ছাঁটাই হওয়ার পর প্রথম মুখ খুলেই ডেভিড মোয়েস ধন্যবাদ দিলেন অ্যালেক্স ফার্গুসনকে। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কোচ হিসেবে স্যর অ্যালেক্সই নিয়ে এসেছিলেন মোয়েসকে। ১০ মাসও সেই দায়িত্বে থাকতে না পারলেও ম্যান ইউ-র সদ্য প্রাক্তন কোচ বলে দেন, “ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কোচ হিসেবে যোগ দেওয়াটা আমায় সব সময়ই গর্বিত করবে। আমার যোগ্যতায় বিশ্বাস রাখার জন্য আর আমায় সুযোগ দেওয়ার জন্য স্যর অ্যালেক্সের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।”
মোয়েসকে সরিয়ে দেওয়ার পরই আবার নিউ ইয়র্ক শেয়ার বাজারে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের শেয়ারের দাম বাড়ল। প্রথম দু’ঘণ্টাতেই ১৭.৭২ ডলার থেকে বেড়ে ম্যান ইউ-র শেয়ারের দাম দাঁড়ায় ১৮.৬০ ডলার। গত ১১ মাসে যা সর্বোচ্চ। মোয়েসের ছাঁটাইয়ে সমর্থকদের অনেকে খুশি হলেও ইংল্যান্ডের ফুটবল ম্যানেজারদের সংস্থা ম্যান ইউ কর্তাদের সমালোচনা করেছে। যে ভাবে প্রাক্তন এভার্টন বসকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাকে ‘অপেশাদার’ বলে মনে হয়েছে লিগ ম্যানেজার্স অ্যাসেসিয়েশনের। তা ছাড়া ম্যান ইউ মোয়েসের সঙ্গে যোগাযোগ করার আগেই যে ভাবে মিডিয়া মোয়েসের ছাঁটাইয়ের ব্যপারে নিশ্চিত করেছে, তারও সমালোচনা করেছে এলএমএ। তবে ব্রিটিশ মিডিয়ায় এখনও মোয়েসের বরখাস্ত হওয়া নিয়ে নিত্যনতুন খবরে বিরাম নেই। বরং গত ক’মাসে মোয়েসের সঙ্গে ম্যান ইউ ফুটবলারদের সম্পর্ক কতটা তলানিতে পৌঁছে গিয়েছিল তা ফাঁস হয়ে গিয়েছে।
ব্রিটিশ মিডিয়ার দাবি, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অলিম্পিয়াকোসের কাছে ০-২ হারের পর মোয়েস টিম পরিচালনা নিয়ে একটি ‘ম্যানেজমেন্ট গাইড বুক’-এর সাহায্য নিয়েছিলেন। এর পরই টিমের মধ্যে ফুটবলরারা বলতে শুরু করেন, “আমরা প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন। আমাদের টিমকে পরিচালনা করতে কেন বইয়ের সাহায্য নিতে হবে ম্যানেজারকে?” তা ছাড়া টিমের কয়েক জন ফুটবলারের সঙ্গে মোয়েসের ঝামেলা ফাঁস হয়ে যাওয়াটাও তাঁর বিরুদ্ধে গিয়েছে। শিনজি কাগওয়াকে মোয়েস কখনওই বিশ্বাস করতে পারেননি। কাগওয়াও নাকি মোয়েসকে পাত্তা দিতেন না। চলতি মাসে মিউনিখে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ খেলতে যাওয়ার বিমান ধরতে কাগওয়া এতটাই দেরি করেন যে ম্যান ইউ নিরাপত্তা কর্মীদের তাঁকে নিয়ে বিমানবন্দরে ছুটোছুটি পড়ে যায়। এত কিছুর পরেও নাকি কাগওয়ার শরীরি ভাষায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল, তাঁর কিছুই যায় আসে না। ব্রিটিশ মিডিয়ার আরও দাবি, মোয়েসের সাপোর্ট স্টাফেরও টিমের ফুটবলরারা পছন্দ করতেন না। সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা ঘটে আথেন্সে। অলিম্পিয়াকোস ম্যাচ চলাকালীন মোয়েস রেফারির একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে যখন চতুর্থ রেফারির সঙ্গে তর্কে ব্যস্ত ছিলেন। ঠিক তখনই রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে পরিবর্ত ফুটবলারদের একজন বলে ওঠেন, “ওঁকেই (মোয়েস) বাইরে পাঠিয়ে দিন। ওঁকে ছাড়াই আমরা ভাল থাকব।” যা শুনে অনেকেই স্তম্ভিত।