ক্রিসমাস-মেজাজে নেট থেকে লাঞ্চে। এমসিজি-তে বান্ধবী ড্যানিয়েলেকে নিয়ে ক্রিসমাস লাঞ্চে স্টিভ স্মিথ। বৃহস্পতিবার।
বক্সিং ডে টেস্টে টস হওয়ার আগেই ধোনির ভারতকে আক্রমণ শুরু করে দিল অস্ট্রেলিয়া।
ভারতীয় ড্রেসিংরুমের কাণ্ডকারখানা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া শিবিরের মনোভাবটা কেমন, তা অজি অধিনায়কের কথাতেই পরিষ্কার। সাংবাদিকদের সামনে বৃহস্পতিবার স্মিথ রাখঢাক না করে বলে দিলেন, “আমরা ওদের স্লেজিং করব কী, ওরা নিজেদের মধ্যে যা করছে, তাতে আর স্লেজিংয়ের দরকার পড়বে বলে মনে হয় না।”
মাঠে নামার আগেই ভারতীয় ক্রিকেটারদের বাক্যবাণে বিদ্ধ করাটা অজিদের পুরনো রীতি। এর আগে রিকি পন্টিং, স্টিভ ওয়রাও একই ভাবে ভারতকে মাঠে নামার আগে থেকে মানসিক ভাবে দূর্বল করার চেষ্টা চালিয়ে এসেছেন। তাঁদের পরম্পরা মেনে স্মিথও যে চলতে শুরু করেছেন, তা বোঝা যাচ্ছে। বিপক্ষকে বেকায়দায় পেয়ে তিনিও সেই খেলা শুরু করে দিলেন।
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কের বক্তব্য হল, ধোনির দলের সদস্যরা মাঠে কিছু করতে না পেরে অভিযোগ আর ঘ্যানঘ্যানানির উপরই রয়েছেন। বৃহস্পতিবার তাঁকে সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এমনিতেই তো বিধ্বস্ত ভারতীয় দল। তাও কি মাঠে স্লেজ করে বিরক্ত করে মারবেন ধোনিদের? তাতে স্মিথ তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলেন, “কী দরকার? ওরা নিজেরাই তো সেটা নিজেদের মধ্যে করছে। শুধু অভিযোগ আর ঘ্যানঘ্যান। আমাদের কাজটা ওরাই করে দিচ্ছে।”
ভারতীয় শিবির থেকে প্র্যাকটিস পিচের মান, খাবারের মান নিয়ে একের পর এক অভিযোগ তোলা হয়েছে। তার উপর ব্যাট করতে নামা নিয়ে দুই ব্যাটসম্যানের মধ্যে যে রকম ঝামেলা হয়েছে বলে খবর, তাতে বিপক্ষ শিবিরের এমন ধারণা হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। ভারতীয় ড্রেসিংরুমের যে ‘অস্বস্তিকর’ ছবিটা প্রকাশ হয়েছিল, সেটাকেই হাতিয়ার করে এখন মনস্তাত্ত্বিক সুবিধাটা নিতে চাইছেন স্মিথরা।
সিরিজে এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া শিবির এমনিতেই বেশ ফুরফুরে মেজাজে। দু’দিন আগে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ফ্যামিলি ডে উপলক্ষে এমসিজি-তে বসেছিল প্রাক্তন ও বর্তমান ক্রিকেটারদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জমজমাট পুনর্মিলনের আসর। তাতে প্রচুর হইচই করেছেন স্মিথের সতীর্থরা। তার পর অবশ্য যে যাঁর কাজে ফিরে এসেছেন। বড় দিনে নেট প্র্যাকটিসে অবশ্য তাঁরা ছিলেন বেশ হাল্কা মেজাজে। ওয়ার্নার, হাডিনরা স্ত্রী-পুত্রদেরও সঙ্গে এনেছিলেন।
সিরিজের প্রথম দুই টেস্টে যেমন খেলেছিলেন, তেমনই খেলবেন বলে জানিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। তাঁর বক্তব্য, “আমরা একই খেলা খেলব। প্রথম দুই টেস্টে যা খেলেছি। আশা করি ফলও একই রকম হবে।” চোট পাওয়া ডেভিড ওয়ার্নার ও দু’দিন আগে নেটে হেলমেটে বলের আঘাত পাওয়া শেন ওয়াটসনকে এ দিন নেট না করে শুধু থ্রো ডাউন নিতে দেখা গেলেও স্মিথ দু’জনের সম্পর্কেই আশাবাদী। তবে জো বার্নসের যে টেস্ট অভিষেক অভিষেক হচ্ছেই, এই নিয়ে সন্দেহ নেই। মিচেল মার্শের চোট। তবে ওয়াটসন খেললে বার্নসকে ছ’নম্বরে ব্যাট করতে নামতে হবে। স্মিথ নিজেই জানিয়ে দিলেন সে কথা। বললেন, “ওয়াটসনকে প্রথম তিনের মধ্যে রাখাই ভাল। তাই বার্নসকে ছ’নম্বরে নামতে হবে। টেস্ট কেরিয়ার শুরুর পক্ষে এই জায়গাটা খারাপ নয়।”
অস্ট্রেলিয়া শিবিরে আর একটা ভাল খবর, রায়ান হ্যারিসের দলে ফেরা। হাতের চোট সারিয়ে তিনি দলে ফিরছেন মিচেল স্টার্কের জায়গায়। স্টার্কের ধারাবাহিকতা নিয়েও চিন্তায় টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে একটা ব্যাপারে বেশ চাপে আছেন স্মিথ। স্লো ওভার রেট। ব্রিসবেনে যার জন্য জরিমানা হয়েছে তাঁর। পরের বারো মাসে স্মিথ অধিনায়ক থাকাকালীন ফের অস্ট্রেলিয়ার ওভার রেট স্লো হলে সাসপেনশনের খাঁড়া নেমে আসবে তাঁর উপর। এই নিয়ে ক্যাপ্টেন বলেন, “এই ব্যাপারটা আমাদের দেখতেই হবে। ব্রিসবেনে এত গরম ছিল যে, প্রথম দিনই বোলাররা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এখানে তা যাতে না হয়, সেটা দেখতে হবে।”
ছবি: গেটি ইমেজেস।