নিজেকে এগিয়ে রাখছেন না রাফা

রোলাঁ গারো যে স্বপ্নের ফাইনাল চেয়েছিল, শুক্রবার সেটাই টেনিস বিশ্বকে উপহার দিলেন টুর্নামেন্টের এক এবং দুই নম্বর বাছাই। তবে রবিবারের রাফায়েল নাদাল বনাম নোভাক জকোভিচ এই মুহূর্তে আর শুধুই ট্রফির লড়াই নেই, হয়ে উঠেছে এক নম্বরের সিংহাসন-যুদ্ধও!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৪ ০৩:৪৮
Share:

রোলাঁ গারো যে স্বপ্নের ফাইনাল চেয়েছিল, শুক্রবার সেটাই টেনিস বিশ্বকে উপহার দিলেন টুর্নামেন্টের এক এবং দুই নম্বর বাছাই। তবে রবিবারের রাফায়েল নাদাল বনাম নোভাক জকোভিচ এই মুহূর্তে আর শুধুই ট্রফির লড়াই নেই, হয়ে উঠেছে এক নম্বরের সিংহাসন-যুদ্ধও!

Advertisement

জকোভিচ জিতলে ছিনিয়ে নেবেন নাদালের সিংহাসন। সঙ্গে পূর্ণ করবেন কেরিয়ার স্ল্যাম। আর্নেস্ট গুলবিসকে ৬-৩, ৬-৩, ৩-৬, ৬-৩ হারিয়ে রোলাঁ গারোয় নিজের দ্বিতীয় ফাইনালে ওঠা জকোভিচ ওপেন যুগের মাত্র ষষ্ঠ প্লেয়ার যিনি প্রতিটা গ্র্যান্ড স্ল্যামে একাধিক ফাইনাল খেলবেন। অন্য দিকে, ন’বার ফাইনালে পৌঁছে অভূতপূর্ব নজির গড়ে আবেগ তাড়িত নাদাল। “চিরকাল এখানে সেরাটা দিয়েছি। ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখতাম এই কোর্টে খেলার। কিন্তু ন’টা ফাইনাল কল্পনার বাইরের ব্যাপার!” এ বার তাঁর সামনে সেই অসাধ্য সাধনের হাতছানি, যা এর আগে পারেননি আর কেউ টানা পাঁচটি ফরাসি ওপেন জয়!

লাল মাটির রাজা অবশ্য ইতিহাস গড়া নিয়ে বেশ সতর্ক। এ দিন অ্যান্ডি মারেকে ৬-৩, ৬-২, ৬-১ চুরমার করার পর কোর্টে দাঁড়িয়েই বললেন, “আগের দু’টো টুর্নামেন্টের ফাইনালে নোভাক কিন্তু আমাকে হারিয়েছে। প্রতিপক্ষ হিসাবে ও অবিশ্বাস্য! তাই ফাইনালটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। ওর বিরুদ্ধে কোনও সুযোগ পেতে হলে অসাধারণ খেলতে হবে।” এর পরে যোগ করেন, “রোমে জিতে ওর আত্মবিশ্বাস দারুণ জায়গায়। তবে আমিও প্রতিদিন উন্নতি করছি। আজ খারাপ খেলিনি। দেখা যাক কী হয়!”

Advertisement

খারাপ যে খেলেননি, সেটা হলপ করে বলবেন উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন মারে। যাঁর সার্ভিস এ দিন ইচ্ছে মতো ভাঙলেন নাদাল। মারলেন অবিশ্বাস্য সব ফোরহ্যান্ড উইনার। ব্রিটিশ মিডিয়া ম্যাচটাকে ২০১১-র সেমিফাইনালের বদলা বলছিল। মারে নিজেও দাবি করেছিলেন, এ বার তিনি অনেক বেশি তৈরি। কিন্তু এক ঘণ্টা চল্লিশ মিনিটের ম্যাচে একটাও ব্রেক পয়েন্ট আদায় করতে পারলেন না! নাদাল ছ’বার ভাঙলেন তাঁকে। নাদালের ২৪টি উইনারের পাশে মারের ১১, নাদালের ৭৬ শতাংশ প্রথম সার্ভিসের পাশে মারের ৫২ শতাংশ, নাদালের মোট ৮৩ পয়েন্ট জেতার পাশে মারের ৪৩। সেমিফাইনালের আগে দু’টি পাঁচ সেটের লড়াই জেতা মারে হয়তো ক্লান্ত ছিলেন। কারণ যা-ই হোক, আজ টেনিসের সব বিভাগেই পর্যুদস্ত হলেন বিশ্বের আট নম্বর।

এ দিকে, ফেডেরার-ঘাতক আর্নেস্ট গুলবিসের থেকে যে লড়াইটা প্রত্যাশিত ছিল, সেটা পাওয়া গেল না। জকোভিচের থেকে তৃতীয় সেট ছিনিয়ে নিলেও গোটা ম্যাচে ৪৪টি আনফোর্সড এরর এবং পাঁচ-পাঁচ বার ডাবল ফল্ট করা গুলবিসকে দেখে একবারও মনে হয়নি অঘটন ঘটাতে পারেন। লাটভিয়ান ‘অঘটন মাস্টার’-এর তুলনায় বরং এ বারের ফরাসি ওপেনের প্রথম রোদ ঝলমলে দিনে গরম আর ঘাম সার্ব তারকাকে কষ্ট দিল অনেক বেশি। যিনি আঠাশ ডিগ্রি সেলসিয়াসে খেলতে খেলতে একটা সময় বিরক্তিতে র্যাকেটই ভেঙে ফেললেন। ম্যাচের শেষ জকোভিচ স্বীকার করে নেন, “গরমে মনঃসংযোগ করতে পারছিলাম না।”

গুলবিসকে আবার গরমের সঙ্গে ভোগাল পিঠের ব্যথাও। লাটভিয়ান দিনের প্রথম ছয় পয়েন্ট একটানা জেতার পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন জকোভিচ। যে সার্ভিস গুলবিসের সেরা অস্ত্র, সেটা প্রথম দুই সেটে ঠিকঠাক পড়ল না। তবে তৃতীয় সেটে সার্ভিসে ছন্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জকোভিচকে ভেঙে ৫-৩ এগিয়ে যান ও ১১ নম্বর এস-এ সেট কেড়ে নেন।

চতুর্থ সেটের শুরুতে দু’জনেই ব্রেক পেয়েছিলেন। দ্বিতীয় ব্রেক পেয়ে জকোভিচ ৫-৩ এগিয়ে যাওয়ার পর গুলবিস ডাবল ফল্ট করায় আরও সুবিধা পেয়ে যান জোকার। এর পর গুলবিসের ব্যাকহান্ড লাইনের পিছনে পড়লে ম্যাচ মুঠোয় পুরে ফেলেন সার্ব মহাতারকা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement