মঙ্গলবার সকালে আনন্দবাজারের কাছে ‘সাদা পেলে’ বিশেষণ শুনে প্রায় রেগেই গেলেন জিকো। একান্তে কথা বলতে রাজি হচ্ছিলেন না কিংবদন্তি ব্রাজিলীয় ফুটবলার। পরে অবশ্য এফসি গোয়ার মহাতারকা কোচ চুটিয়ে আড্ডা দিলেন।
প্রশ্ন: ‘সাদা পেলে’ শুনলে এত রেগে যান কেন? স্বয়ং পেলে তো আপনাকে এই বিশেষণ দিয়েছেন বহু বার!
জিকো: উফ্, ভারতে পা দেওয়ার থেকে এই এক প্রশ্ন! আমাকে জিকো বলে ডাকতে পারলে ডাকবেন। না হলে কথা বলব না।
প্র: পেলের উপর কি আপনার কোনও গোপন রাগ আছে নাকি?
জিকো: একদমই নয়।
প্র: জানেন কি পেলে কলকাতা আসছেন সামনের রবিবার। দেখা করবেন?
জিকো: না। আমরা তখন নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড ম্যাচের প্রস্তুতি নেব। টিম ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে ভাবার সময় নেই এখন।
প্র: ব্রাজিল টিমের ইতিহাসে আপনি চতুর্থ সর্বোচ্চ (৪৮) গোলদাতা। নেইমার এখনই আপনার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে দেশের হয়ে ৪৬ গোল করে ফেলে।
জিকো: পেলেতে হল না! এ বার কি নেইমার? কী আবার হবে। লিস্টে পাঁচে চলে যাব। এটাই তো ফুটবল।
প্র: আইএসএল শেষ হওয়ার পরেই তো ফিফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। জিকোকে সেই পদে দেখা যাবে কি?
জিকো: কেন নয়? ব্রাজিলে সাফল্যের সঙ্গে ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছি। ফিফা প্রেসি়ডেন্ট নির্বাচিত হলেও পারব।
প্র: ভোটে জেতার ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?
জিকো: চেষ্টা চালাচ্ছি। এখন ভেঙে কিছু বলব না। যা-যা কাগজপত্র যেখানে-যেখানে পাঠানোর সব পাঠিয়েছি। এখনও তো বেশ খানিকটা সময় আছে। দেখা যাক কী হয়!
প্র: নির্বাচনের মাঠে আপনার এক সময়ের মাঠের মহাপ্রতিদ্বন্দ্বী প্লাতিনির হোমওয়ার্ক কিন্তু অনেকটাই সারা। যদিও অনেকে তাঁকে ব্লাটার-দর্শনে বিশ্বাসী বলছেন।
জিকো: একটাই কথা বলব। মিশেল উয়েফা দারুণ চালাচ্ছে। উদিনেসে খেলার সময় থেকেই ওর সঙ্গে বন্ধুত্ব আমার।
প্র: কী বলছেন, বন্ধুত্ব?
জিকো: কেন, অন্য কিছু নাকি? কলকাতার মিডিয়া আবার বিতর্ক পছন্দ করে!
প্র: কলকাতা সম্পর্কে আপনার ধারণা কী?
জিকো: দারুণ শহর। ফুটবলের অনেক সমর্থক রয়েছে। আর একটা ক্লাব রয়েছে... বেঙ্গল। গত বছর গিয়েছিলাম ওই ক্লাবে।
প্র: বেঙ্গল নয়। ইস্টবেঙ্গল।
জিকো: সরি। ইস্টবেঙ্গল। ইয়েস। দারুণ উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছিল ওরা। ভারতীয় ক্লাব ফুটবল সম্পর্কে আমার বেশি ধারণা নেই। তবে ওই ক্লাবটা দেখে মনে হয়েছে ওরা ফুটবল নিয়ে পজিটিভ কিছু করতে চায়।
প্র: কলকাতায় মোহনবাগান নামেও একটা ক্লাব আছে। একশো পঁচিশ বছরের। পেলে তাদের বিরুদ্ধে খেলে গিয়েছেন কলকাতায়। আপনার গোয়া টিমের বিক্রমজিৎ আসলে ওই ক্লাবের ফুটবলার।
জিকো: সত্যিই জানতাম না। ওরা আমাকে ডাকেনি। তাই কিছু জানি না। ওর কাছ থেকে জানার চেষ্টা করব ওই ক্লাব সম্পর্কে।
প্র: ব্রাজিল এ ভাবে মুখ থুবড়ে পড়ল কেন? বিশ্বকাপে সাত গোল হজম। কোপাতেও ব্যর্থ।
জিকো: সিস্টেম আর অ্যাটিটিউডটা পাল্টাতেই হবে।
প্র: মানে দুঙ্গা চলবে না বলতে চাইছেন? গুয়ার্দিওলা তো ব্রাজিলের দায়িত্ব নিতে মুখিয়েছিলেন!
জিকো: আমি কিন্তু দুঙ্গা নিয়ে কোনও মন্তব্য করিনি। আপনি করলেন। দুঙ্গাকে সময় দিতে হবে। আর গুয়ার্দিওলা নয়, ব্রাজিল ফুটবলে একটা তেলে সান্তানা, তিন-চারটে সক্রেটিস দরকার।