এ আর নতুন কী? সেরা চার আর বাকিদের মধ্যে দূরত্ব এতটাই যে, নাদাল, মারে, জকোভিচ, ফেডেরার ছাড়া অন্য কেউ এ বার উইম্বলডন জিতলে বিস্মিত হব।
প্রত্যেক গ্র্যান্ড স্ল্যামের আগেই রাফায়েল নাদালকে নিয়ে আলোচনা করতে হয়। জেতার রাস্তা খুঁজে নেওয়ার ব্যাপারে ওর চেয়ে বড় ওস্তাদ টেনিস বিশ্বে আর কে আছে? ওর ফিটনেস, চোট দেখে বিশেষজ্ঞরা ওকে খুব একটা নম্বর দিতে না চাইলেও বাস্তবে দেখা যায় বড় ম্যাচে ও সবাইকে ভুল প্রমাণ করল।
গতবারের চ্যাম্পিয়নকে পরের বার ফেভারিট বলাটাই রীতি। সেই অনুযায়ী অ্যান্ডি মারেকে সম্ভাব্য খেতাবজয়ীদের তালিকায় এক নম্বরে রাখাই যেত। কিন্তু গত বারো মাসে মারেকে যে ভাবে ফর্ম ও ফিটনেসের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে, পিঠের ব্যথা সমানে ভুগিয়ে আসছে, তাতে ওর খেতাব ধরে রাখাটা জটিল হবে।
লেন্ডলের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়াটাও যে ওর পক্ষে ভাল হয়েছে, বলব না। লেন্ডলের পরিবর্ত হিসেবে এমিলি মরেসমো! শীর্ষে থাকা পুরুষ তারকার মহিলা কোচ রাখার সাহসী সিদ্ধান্তটার জন্য মারে আর ওর টিমকে ‘ফুল মার্কস’। মরেসমো উইম্বলডন জিতেছে। জয়ের রেসিপিটা জানে। কিন্তু যে সময়টা ওদের জুটির দরকার, সেটা ওদের দিতেই হবে।
ঘাসের কোর্টে ফেডেরার কেমন, নিশ্চয়ই আলাদা করে বোঝাতে হবে না। নিজের সেরাটা ও উইম্বলডনেই দিয়েছে এসেছে বরাবর। সে জন্যই ও এখানে আট নম্বর খেতাবের দিকে তাকিয়ে। এবং সেটাই এ বার ওর সবচেয়ে বড় প্রেরণা হয়ে উঠতে পারে। ঘাসের কোর্টে ও এখনও যথেষ্ট ফিট ও গতিময়।
সব শেষে জকোভিচ। যাকে আমি এখন কোর্টে সবচেয়ে কাছ থেকে দেখছি। ফরাসি ওপেন ফাইনালের তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলে আমরা এখন ঘাসের কোর্টের মরসুমটা উপভোগ করছি। উইম্বলডনের খেতাবের জন্য জকোভিচ যে কতটা মরিয়া ও উৎসাহী, তা ভাবতেও পারবেন না!
লন্ডন থেকে জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের চোখে
জকোভিচ: ছেলেদের এক নম্বর ফেভারিট। দারুণ ভাল ফর্মে আছে। দ্রুতগতির কোর্টে আরও ভাল খেলে। কোচ বরিস বেকারের থেকে ঘাসের কোর্টে সেরা ভলি মারার টিপসও পাবে নিয়মিত।
ফেডেরার: উইম্বলডন বলেই বত্রিশেও সম্ভাব্য ফাইনালিস্ট। প্রথম সপ্তাহটা টিকে যেতে পারলে পরের দিকে খানিকটা স্লো হয়ে পড়া ঘাসের কোর্টে নেট-প্লে, ভলিতে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে।
নাদাল: ফরাসি ওপেন জিতলেও একশো ভাগ ফিট নয়। ক্লে কোর্টে ভয়ঙ্কর ভলি মারতে যে বাউন্সটা পায়, দ্রুত গতির কোর্টে সেটা পাবে না। বিশেষ করে প্রথম সপ্তাহে ঘাসের কোর্টে যখন ভিজে ভাব থাকবে।
কালো ঘোড়া: নিশিকোরি টিপিকাল সার্ভ-ভলি প্লেয়ার। ঘাসের কোর্টে খেলার যেটা ট্রেডমার্ক। দুর্দান্ত ফর্মে। সম্প্রতি এটিপি ট্যুরে বড় টুর্নামেন্ট জেতায় গ্র্যান্ড স্ল্যামে ভাল করার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
সেরেনা উইলিয়ামস: মেয়েদের পয়লা নম্বর ফেভারিট। পাওয়ার, সার্ভিস আর ভলির দাপটের জন্য তিরিশ পেরিয়েও ঘাসের কোর্টে এখনও প্রায় অপ্রতিরোধ্য।
শারাপোভা: অপছন্দের ক্লে কোর্টে গত তিন বছরে দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রিয় ঘাসের কোর্টে তুমুল আত্মবিশ্বাসী থাকবে। তবে উইম্বলডন জিততে হলে সেরেনা-সিনড্রোম কাটানো দরকার।
কালো ঘোড়া: স্পেনের মুরুগুজা আর আমেরিকার ম্যাডিসন কিস। দু’জনেই প্রচন্ড পাওয়ারফুল গেম খেলে। বিগ সার্ভার। দ্রুতগতির কোর্টে আরও সুবিধে পাবে। সার্কিটে নতুন বলে বিপক্ষের কাছে ওদের খেলাটা এখনও অচেনা। কিস শনিবারই ইস্টবোর্নে চ্যাম্পিয়ন হল।