আসন্ন বিশ্বকাপের প্রভাব মিষ্টির দোকানে। দক্ষিণ কলকাতায় রাজীব বসুর তোলা ছবি।
ব্রাজিল মানেই তো চেতনায় শিহরন!
ব্রাজিল মানে পেলে।
ব্রাজিল মানে সাম্বা।
ব্রাজিল মানে দুর্ধর্ষ সব সি-বিচ আর বিকিনিখ্যাত সুন্দরীর ঢল।
ব্রাজিল মানেই ওং শান্তি... ওং ভোগ... ওং এনজয়।
কে জানত ব্রাজিল মানে যে সত্যি সত্যি মন্দার বোস বর্ণিত ব্রাজিলের বিচ্ছু!
নেইমারের দেশে বিশ্বকাপ কভারেজে যাচ্ছেন এমন সব সাংবাদিককে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে রয়টার্স গ্লোবাল সংস্থার প্রধান একটি ই-মেল পাঠিয়েছেন। এটা ৩১ মার্চ পাঠানো হলে না হয় অন্য রকম ভাবা যেত। এখন ও সবের কোনও অ্যালাওয়েন্স নেই। মাইক কলেট নামক ফুটবল দুনিয়ায় অত্যন্ত প্রভাবশালী পদাধিকারী মেল-এ যা লিখেছেন, মোটামুটি তারই প্রতিবিম্ব বিলেতের ইংরেজি কাগজগুলোর বিশ্বকাপ পর্যটকদের জন্য দেওয়া টিপসে।
১) প্রকাশ্য দিবালোকে ছিনতাই হয়ে যেতে পারে আপনার ওয়ালেট, ফোন অথবা ল্যাপটপ। খুব সাবধানে থাকুন।
২) আপনার সর্বস্ব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে দেখলে টুঁ শব্দটি করবেন না। কোনও রকম বাধা দেবেন না। ওরা যা চাইছে, কথা না বলে ওদের হাতে তুলে দিন।
৩) বেশি দামি জামাকাপড় পরে ওদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন না। রাস্তায় ফোনে কথা বলতে বলতে হাঁটবেন না।
৪) রাস্তায় হেডফোনে গান শুনতে শুনতে হাঁটবেন না। ব্রাজিলের রাস্তা আর যাই হোক রিল্যাক্স করার জায়গা নয়।
৫) এটিএম মেশিন থেকে টাকা তোলার সময় খুব সতর্ক থাকবেন। ব্রাজিলে ডেবিট কার্ড জালিয়াতি ঘরে ঘরে। বিদেশিরা এয়ারপোর্ট এটিএমে টাকা তোলার সময় জানতেও পারবেন না, কার্ডটা যে তাঁদের অজান্তে কপি হচ্ছে।
৬) পাসপোর্ট নিয়ে রাস্তায় বেরোবেন না। একমাত্র প্রেস পাস সংগ্রহ করার দিন পাসপোর্ট আনবেন। তার পর ওটা যেন ব্যাঙ্কের লকারে থাকে।
৭) ক্রেডিট কার্ড সঙ্গে নিয়ে না ঘোরাই ভাল। ঠিক যত টাকা দরকার সেটা সঙ্গে রাখুন। সবচেয়ে ভাল হয় দু’টো ওয়ালেট ব্যবহার করতে পারলে। দু’টোতে টাকা যেন অল্প অল্প করে ভাগ করা থাকে।
৮) রাত্তিরে পারতপক্ষে একা বের হবেন না। বার-এ গেলেও বেশি মদ খাওয়ার দরকার নেই। কারণ, আপনাকে যে সব সময় সাবধান থাকতে হবে।
৯) প্রধান সড়ক ধরে চলুন। ব্রাজিল এমন অদ্ভুত দেশ, যেখানে আকাশচুম্বী ঐশ্বর্য আর অতলস্পর্শী দারিদ্র পাশাপাশি হাঁটে। একটা দারুণ অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পাশে লুকিয়ে থাকতে পারে সবচেয়ে সাংঘাতিক বস্তি। একটা ভুল মোড় ঘুরলেই কিন্তু সমস্যা।
১০) ট্যাক্সি যদি নিতেই হয় নিজের হোটেল বা ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে নিন। এয়ারপোর্টেও তাই।
১১) মেট্রো বা বাসে পকেটমারদের থেকে সাবধান।
১২) হোটেলে ঘরে নক হলেও উল্টো দিকে কে আছে ভাল করে না জেনে দরজা খুলবেন না।
১৩) কোনও বিচ বা পার্কে সন্ধের পর হাঁটাহাঁটি না করাই ভাল।
১৪) ট্যাক্সির পিছনে বসে ল্যাপটপ, আই ফোন বা আই প্যাডে কাজ করবেন না। মোটরবাইকে করে ছিনতাইবাজরা ঘোরে আর ট্রাফিক জ্যামের অপেক্ষায় থাকে।
১৫) প্রেসবক্সে নিজের জিনিসের উপর সব সময় নজর রাখবেন। লাতিন আমেরিকায় স্টেডিয়ামের সংরক্ষিত এলাকা থেকে চুরি খুব চালু। প্রেস রিপোর্টার হিসেবে কোনও দুষ্কৃতকারী ঢুকেছে কি না কী করে বুঝবেন। তাই সাবধানের মার নেই।
১৬) ব্রাজিলে রিওর মতো শহরে সন্ধে নামে খুব তাড়াতাড়ি। ছ’টা বাজতে না বাজতেই। অন্ধকারে সতর্ক থাকুন।
এর পর অসাধারণ এই দেশে উপভোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে... কিন্তু এই ষোলো দফা পড়ার পর উপভোগ?
স্বাগত সাও পাওলো.. স্বাগত বিশ্বকাপ। অস্বাগত ব্রাজিলের সব বিচ্ছুর দল।
দুগ্গা দুগ্গা!