যেন একাকী। আর্জেন্তিনা প্র্যাকটিসে মেসি।
সাদা জার্সি পরা চেহারাটা ধীরে ধীরে মাঠে ঢুকতেই যেন পরিবেশটা বদলে গেল। সতীর্থরা এক ঝলক চোখ বুলিয়ে নিলেন তাঁর দিকে। কোচও। কিন্তু তাঁর শরীরী ভাষা ভাবলেশহীন। কে বলবে বিশ্বকাপে তাঁর দিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব। তিনি লিওনেল মেসি। যাঁকে ঘিরে বিশ্বকাপে অনন্ত প্রত্যাশা সমর্থকদের। সেই চাপেই কি কোনও সমস্যায় ভুগছেন আর্জেন্তিনার মহাতারকা?
২৪ ঘণ্টা আগেই তাঁর বার্সেলোনার সতীর্থ নেইমারদের প্র্যাকটিসে বিক্ষোভকারীদের হামলা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। বুয়েনস আইরেসে আর্জেন্তিনার বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে সে রকম কোনও সমস্যা না হলেও স্প্যানিশ মিডিয়ায় এক চিকিত্সক আর্জেন্তিনার ক্যাপ্টেনকে নিয়ে যা বলছেন তাতে মেসির সমর্থকদের কপালে ভাঁজ পড়তে পারে। সেই বিশেষজ্ঞের মতে চলতি মরসুমে মাঝেই যে ভাবে মেসিকে মাঠে বমি করতে দেখা গিয়েছে তাতে স্পষ্ট মানসিক চাপ জনিত সমস্যায় ভুগছেন তিনি।
পেশায় স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট থেরাপিস্ট আনা লোম্বার্ড আরও জানিয়েছেন, “এটা মানসিক সমস্যা। যার প্রভাব শরীরে পড়ে। বিশেষ করে হতাশায় ভুগলে। নিজের ক্ষমতার উপর বিশ্বাস হারানো শুরু হয়।” চলতি মরসুমে বার্সেলোনাকে কোনও ট্রফি দিতে পারেননি মেসি। এই ব্যর্থতার সঙ্গে চোট-আঘাতের সমস্যা তো ছিলই। মাঠেও বেশ কয়েকবার ‘বার্সেলোনার বোমার’ শরীরী ভাষায় চিন্তার ছাপ ধরা পড়েছে। লোম্বার্ডের মতে অতিরিক্ত চাপ থেকে তৈরি হওয়া মানসিক সমস্যার প্রভাবে শারীরিক সমস্যা স্বাভাবিক। বিশেষ করে হজমের সমস্যা। তাই হয়তো মাঠে নামার পর মেসিকে বেশ কয়েক বার বমি করতে দেখা গিয়েছে।
সতীথর্রাও কি ব্যাপারটা আঁচ করতে পেরেছেন? তাই প্র্যাকটিসের মধ্যেই বনেগা, লাভেজ্জিরা ইয়ার্কি-ঠাট্টার চেষ্টা? টিমের এক নম্বর তারকাকে চাঙ্গা করতেই হয়তো সের্জিও আগেরো তো এ দিনই আবার মজা করে বলে দেন, “বিশ্বের সেরা প্লেয়ার হতে চাই। তবে ভাববেন না মেসির মতো হতে চাই। বরং ও-ই আমার মতো হতে চায়।” সঙ্গে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির স্ট্রাইকার সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘বিশ্বকাপের মতো মঞ্চ সব সময়ই কঠিন। তবে আমাদের জিততেই হবে। বিশ্বকাপ জেতার ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী।”
সতীর্থের ‘ভোকাল টনিকে’ মেসি কতটা চাঙ্গা হয়ে উঠবেন বলা না গেলেও লোম্বার্ড কিন্তু বলছেন মাঠে নেমে পারফর্ম করতে পারলেই ফের স্বাভাবিক মেসিকে দেখবে বিশ্ব। ধীরে ধাীরে মানসিক চাপ কাটিয়ে ফের ছন্দে ফিরতে দেখা যাবে তখন আর্জেন্তিনার মহাতারকাকে। যে লিওকে দেখতে অভ্যস্ত ফুটবল বিশ্ব!