যে ভঙ্গিটায় একেবারে নিজস্ব সিলমোহর এঁটে দিয়েছেন, পর্দায় সেই দু’হাত ছড়িয়ে গালে টোল ফেলা এক হাসিতেই মাতিয়ে দেন কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী। ক্রিকেট মাঠের সবুজ ঘাসে দাঁড়িয়ে মুঠো করা হাত আকাশে তুলে ধরলেই ‘করব, লড়ব, জিতব’ চিৎকারে গ্যালারির সঙ্গে ফেটে পড়ে গোটা নাইট রাউডার্স দুনিয়া।
কয়েকশো কোটি হৃদয়ের অধিশ্বর তিনি। অথচ রবিবার দিনভর তাঁর নিজের হৃদয়ই কি না বশে রইল না এক মুহূর্ত!
“দু’টো হৃদয় পাশাপাশি ছুটছে। কেকেআর আর আমার। লোকে বলে দু’টো হৃদয় যখন রেসে নামে... দু’জনেই জেতে। তাই চলো, আরও একটু বেশির আশা করা যাক, আরও বড় স্বপ্ন দেখি আমরা। আমার ছেলেরা, তোমাদের ভালবাসি।” টুইট শহরুখ খানের।
তাঁর ছেলেরা তিন বছরে দ্বিতীয় বার আইপিএল ফাইনালে নামার আগের চব্বিশ ঘণ্টা এতটাই নার্ভাস ছিলেন নাইট রাইডার্স মালিক যে, প্রায় বিনিদ্র কাটান সময়টা। “যে ভাবে লাগাতার টুইট করে চলেছি, মনে হচ্ছে এটা নার্ভাসনেস থেকে তৈরি উত্তেজনার লক্ষণ। অঙুলগুলো থামতেই চাইছে না...!!!!” ‘বীরজারা’ মহাকাব্যের ক্রিকেটীয় সংস্করণ শুরু হতে তখনও ঘণ্টা তিনেক বাকি। চিন্নাস্বামীতে ঢোকার আগে টুইটে স্বীকারোক্তিটা সেরে রাখেন ‘বীর’।
ফাইনালে মাঠে থাকবেন বলে আগের দিন রাতভর শুটিং করেছেন ফারহা খানের নতুন ছবির জন্য। শাহরুখের নিজের টুইট অনুযায়ী, টানা পনেরো ঘণ্টারও বেশি। যার মধ্যে বারো ঘণ্টা ধরে জলের মধ্যে অ্যাকশন সিকোয়েন্স ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছে। কিন্তু কাজের ব্যস্ততাও ফাইনাল নিয়ে তাঁর নার্ভাসনেস ভোলাতে পারেনি। যার প্রকাশ ওই মুহুর্মুহু টুইটে। শাহরুখ লেখেন, “কাল বেঙ্গালুরু। আমার বড় হয়ে ওঠার শহর। বাচ্চাদের ওদের দাদু-দিদার বাড়িটা দেখাতে হবে। আর আল্লাহ্ যদি মঞ্জুর করেন, তা হলে আইপিএল কাপ-এ ভরেই চুমুক দেব কফিতে।”
মেয়ে সুহানা আর তার দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বেঙ্গালুরু পৌঁছে ফের টুইট, “বেঙ্গালুরুতে বড় হয়ে ওঠার কত সুখস্মৃতি... শহরের বাইরেটা বদলায়, হৃদয়টা নয়। এখানে পৌঁছে দারুণ লাগছে।” ফাইনাল নিয়ে শাহরুখের প্রস্তুতির লিস্টে এক নম্বরে ছিল পরিবারের নবতম সদস্য, হামাগুড়ি টানা ছোট ছেলে আবরামের জন্য নাম লেখা নাইট জার্সি তৈরি করানো। সেটা হাতে পেয়ে মুম্বই থেকে বেঙ্গালুরু রওনার আগে ছবি-সহ টুইট করেছিলেন, “আমরা মোটামুটি রেডি... সব ধরনের আকার আর সাইজেই। চলো আমার কেকেআর...”।
তবে নাম লেখা জার্সি থাকলেও চিন্নাস্বামীর ফাইনাল দেখতে এ দিন দুই ছেলের একজনও সঙ্গে ছিল না শাহরুখের। যা নিয়ে বলিউডের বাদশা খানিকটা আক্ষেপই করেছেন। মাঠে ঢোকার আগে লেখেন, “হঠাৎ-ই মনে হচ্ছে ওরা সঙ্গে থাকলে ভাল হত। বউ ছোট ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে থেকে গিয়েছে, ওদের মিস করছি। আরিয়ানেরও স্কুল। তবে আমার বাহিনী, আমার ছোট্ট মেয়েরা সঙ্গেই আছে... অবিরাম বকবক করে যাচ্ছে আর হাসছে আমার বাহিনী।”
শাহরুখ যেখানে টুইটারে অক্লান্ত, সেখানে আবার অদ্ভুত রকমের চুপ বীরজারার জারা, প্রীতি জিন্টা। যিনি খেলার আগে কোনও টুইট করেননি। অন্য দিকে, বলিউডে বীরজারার পক্ষ নেওয়াও চলল। বেশির ভাগই অভিনন্দন সমান ভাগ করে দিলেন দু’দজনকেই। নেহা ধুপিয়ার মতো কেউ কেউ লেখেন, “পক্ষ নেওয়ার সময় এসেছে... কী হবে?... সেরা টিমটাই যেন জেতে।”
তবে শাহরুখের পক্ষ নিয়ে একেবারে খুল্লামখুল্লা কেকেআর পন্থী ফারহা খান। যিনি সকালে নিজের তিন সন্তানের কেকেআরের হয়ে প্রার্থনা করার ছবিও টুইট করতে ভোলেননি। “ওদের হৃদয় থেকে ঈশ্বরের কান পর্যন্ত পৌঁছোক প্রার্থনা! আর ভুলো না, আমাদের কিন্তু আবরামকে ট্রফির ভিতর বসাতে হবে!!”