কাভানিকে নিয়ে তাবারেজের সাংবাদিক সম্মেলন। ছবি: গৌতম ভট্টাচার্য।
বেড়ালের গলায় ঘণ্টাটা খোদ ফিফার লোকের সামনেই বেঁধে দিলেন প্রচণ্ড হতাশ হয়ে পড়া উরুগুয়েন কোচ অস্কার তাবারেজ। পরিষ্কার বললেন, “আমাদের কোচেদের হয়েছে সমস্যা। ভরা মরসুম ক্লাবে খেলে যখন বিশ্বকাপের আগে এরা আমাদের হাতে আসছে, তখন তারা হয় প্রচণ্ড ক্লান্ত, নইলে চোট পেয়ে বসে রয়েছে।”
সুয়ারেজের চোটের পর এ দিন উরুগুয়ে তাদের ক্যাপ্টেনকেও ইংল্যান্ড ম্যাচ থেকে হারাল। কোচ যা বলছেন, তাতে দিয়েগো লুগানো ইতালি ম্যাচেও সুস্থ হবেন কি না, কোনও কুলকিনারা নেই। সুয়ারেজ খেলবেন রুনিদের বিরুদ্ধে। কিন্তু কতকটা উপয়ান্তর না দেখেই তাঁকে খেলাতে হচ্ছে। উরুগুয়ে কোচ বললেন, “জানি না কী করে সমাধান সম্ভব। ক্লাব ফুটবল শেষ হওয়া আর বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার মধ্যে গ্যাপটা বাড়াতে পারলে সবচেয়ে ভাল হয়। কিন্তু সেটা কি সম্ভব? কে জানে?”
তাঁর সঙ্গে প্রশ্নোত্তরের কিছু নমুনা:
প্রশ্ন: সবাই বলাবলি করছিল পঞ্চাশের বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি ঘটবে এ বার। ফাইনালে আবার যাবে ব্রাজিল আর উরুগুয়ে। অথচ আপনাদের এখন যা দশা, টুর্নামেন্ট থেকেই বেরিয়ে যেতে পারেন।
তাবারেজ: সেটা লোকের মনের কল্পনা। মিডিয়া তাতে আরও রং চড়িয়েছিল। মিডিয়া ওটা চেটেপুটে খেতও। কিন্তু আমরা জানি বাস্তবটা কী। আমরা হাওয়ায় ভাসছি না। পঞ্চাশ সালের পর পরিস্থিতি অনেক বদলে গেছে। এখন ফুটবল শক্তি হিসেবে ব্রাজিল কোথায় আর আমরা কোথায়! লেভেলটাই আলাদা হয়ে গেছে। আমার লক্ষ্য যদি বলেন, তা হলে কোনও রকমে কালকের ম্যাচটা জিতে উঠে টুর্নামেন্টে ভেসে থাকা। এর বাইরে এখন কিছু ভাবছি না।
প্র: কোস্টারিকার কাছে এমন বিশ্রী হারের ব্যাখ্যা কী?
তাবারেজ: এটা নিয়ে আমরাও খুব পীড়িত হয়ে রয়েছি। বিশ্বকাপটা কে আর হেরে শুরু করতে চায়! এখনও ব্যাপারটা অবিশ্বাস করার মতো। কিন্তু বাস্তব মানতেই হবে যে, কালকের ম্যাচে যারা হারবে তারা টুর্নামেন্ট থেকে এক রকম বিদায় নিল।
প্র: সুয়ারেজ সম্পর্কে অনেক অভিযোগ আছে। ওর ব্যবহার সম্পর্কে। উরুগুয়ের মাঠের আচরণ সম্পর্কে। কী বলবেন?
তাবারেজ: চার বছর আগে কোথায় কী হয়েছিল, তা নিয়ে বসে থাকবেন না। মনে রাখবেন ফুটবল হল বডি কনট্যাক্ট স্পোর্ট। আর সেটা মানুষে খেলে। একটু-আধটু বিচ্যুতি হতেই পারে। তবে আমরা তো ফেয়ার প্লে ট্রফি জিতেছি। নিজেদের ভাবমূর্তি সম্পর্কে উরুগুয়ে ফুটবল টিম যথেষ্টই সচেতন।
প্র: তা হলে এই বিপন্ন অবস্থায় কী বলবেন? হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তো। ক্যাপ্টেন খেলছে না মানে আপনাকে পুরো স্ট্র্যাটেজি বদলাতে হবে।
তাবারেজ: সবাই এই বিপদের মধ্যেও যার-যার মোটিভেশন খুঁজছে। আমাদের জন্য নেগেটিভ সিচুয়েশন তো নতুন নয়। আমরা আগেও পড়েছি এবং টপকে গেছি। উরুগুয়ে আবার সেই মন্ত্রটাই স্মরণ করে নামবে যে, তার ফুটবলাররা হাল ছাড়ে না কখনও।
তিন সিংহের মুখে লা সেলেস্তেরা। সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন।