উৎসবের সিংহলিজ নববর্ষে তিক্ত মুখের নাম মালিঙ্গা

আশ্চর্য, সাত দিন কেটে যাওয়ার পরেও শ্রীলঙ্কার প্রতিটি অংশে যেন এখনও গত রোববার রাতের জীবন্ত মিরপুর! সিংহলিজদের নববর্ষ গেল আজ, সোমবার। বাংলা নববর্ষের ঠিক একদিন আগে। সিংলিজরা একে উদযাপন করেন সারা দিন বাজি পুড়িয়ে আর বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করে। এরই সঙ্গে একটা তৃতীয় দৃষ্টিকোণ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল ক্রিকেট।

Advertisement

গৌতম ভট্টাচার্য

কলম্বো শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৩৩
Share:

ছবি: গৌতম ভট্টাচার্য

আশ্চর্য, সাত দিন কেটে যাওয়ার পরেও শ্রীলঙ্কার প্রতিটি অংশে যেন এখনও গত রোববার রাতের জীবন্ত মিরপুর!

Advertisement

সিংহলিজদের নববর্ষ গেল আজ, সোমবার। বাংলা নববর্ষের ঠিক একদিন আগে। সিংলিজরা একে উদযাপন করেন সারা দিন বাজি পুড়িয়ে আর বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করে। এরই সঙ্গে একটা তৃতীয় দৃষ্টিকোণ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল ক্রিকেট। আজকের নববর্ষে ক্রিকেটজয়কে এমন ভাবে উদ্যাপন করা হল যেন ক্রিকেটজয়ই নববর্ষকে আহ্বান করেছে।

সঙ্গকারারা ঢাকা থেকে দেশে ফেরার পর খোলা মোটর শোভাযাত্রায় বিমানবন্দর থেকে সোজা রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি ভবনে যাওয়ার পথে কলম্বো বিমানবন্দর থেকে সামান্য এগিয়েই বাঁ দিকে এই বিলবোর্ডটা টাঙানো হয় (উপরের ছবিতে)। আর আজও যা খোলা হয়নি। খোলার প্রশ্নও নেই।

Advertisement

আসলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের হ্যাংওভার এতটুকু কাটেনি। ভারতীয় ক্রিকেটাররা সরে গিয়েছেন আইপিএলের সাতমহলা বাড়িতে। কিন্তু আমিরশাহির কোনও রেশ এ দেশে অন্তত নেই। শ্রীলঙ্কা এখনও পড়ে রয়েছে ঢাকায়! নববর্ষের বাজি পোড়ানোর সঙ্গে ক্রিকেটারদের নিয়ে তুমুল উন্মাদনা যেমন চলছে। বিদেশি ভারতীয় দেখলেই গড়পড়তা শ্রীলঙ্কান নাগরিক ক্রিকেট অলোচনায় ঢুকে পড়তে চাইছেন। সে টুকটুক (এখানকার অটো) চালক থেকে শুরু করে কর্পোরেট জগতের বাসিন্দা, যিনিই হোন না কেন।

গণ-সেন্টিমেন্ট এ রকম: আপনাদের সেই টিম আর নেই যা সচিনের আমলে ছিল। আপনাদের কোহলির খেলা ভাল, ব্যবহার খুব খারাপ। আর আপনাদের কোনও ভাবেই যুবরাজ সিংহের বাড়ি আক্রমণ করা উচিত হয়নি।

দেশের যাবতীয় পত্রপত্রিকায় রিয়েল হিরো হিসেবে আচমকা উঠে এসেছেন দীনেশ চান্দিমল। দলের স্বার্থে টিমের অধিনায়কত্বকে বিসর্জন দিয়ে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বলে। খুব সুখ্যাতি হচ্ছে নির্বাচক সনৎ জয়সূর্যর। তিনিই চান্দিমলকে বসানোর বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন। কুমার সঙ্গকারা ও মাহেলা জয়বর্ধনে— অন্য দু’জন, যাঁদের নিয়ে তুমুল উচ্ছ্বাস চলছে। কলম্বো থেকে ক্যান্ডি— জয়বর্ধনে-সঙ্গকারার বিশাল বিশাল হোর্ডিং লক্ষ্য করা গেল।

সবচেয়ে নাচানাচি হচ্ছে যাঁকে নিয়ে, তিনি অবশ্য লাসিথ মালিঙ্গা। কিন্তু নববর্ষের আনন্দের মধ্যেও মালিঙ্গা যথেষ্ট তিক্ত হয়ে রয়েছেন। তাঁর অধিনায়কত্বের প্রশংসা করা হলে বলে দিচ্ছেন, “ওটা আইপিএলের প্রাপ্য!” ফাইনালের দুর্দান্ত ডেথ ওভার বোলিং নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে বলে দিচ্ছেন, “ওটা আইপিএলের প্রাপ্য!” যা যা বলা হচ্ছে, সবই কৃতিত্ব দিচ্ছেন আইপিএলকে। আসলে দু-দু’টো বিশ্বকাপ ফাইনাল না জেতাতে পারায় শ্রীলঙ্কায় মালিঙ্গাকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছিল। বলা হচ্ছিল, তিনি সেরাটা উজাড় করে দেন আইপিএলে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে। দেশের জন্য নয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে উঠেও মালিঙ্গা সে সব ভুলতে পারছেন না। প্রাণঢালা আবেগের সিংহলিজ নববর্ষের মধ্যে তিনিই একমাত্র তিক্ত মুখ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement