এখনও স্টেডিয়াম উদ্বোধন চলছে। রবিবার আলোকজ্জ্বল বেইরা-রিও স্টেডিয়াম। ছবি: এএফপি।
অপেক্ষা আর দশ সপ্তাহ। যার পরেই ব্রাজিল পরিণত হতে চলেছে ফুটবল-যুদ্ধক্ষেত্রে। যেখানে বত্রিশটা দেশ লড়বে নিজেদের নামের পাশে ‘বিশ্বচ্যাম্পিয়ন’ তকমাটা জুড়তে।
কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, ততই বিতর্কের রেশ ছড়িয়ে পড়ছে ব্রাজিল বিশ্বকাপ ঘিরে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সংগঠক দেশ হিসেবে কতটা তৈরি ব্রাজিল? যার উত্তরে চমকপ্রদ ভাবে ফিফা সাধারণ সচিব জেরোম ভালকের মন্তব্য, “সত্যি কথা বলতে আমরা এখনও তৈরি নই।”
বিশ্বকাপের পথে ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় কাঁটা হতে চলেছে স্টেডিয়াম সমস্যা। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ হতে চলেছে সাও পাওলোর ‘এরিনা করিন্থিয়ান্সে’। যেখানে গত নভেম্বরে ক্রেন ভেঙে পড়ে। যার পর থেকেই বহু বার নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকছে। মাঝে মাঝে আবার শুরু হচ্ছে। মার্চ-এপ্রিলের মধ্যেই স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন রীতিমতো প্রশ্নচিহ্ন উঠে গিয়েছে যে আদৌ মে মাসের মধ্যেও স্টেডিয়াম তৈরি হবে কি না। শোনা যাচ্ছে, স্টেডিয়ামের সব সিট ঠিকঠাক, মাঠও তৈরি। কিন্তু ভাঙা ছাদটা নিয়েই এখনও সংশয়। যার নির্মাণের কাজ চলছে এখনও। তার উপরে আবার গত সপ্তাহে এক মাঠকর্মীর মৃত্যুতে আবার বন্ধ হয়ে যায় কাজ।
পাশাপাশি আবার নতুন সমস্যা ডেকে এনে পোর্তো আলেগ্রের মেয়র ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনকে জানিয়ে দিলেন, ম্যাচ আয়োজনের জন্য আরও টাকা দিতে হবে তাঁদের। যাতে সাংবাদিক আর সমর্থকদের সুবিধার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। রবিবারেই উদ্বোধন করা হয় শহরের বেইরা-রিও স্টেডিয়ামের। যেখানে হতে চলেছে বিশ্বকাপের পাঁচটা ম্যাচ।
বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য দরকার ছিল আটটা স্টেডিয়াম। কিন্তু গোটা দেশে বিশ্বকাপের উন্মাদনা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বারোটা স্টেডিয়াম তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয় ব্রাজিল। যে সিদ্ধান্তে প্রচুর পরিমাণে টাকা নষ্ট হওয়ায় এমনিতেই চিন্তায় ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন। শুধুমাত্র স্টেডিয়াম সমস্যা নয়। পথের আর এক কাঁটা বিশ্বকাপের জন্য নতুন রাস্তা তৈরি করা। ইতিমধ্যেই সমর্থকদের সুবিধার জন্য বেলো হোরাইজন্তেতে যে রাস্তা তৈরি করবে বলে ঠিক করা হয়েছিল, তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাকি ‘র্যাপিড ট্রান্সিট প্রোজেক্ট’গুলো জুন মাসের আগে শেষ করা সম্ভব হবে না।
তৃতীয়ত আবার এখনও দাঙ্গা চলছে ব্রাজিলের বহু শহরে। কয়েক মাস আগেই রিওতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় সমর্থকরা। ব্রাজিল প্রচারমাধ্যমের মতে, এত টাকা খরচ করে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত করার জন্য ব্রাজিলে অনেকেই ক্ষুব্ধ।
কিন্তু এত বাধা বিপত্তির মধ্যেও গ্রুপ পর্যায়ের অনেক ম্যাচের টিকিট বিক্রি হতে শুরু হয়েছে। প্রায় প্রতিটা ম্যাচই ‘হাউসফুল’ হতে চলেছে।