হাসতে হাসতে প্রায় গড়িয়ে পড়ছেন ফ্রেড আর লুই গুস্তাভো। দুই সতীর্থের ব্রাজিল বনাম ব্রাজিল ভিডিও গেম খেলার সাক্ষী নেইমার। মিটিমিটি হাসি বার্সেলোনার মহাতারকার মুখে। কিছুক্ষণ পর নিজেও সতীর্থের সঙ্গে বসে পড়েন ‘নকল’ ফুটবল যুদ্ধে।
ডাক্তারি পরীক্ষা চলছে দাভিদ লুইজের। দাঁত, কানেও ছাড় নেই। তার মধ্যেই নানা মজার মুখভঙ্গি তারকা মিডফিল্ডারের।
অদ্ভুত মুখোশ পড়ে ট্রেডমিলে দাঁড়িয়ে দাঁতে। সামনে প্রায় তিন-চার জন চিকিত্সক। শরীরে সাঁটা নানা যন্ত্র। সামনে একাধিক মনিটর। তাতে বায়ার্ন মিউনিখের সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের ফিটনেস পরীক্ষার যাবতীয় হাল-হকিকত উঠে আসছে। কিছুটা কৌতূহলী দৃষ্টিতেই সে দিকে তাকিয়ে দাঁতে।
টুকরো টুকরো কোলাজ জুড়লে ভেসে উঠবে এক সুখী পরিবারের ছবি। লুই ফিলিপ স্কোলারির টিমের ছবি। আড়াই সপ্তাহ পরেই যাদের বিশ্বযুদ্ধের শুরু। তার প্রস্তুতিতে রাজধানী রিও থেকে ৯০ কিমি দূরে পর্বতঘেরা শহর তেরেসোপোলিসে নেইমারদের প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। বাইরে বিক্ষোভ, অশান্তির আগুন থাকলেও তার আঁচ নেইমারদের প্রস্তুতিতে যাতে না পড়ে, তত্পরতা তুঙ্গে। ফুটবলারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ভিডিও গেমস। চাপ কাটানোর দাওয়াই।
তবে স্কোলারিদের মাথায় শুধু টিমের প্রস্তুতিই নয়, ঘুরছে ব্রাজিলের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী টিম সম্পর্কে খুটিনাটি তথ্য সংগ্রহের ব্যাপারটাও। বিপক্ষ শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে গুপ্তচর। সংগ্রহ করা হচ্ছে যাবতীয় তথ্য। গ্রুপ পর্যায় তো বটেই, দ্বিতীয় রাউন্ড, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনালের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের উপরও নজর রাখা হয়েছে। নেইমারদের টিডি কার্লোস আলবার্তো পাহিরা সোমবারই প্র্যাকটিসের পর ফাঁস করে দিয়েছেন গুপ্তচরগিরির খবর। বলছেন, “ষোলোটা টিমের উপর নজরদারি চলছে।”
পাশাপাশি নিজেদের ক্ষমতার উপর তাঁদের যে সর্ম্পূণ আস্থা আছে, সেটাও বুঝিয়ে দিচ্ছেন পাহিরা। বলছেন, “চ্যাম্পিয়নরা প্রস্তুতি শিবিরে পৌঁছে গিয়েছে। টিম যে রকম দুরন্ত তেমনই বিশ্বের সবচেয়ে দামি সেন্টার ব্যাকও আমাদেরই।” পরক্ষণেই ব্রাজিলকে ১৯৯৪ বিশ্বকাপ এনে দেওয়া কোচ বলে দেন, “আমরা বিশ্বকাপে ফেভারিট তো বটেই তবে সেটাই সব নয়। আমাদের সেটা মাঠে করে দেখাতে হবে।”
পাহিরা যখন টিমের গুণগানে ব্যস্ত, টিমের এক নম্বর তারকা তখন ভিডিও গেমে মজে। কে বলবে সেলেকাও শিবিরের তারকাকে নিয়ে বাইরে ফিসফাস কম হচ্ছে না। কাটাছেঁড়া চলছে বার্সেলোনায় চলতি মরসুমে তাঁর ফর্ম নিয়ে। সাও পাওলোর ‘ওয়ান্ডার কিড’কে নিয়ে অবশ্য অনেকের যতই আশঙ্কা থাক, নেইমারের উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে স্কোলারির। তিনি বলছেন, “নেইমার আমাদের সেরা প্লেয়ার। ব্রাজিলের জার্সিতে মাঠে নামলেই ও পুরো অন্য ফুটবলার হয়ে ওঠে।”
আর নেইমার? তিনি কী বলছেন?
পুরো শিবিরের মেজাজের মতোই ব্রাজিলের মহাতারকার গলাতেও আত্মবিশ্বাসের দাপট স্পষ্ট। শুধু বার্সেলোনার বিশ্বখ্যাত সতীর্থের প্রসঙ্গ উঠলেই মজা করে বলে দিচ্ছেন, “বিশ্বকাপের জন্য মেসিকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। ব্যতিক্রম শুধু ফাইনালে ব্রাজিল আর আর্জেন্তিনা মুখোমুখি হলে (হাসি)।”