রোনাল্ডো, এমনকী পেলেকেও ছাপিয়ে গেলেন নেইমার দ্য সিলভা।
ব্রাজিলের ১০ নম্বর জার্সির ভার নেওয়ার ক্ষমতা যে তাঁর রয়েছে, প্রথম ম্যাচেই প্রমাণ করে দিয়েছেন ‘ওয়ান্ডার কিড’। তাও ঘরের মাঠে প্রায় বাষট্টি হাজার দর্শকের সামনে!
ইতিহাস বলছে ব্রাজিলের যত বড় মহাতারকাই হোন না কেন, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে গোল করা চাট্টিখানি কথা নয়। পেলে, গ্যারিঞ্চা, জিকো, রোমারিও, রোনাল্ডোব্রাজিলীয় মহাতারকাদের কেউই বিশ্বকাপ অভিষেক ম্যাচে গোল পাননি নেইমারের মতো।
‘ব্রাজিলের বোমা’ নিজেও কি ভেবেছিলেন শুরুটা এতটা ভাল হবে? ম্যাচের পরই দেশজ মিডিয়ায় নেইমার বলেন, “যতটা ভেবেছিলাম, শুরুটা তার থেকে অনেক ভাল হল। দারুণ খুশি।” পরে ইনস্টাগ্রামে সাড়ে ৫৭ লক্ষ ফলোয়ারের উদ্দেশে নেইমারের পোস্ট, “এই অসাধারণ মুহূর্তে আমার পাশে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। গোটাটাই স্বপ্নের মতো লাগছে।”
ক্রোয়েশিয়া-বধের উৎসবটাও তো হল অভিনব ভাবে। বান্ধবীর সঙ্গে সেলফি দিয়ে। বৃহস্পতিবারই আবার ছিল ব্রাজিলের ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’। এত উত্তেজনার মধ্যেও নেইমার যেটা ভোলেননি। জোড়া গোলের পরই বান্ধবী গ্যাব্রিয়েলা লেঞ্জির সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে সেলফি পোস্ট (ছবি উপরে) করে ‘পোস্টার বয়’ লেখেন, “আজকের দিনটা প্রায় পারফেক্ট...শুধু তোমায় সামনাসামনি দেখার অভাবটাই যা বোধ করছি। হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন্স ডে মাই লাভ!’’
মাঠের বাইরেও নেইমারে মজে বিশ্ব। উদ্বোধনী ম্যাচ চলাকালীন টুইটের সুনামিতেই সেটা স্পষ্ট। ১৩০টি দেশের এক কোটি ৩২ লক্ষ টুইটের স্রোত আছড়ে পড়েছে ম্যাচ চলাকালীন। ইতালির স্ট্রাইকার মারিও বালোতেলি আবার ইনস্টাগ্রামে নেইমারের সঙ্গে নিজের ছবি পোস্ট করে স্প্যানিশে লেখেন, “দুরন্ত পারফরম্যান্স ভাই।”
উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি অবশ্য অভিযোগের তিরও রয়েছে। জাপানের রেফারির কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে। লুই ফিলিপ স্কোলারি অবশ্য সে সব পাত্তা দিচ্ছেন না। টিমের সেরা অস্ত্রকে নিয়ে ব্রাজিলের কোচের সাফ কথা, “আমরা শুধু একটাই জিনিষ চাই। নেইমার যেন বল পায়ে এ রকম মেজাজে থাকতে পারে। ও স্পেশ্যাল।” পরে মিডিয়াকে কটাক্ষ করে যোগ করেন, “ও যে বিশ্বের সেরা প্লেয়ার সেটা মিডিয়ার বলার অপেক্ষা রাখে না। ওর দায়িত্ব ব্রাজিলের হয়ে মাঠে নামা। সেটাই ও করেছে।”
ক্রোয়েশিয়ার কোচ নিকো কোভাচ ব্রাজিলকে পেনাল্টি কিক দেওয়ার সিদ্ধান্তে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। এতটাই যে, বলে দিয়েছেন “ব্রাজিল এ ভাবেই রেফারির বদান্যতা পেতে থাকলে বিশ্বকাপ সার্কাসে পরিণত হবে।” স্কোলারি যার জবাবে বলেন, “এই নিয়ে কিছু বলতে চাই না। শুধু একটাই কথা বলব, আমরা কিন্তু পাঁচটা বিশ্বকাপ জিতেছি। আর সেই পাঁচ বারের সার্কাসে কিন্তু ব্রাজিল সুবিধা পায়নি। রেফারি পেনাল্টিটা দেখেছেন। সিদ্ধান্তটাও তিনিই নিয়েছেন।”