আইএফএ শিল্ড খেলতে পারবেন না। সাফ জানিয়ে দিলেন র্যান্টি মার্টিন্স! শিল্ডে না খেলার কারণ হিসাবে এ দিন ইউনাইটেড তারকা শোনালেন চোটের কথা। বললেন, “ফেড কাপের দ্বিতীয় ম্যাচে চোট পেয়েছিলাম। সেই চোট এখনও সারেনি। তাই আমার পক্ষে আইএফএ শিল্ড খেলা সম্ভব নয়।” ক্লাব সূত্রে আবার শোনা যাচ্ছে অন্য কথা। যে, ঠিকঠাক বেতন পাননি বলেই র্যান্টি শিল্ডে খেলতে চাইছেন না।
আর্থিক সমস্যায় বেতন দেওয়া যাচ্ছে না। ইউনাইটেড স্পোর্টস কর্তারা তাই র্যান্টিকে বলে দিয়েছেন, তাঁর কাছে অন্য কোনও ক্লাবের প্রস্তাব থাকলে নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারকে ক্লাব ছেড়ে দেবে। সোমবার বিকালে অবশ্য অনুশীলনের পর র্যান্টি বললেন, “ক্লাব কর্তারা বলেছেন ঠিকই যে, অন্য কোনও ক্লাবের প্রস্তাব থাকলে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এখন ক্লাব পাব কোথায়? ফেড কাপের আগে তাও সালগাওকর আর ডেম্পোর প্রস্তাব ছিল। দেখি, এজেন্টের সঙ্গে কথা বলছি। বাইরের কোনও ক্লাবে যাওয়ার চেষ্টা করছি।”
শিল্ড শুরুর আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে ইউনাইটেড যেমন আথির্ক সমস্যায় জেরবার, তেমনই বেতন না পেয়ে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন মহমেডান ফুটবলাররাও। সাদা-কালোর তিন বিদেশি পেন, জোসিমার এবং লুসিয়ানো তো অনুশীলনেই আসছেন না। ক্লাব কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, “টাকা না পেলে অনুশীলনে যোগ দেব না।” শুধু বিদেশি নয়, মহমেডানের স্থানীয় ফুটবলারদেরও তিন-চার মাসের বেতন বাকি। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ দিন সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি কোচ সঞ্জয় সেন এবং ক্লাবের বাকি কর্তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেন সভাপতি সুলতান আহমেদ। তবে আলোচনার পর সুলতান আহমেদ তিন বিদেশির উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন। বললেন, “তিন বিদেশি আদৌ অনুশীলনে আসবে কি না, সেটা ওদের ব্যপার। না আসলে ক্লাবের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।” আর সঞ্জয় সেন জানিয়ে দিলেন, “ওরা যদি অনুশীলনে না আসে, কিছু তো করার নেই। বিদেশিদের ছাড়াই আমি শিল্ডের জন্য টিম তৈরি রাখছি।”
ইউনাইটেড স্পোর্টস আবার শিল্ডে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে বুধবার, সিঙ্গাপুরের ইন্টারন্যাশনাল এফসি-র বিরুদ্ধে। তার আগে অবশ্য ইউনাইটেডে ভাঙা হাট। এ দিন দলের প্রধান কোচ এলকো সাতোরি সরকারিভাবে পদত্যাগ জমা দিলেন। অনুশীলনের পর দেখা গেল, বেতনের টাকার জন্য চেঁচামেচি করছেন এরিক। পরে হতাশ গলায় বললেন, “আমার তো কলকাতায় থাকা-খাওয়ার জন্য টাকা দরকার। সেটাও না পেলে চলবে কী করে? চার মাসের ওপর বেতন বাকি।” এলকো নেই। তাই টিমের মোটিভেশনও উধাও। ফেড কাপ খেলে আসিফ-বিনীতরা কেরলে নিজেদের বাড়িতেই ছুটি কাটাচ্ছেন। আজ, মঙ্গলবার শহরে ফেরার কথা। ইউনাইটেডের কর্তা অলোকেশ কুণ্ডু অবশ্য বললেন, “এটা ঠিক যে, ক্লাবের আর্থিক সমস্যা নিয়ে আলোচনার সময় র্যান্টিকে আমরা বলেছিলাম, ক্লাব পেলে চলে যেতে পারে। পাশাপাশি এটাও ঠিক ফুটবলাররা সব সময় আমাদের পাশে ছিল। এখনও আছে। আর ওদের জন্যই এখনও আমরা লড়াই করতে পারছি। শিল্ডের আগে ওদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।”
একই সমস্যার সমাধান করতে দুই ক্লাবের কর্তারা দু’রকম পথে হাঁটছেন। মহমেডান কর্তারা যখন কঠোর নীতি নিচ্ছেন, তখন ইউনাইটেড কর্তাদের সুর নরম। এখন দেখার, ঝামেলা মিটিয়ে কারা শিল্ডে দাগ কাটতে পারে!