লাল মাটির রাজা। টানা পাঁচ বার ফরাসি ওপেন জয় রাফায়েল নাদালের। রবিবার ফিলিপ শাতিয়ের কোর্টে হারালেন বিশ্বের দু’নম্বর নোভাক জকোভিচকে। ছবি: এএফপি।
আগেই বলেছিলাম ফরাসি ওপেনের ফাইনালে জকোভিচের থেকে এগিয়ে থাকবে নাদাল। সেটাই হল। নাদাল আরও একবার বুঝিয়ে দিল, ক্লে কোর্টে সবর্কালের সেরা প্লেয়ার কে।
দাপটে ন’নম্বর ফরাসি ওপেন জেতাই শুধু নয়। মাথায় রাখতে হবে এ মরসুমে ফরাসি ওপেনে নামার আগে পর্যন্ত ওর ক্লে কোর্টে সময়টা একেবারেই ভাল যায়নি। সম্ভবত কেরিয়ারে সবচেয়ে খারাপ গিয়েছে। তার উপর জকোভিচের কাছেই তো শেষ চার সাক্ষাতে চার বারই হেরেছিল নাদাল। যার মধ্যে একটা আবার ক্লে কোর্টে। তার পরও রোলাঁ গারোয় যে ভাবে ফিরে এল, চার সেটের লড়াইয়ে ম্যাচটা জিতল, ভাবা যায় না! একেই বলে সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নের মতো ফিরে আসা। একেই বলে ফাইটিং কোয়ালিটি। কোর্টের মধ্যে ছেলেটা যেমন হিংস্র তেমনই নম্র কোর্টের বাইরে।
জকোভিচের আজ কিছু করার ছিল না। প্রথম সেটটা জেতার পর ওর খেলা দেখে মনে হল ক্লান্তি চেপে ধরেছে। প্রথম সেট দাপটে জেতার পর দ্বিতীয় সেটেও যদি জকোভিচ সেটা ধরে রাখতে পারত, হয়তো আরও লড়াই হত কিন্তু নাদাল ওকে সেই সুযোগটা দিল না। জিতে নিল ৩-৬, ৭-৫, ৬-২, ৬-৪। আমি এখনও মনে করি হার্ড কোর্টে জকোভিচ আরও ভাল খেলার ক্ষমতা রাখে কিন্তু এই ফর্ম আর ফিটনেসের নাদালের সঙ্গে ক্লে কোর্টে এঁটে ওঠা প্রায় অসম্ভব। জকোভিচ তাও চেষ্টা করেছিল। যেখানে আক্রমণ করার সুযোগ পেয়েছে, করেছে।
তা ছাড়া নাদালের পক্ষে যেটা সমস্যার হতে পারত, জকোভিচের সেই ব্যাকহ্যান্ডগুলোও এ দিন তেমন বিপজ্জনক হল কোথায়! নাদাল সেটা সামলে তো দিলই উল্টে জকোভিচকে ভুল করতে বাধ্য করল। বুঝিয়ে দিল ক্লে কোর্টে ওর রাজত্বে ফাঁটল ধরানো শুধু মুশকিলই নয়, প্রায় অসম্ভব।
১৪ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার পর এ বার নাদালের সামনে ফেডেরারের ১৭ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মহারেকর্ড ছোঁয়ার হাতছানি। অনেকে প্রশ্ন করবেন, এই ফর্মের নাদাল কি সহজেই সেই রেকর্ড ছাপিয়ে যেতে পারবে? সেটা সময়ই বলবে। তবে আমার মনে হয়, এই ফিটনেস ধরে রাখতে পারলে ও আরও দুটো গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারে। সার্কিটেও তো এই পর্যায়ের ফিটনেস এখন আর কারও মধ্যে সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না। ফেডেরারের বয়স হচ্ছে, নাদাল আর জকোভিচকে চ্যালেঞ্জ জানাবে কে? তাই ফর্ম আর ফিটনেস ধরে রাখতে পারলে সর্বোচ্চ পর্যায়ে দাপট দেখানোর মতো প্লেয়ার বলতে এখন এই দু’জনই।