চোট পেলেন রুনি। - এএফপি
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড-০ : ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-০
মেসি-রোনাল্ডো, এল ক্লাসিকো, ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা— বিশ্ব ফুটবলে এ রকম কিছু লড়াই আছে যেগুলোকে আমি বলি মহাজাগতিক ইভেন্ট। সেই তালিকায় আরও একটা হল ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে রবিবারের ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি নিয়ে গত কয়েক দিন উত্তেজনার পারদ সপ্তমে চড়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ম্যাচে যা হল তা পর্বতের মুষিক প্রসব ছাড়া কিছুই নয়।
মনে করতে পারছি না এ রকম কোনও জোলো ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি এর আগে দেখেছি কি না! একটা ছোট্ট তথ্য দিই— প্রথমার্ধে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড একটাও গোলমুখী শট নেয়নি। আশা করি, হাইভোল্টেজ একটা ম্যাচ কী রকম ম্যাড়মেড়ে ভাবে শেষ হয়েছে তা বোঝাতে পারছি। ম্যাচটা দেখতে দেখতে আমার আশি সালের মোহনবাগান-মহমেডান ফেড কাপ সেমিফাইনাল মনে পড়ছিল। তিন দিন ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে মীমাংসা হয়েছিল আমাদের পক্ষে।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের ম্যাচটা টিভিতে দেখে মনে হল সিটি কোচ পেলেগ্রিনি অ্যাওয়ে ম্যাচে আদ্যন্ত ড্রয়ের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে নেমেছিলেন। ভিনসেন্ট কোম্পানির সঙ্গে আর্জেন্তাইন ওটামেন্ডিকে প্রথম বার সেন্ট্রাল ডিফেন্সে নামিয়ে সেই লক্ষ্যে তিনি পুরোপুরি সফল। ওরা দু’জনই এ দিন ওয়েন রুনিদের যাবতীয় বিষ একপ্রকার শুষে নিয়েছিল বলা যায়।
এই ধরনের ম্যাচ বার করতে গেলে লাগে চূড়ান্ত ব্যক্তিগত দক্ষতা। কিন্তু ইউনাইটেডের রুনি, সিটির রহিম স্টার্লিংরা তো মেসি বা রোনাল্ডো নয়। দু’দলই পেনিট্রেটিভ জোনে গিয়ে অহেতুক পাস খেলছিল। তাই মিস পাসের বহর আরও বেড়ে যেতে দেখলাম। একটাও সোলো রান নেই!
রুনির কথা যখন উঠল তখন বলি ইংল্যান্ডের হয়ে রেকর্ড গোল করা এই স্ট্রাইকারের টার্নিং, বল পায়ে গতি, আউটসাইড ডজ, শট— সবই রয়েছে। কিন্তু একার দক্ষতায় ম্যাচ বার করার ক্যারিশমা নেই। বয়সের কারণে আগের মতো ওয়ার্কলোডও নিতে পারছে না আর। দু’দিন আগেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মস্কো থেকে খেলে ফেরায় যেন একটু ক্লান্তও দেখাল। সঙ্গে আবার এ দিন কোম্পানির সঙ্গে সংঘর্ষে মাথাও ফাটাল রুনি।
তাও দ্বিতীয়ার্ধে রুনির দল ম্যান ইউ একটু ম্যাচে ফিরেছিল। তবে তার মানে এই নয় যে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি দারুণ খেলেছে। এ বার রহিম স্টার্লিং আর কেভিন ডি ব্রুয়েনকে সই করিয়ে হইচই লাগিয়ে দিয়েছিল ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। কিন্তু সম্মানের ডার্বিতে দু’জন জ্বলে উঠল কোথায়? রহিম খেলল গড়পড়তা ফুটবল। আর ডি ব্রুয়েনকে তো এই ম্যাচে মনে থাকবে গাদাগুচ্ছের মিসপাসের জন্য।
প্রতিপক্ষের মাঠে ড্র করে পেলেগ্রিনির ম্যাঞ্চেস্টার সিটি চব্বিশ ঘণ্টা পরেই আবার পয়েন্ট টেবলে এক নম্বরে ফিরে এল বটে। তবে এখনও ২৮ ম্যাচ বাকি ইপিএলে। তাই লুইস ফান গলের ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডেরও বোধহয় এখনই হতাশ হওয়ার কিছু নেই।