নেপথ্যে ভারতীয় ফুটবলে ক্রমবর্ধমান আর্থিক সঙ্কট। যা এড়াতে কেবল স্পনসরদের দিকে তাকিয়ে থাকা নয়। বার্সেলোনা, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ধাঁচে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা কয়েক কোটি লাল-হলুদ সমর্থককে নিজেদের ফুটবল কর্মযজ্ঞে সামিল করতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল। ভারতীয় ফুটবলে যা অভিনব।
সোমবারই ক্লাবের কর্মসমিতির বৈঠকে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। প্রস্তাবে সিলমোহর পড়লে আসন্ন আই লিগ থেকেই কার্যকরও করে ফেলবে লাল-হলুদ।
কী সেই প্রস্তাব? ক্লাব সদস্য নন, গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা এমন লাল-হলুদ সমর্থকদের এ বার ফ্যান-মেম্বারশিপ দিতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল। কর্তারা হিসেব করে দেখেছেন, সংখ্যাটা তিন থেকে চার কোটি হবে। প্রথম বছরে এক লাখ লাল-হলুদ সমর্থককে ফ্যান-মেম্বার প্রকল্পে সামিল করতে চান তারা। ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদার বললেন, ‘‘বছরের ৩৬৫ দিনই ইউরোপের ধাঁচে সমর্থকদের আবেগ, উৎসাহ আমাদের ফুটবল উন্নয়নের কাজে লাগাতে এই প্রচেষ্টা। সোমবারের সভাতেই বিষয়টা তোলা হবে।’’ ক্লাব সূত্রে খবর, যৎসামান্য অর্থের বিনিময়ে লাল-হলুদ জার্সি ও স্বচিত্র ফ্যান মেম্বারশিপ দেওয়া হবে আগ্রহী সমর্থকদের। যা সংগ্রহে থাকলে ম্যাচের টিকিট ছাড়াও জার্সি, টুপি, ট্র্যাকস্যুট-সহ বিভিন্ন ইস্টবেঙ্গল স্মারক কিনলে বিশেষ ছাড় পাবেন এই ফ্যান-মেম্বাররা। ছাড় মিলবে ক্লাবের কফি শপে। মাসে এক বার লাকি ড্রয়ের মাধ্যমে ফ্যান-মেম্বার ক্লাবের প্রিয় ফুটবলারদের সঙ্গে কফি শপে আড্ডা দেওয়ার সুযোগ পাবেন। কুইজ কন্টেস্ট জয়ীদের নিখরচায় অ্যাওয়ে ম্যাচ দেখাতে নিয়ে যাওয়া সহ একগুচ্ছ পরিকল্পনা রয়েছে। প্রিয় দলের ম্যাচ দেখতে এদের জন্য আলাদা গ্যালারি থাকবে। গোটা কর্মযজ্ঞ পেশাদার ব্যক্তিদের দিয়ে সামলানোর পরিকল্পনা আছে লাল-হলুদ কর্তাদের।
ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে এটা নিয়ে আমরা ভাবছিলাম। সচিবের অনুমতি পাওয়ার পর এগিয়েছি। গোটা বিশ্বের লাল-হলুদ অন্তপ্রাণ সমর্থকরা এগিয়ে এলে ক্লাবের আর্থিক বুনিয়াদ পোক্ত হবে। দেখা যাক কর্মসমিতির সদস্যরা বৈঠকে কী মত দেন।’’ ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্যও বললেন, ‘‘যারা সদস্য হতে পারে না তাদেরকেও আমরা ক্লাবের ফুটবল উন্নয়নে চাই। তাই এই প্রয়াস।’’ আই লিগের আগেই রাজারহাটে আবাসিক অ্যাকাডেমি শুরু হওয়ার কথা ৫ জানুয়ারি।