দু’ম্যাচে চাই চল্লিশ উইকেট।
রঞ্জি কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে লক্ষ্মীরতন শুক্লদের মূলমন্ত্র হোক এটাই। পরামর্শদাতা উত্পল চট্টোপাধ্যায়। বাংলার সেরা উইকেট শিকারি, রঞ্জি ট্রফিতে যাঁর শিকারসংখ্যা ৫০৩।
আর সেই মন্ত্রকে কী ভাবে কাজে লাগাতে হবে, তারও টোটকা দিচ্ছেন বাংলার প্রাক্তন বাঁ হাতি স্পিনার। বলে দিচ্ছেন, ইডেনে টার্নার বানিয়ে ঝাঁপাও বাংলা।
এ মরসুমে রঞ্জিতে বাংলার পারফরম্যান্স দেখার পর হতাশ উত্পল মঙ্গলবার আনন্দবাজারকে বলছিলেন, “যা দেখছি, বাংলার কাজটা এখন খুব কঠিন। এই অবস্থা থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা মোটেই সোজা নয়। সে জন্য ওদের শেষ দুটো ম্যাচে কুড়িটা করে উইকেট নিতে হবে। না হলে ছয় পয়েন্ট আসবে কী করে?”
ইডেনে রেল ম্যাচের জন্য দুটো উইকেট তৈরি। একটা গ্রিন টপ। অন্যটায় চলছে টার্নার বানানোর চেষ্টা। উত্পলের পরিষ্কার রায়, টার্নারে খেলতে হবে। বললেন, “এটা আগে হলেই ভাল হত। স্পিনারদের কথা ভেবে উইকেট তৈরি না করলে ওরা ভাল পারফম্যান্স করবে কী করে? শুরু থেকে ওদের গ্রিনটপে ফেলে না দিলেই বোধহয় ভাল হত।”
গ্রিনটপের তত্ত্ব যে প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক ও সিএবি-র বর্তমান যুগ্মসচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত, তা জেনেও উত্পল বলছেন, “গ্রিনটপ করতে গেলে স্থানীয় লিগ থেকে শুরু করে বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলোতে সর্বত্র করা উচিত। নিচুু স্তর থেকেই তা শুরু করতে হবে। সৌরভের ম্যাটিং উইকেটের ধারণাটা যেমন বেশ ভাল। কিন্তু গ্রিনটপের তত্ত্বটা শুধু রঞ্জি স্তরের জন্য বোধহয় ঠিক না। স্থানীয় ক্রিকেটে পাটা ও ঘূর্ণি উইকেটে খেলে এসে ছেলেগুলোকে সবুজ, ফাস্ট উইকেটে ফেলে দেওয়া হলে তো তারা হিমশিম খাবেই।”
ভিশন ২০২০ শুরুর আগে সৌরভ তাঁকে সেই প্রকল্পের স্থানীয় স্পিন উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু তা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন উত্পল। বাংলার ক্রিকেটের এই দুঃসময়ে তাঁকে ফের ডাকা হলেও কি জবাব সেই ‘না’ হবে? ময়দানের ‘ডেভিড’ বললেন, “সিএবি-ই আমার উপর রেগে আছে। আমার কোনও রাগ নেই। তবে বারবার আমাকে যে ভাবে বিভিন্ন দায়িত্ব থেকে না জানিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা আমার পছন্দ হয়নি। এমন অসম্মান বোধহয় প্রাপ্য নয় আমার।”
তবে যুগ্মসচিবের চেয়ারে বসার পর সৌরভ তাঁকে ডাকলে বাংলার ক্রিকেটের স্বার্থে নিশ্চয়ই হাত বাড়িয়ে দেবেন, জানালেন উত্পল। বললেন, “ভিশনে যখন আমায় যোগ দিতে বলেছিল সৌরভ, তখন তো ও সিএবি-র দায়িত্ব নেয়নি। এখন সৌরভ সিএবি-র যুগ্মসচিব। এখন ডাকলে নিশ্চয়ই সাহায্য করার কথা ভেবে দেখব। বাংলার ক্রিকেটের স্বার্থে কেন এগিয়ে আসব না?”