একটা ছয় মেরে ৩৭ বলে ৫৪ করলেন ঋদ্ধি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঝাড়খণ্ড ১৫২-৯ (জাগ্গি ৩৩, গনি ২-১৫, দিন্দা ২-৩১, সৌরাশিস ২-৪০)
বাংলা ১৫৩-২ (মনোজ ৬৭, ঋদ্ধিমান ৫৪)।