ট্রফি নিয়ে টিম মালিকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: সুদীপ আচার্য
জয়নগরের মোয়া থেকে দার্জিলিং চা— অভিনব উপহারে আইএসএল চ্যাম্পিয়নদের বরণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য সরকার!
বুধবার বেলা একটায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য সরকারের তরফে সংবর্ধনা দেওয়া হবে ট্রফি জয়ী আটলেটিকো টিমকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন নবান্নে এই ঘোষণা করে জানান, সংবর্ধনা মঞ্চ থেকে ট্রফি উৎসর্গ করা হবে বাংলার মানুষকে। অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে মঙ্গলবার বেলা দু’টোয় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে বসছে বৈঠক। থাকবেন তথ্য সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর এবং কলকাতা কর্পোরেশন ও কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা। নেতাজি ইন্ডোরের অনুষ্ঠানে প্রবেশের টিকিট রাখা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্তও তখনই নেওয়া হবে।
আইপিএল জয়ী শাহরুখ খানের কেকেআরকে দু’বার সাড়ম্বর সংবর্ধনা দিয়েছে রাজ্য সরকার। যার দ্বিতীয়টা হয় চলতি বছরেই। ইডেনের সেই দুই অনুষ্ঠানে বলিউড ও টালিগঞ্জের এক ঝাঁক তারকার উপস্থিতি ছাড়াও লোকশিল্পী, ঢাকিদের এনে আসর জমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আইপিএল জয়ের প্রথম বছরে তো শহরের যান চলাচল স্তব্ধ করে ট্রফি নিয়ে খোলা ট্রাকে শহর পরিক্রমাও করেছিল চ্যাম্পিয়নরা। শাহরুখের টিমের মতো অত বড় মাপের আয়োজন অবশ্য সৌরভের আটলেটিকো দে কলকাতার জন্য হচ্ছে না। প্রাথমিক ভাবে যা শোনা যাচ্ছে, এক ঘণ্টার অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্বে থাকছে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। জয়নগরের মোয়া, তুলাইপাঞ্জি চাল, ডোকরার স্মারক, দার্জিলিং চা, ফুল এবং উত্তরীয় দিয়ে সম্মান জানানো হবে টিমের প্রত্যেক ফুটবলার ও কর্মকর্তাকে।
সোমবার দুপুর সওয়া তিনটে নাগাদ আটলেটিকো দে কলকাতা দলের তিন কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েন্কা, হর্ষ নেওটিয়া এবং উৎসব পারেখ নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ট্রফি তুলে দেন। সেখানেই সংবর্ধনার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি সঞ্জীব গোয়েন্কা রাজ্যে একটি ফুটবল অ্যাকাডেমি খোলার কথাও ঘোষণা করেন। তবে কলকাতায় থাকলেও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন যাননি। মমতা জানান, খেলার কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি আসতে পারেননি।
বুধবারের অনুষ্ঠানেও থাকবেন না আটলেটিকোর অনেক তারকা। লুই গার্সিয়া, এদেল বেটে-সহ টিমের বেশির ভাগ বিদেশি দেশে ফিরে গিয়েছেন। স্পেনের বিমান ধরেছেন কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। সোমবার কলকাতা ছেড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা রওনা হয়ে গেলেন বিতর্কিত ফিকরু তেফেরাও। তবে ফাইনালের গোলদাতা মহম্মদ রফিক-সহ ভারতীয় তারকারা সম্ভবত থাকবেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “খুব অল্প সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। টিমের সব খেলোয়াড়কে হয়তো পাওয়া যাবে না। যাঁদের পাওয়া যাবে, তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে থাকার জন্য ফেডারেশনের সভাপতি প্রফুল্ল পটেলকেও আমন্ত্রণ করা হয়েছে।”
অনুষ্ঠানের মোট খরচ কত এবং কোন খাতে তা জোগাড় করা হবে, সে সবই চূড়ান্ত হবে মঙ্গলবারের বৈঠকে। তবে বুধবার নেতাজি ইন্ডোর ভরিয়ে তোলার দায়িত্ব নাকি ক্রীড়া দফতরের। শোনা যাচ্ছে, রাজ্য সরকারের অনুদান পাওয়া বিভিন্ন ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে আসা হতে পারে গ্যালারি ভরাতে।
এ দিকে সঞ্জীব গোয়েনকা জানান, অ্যাকাডেমির জন্য ইতিমধ্যেই পাঁচ-ছ’টি জমি দেখেছেন তাঁরা। অ্যাকাডেমি কোথায় হবে সেটা চূড়ান্ত হবে আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই। অ্যাকাডেমির সঙ্গে যুক্ত থাকবে স্পেনের আটলেটিকো মাদ্রিদ।