যশস্বী জয়সওয়াল। ছবি: পিটিআই
দক্ষিণ আফ্রিকার বাউন্সি পিচে তাঁর সাফল্যের রহস্য ফাঁস করলেন ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্য যশস্বী জয়সওয়াল। জানিয়ে দিলেন, বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে অ্যাস্ট্রোটার্ফে অনুশীলন করার ফলেই ডেল স্টেনদের দেশে গিয়ে রান পেয়েছেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় হয়ে যাওয়া যুব বিশ্বকাপে ছ’ইনিংসে চারশো রান এসেছে যশস্বীর ব্যাটে। প্রতিযোগিতার সেরা ক্রিকেটারও হয়েছেন তিনি। সেমিফাইনালে সেঞ্চুরি, ফাইনালে ৮৮ রান করেছিলেন এই ভারতীয় ব্যাটসম্যান। দেশে ফিরে শনিবার তিনি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ‘‘জ্বালা স্যর আমাকে প্রতিযোগিতা শুরুর আগে বলেছিলেন, ‘তোমাকে বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার হতে হবে।’ আমরা বাউন্সি পিচের কথা মাথায় রেখে প্রচুর অনুশীলন করেছিলাম।’’
সেই অনুশীলনে যে অ্যাস্ট্রোটার্ফের পিচ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল, তা জানিয়েছেন যশস্বী। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা শর্ট বলের বিরুদ্ধে অনেক অনুশীলন করেছিলাম। আমি হয় শর্ট বল খেলছিলাম না হয় ছাড়ছিলাম। অ্যাস্ট্রোটার্ফের পিচে বেশ বাউন্স থাকে। অনেকটা দক্ষিণ আফ্রিকার পিচের মতো। তাই স্যরের সঙ্গে আমি ওই পিচে প্রচুর অনুশীলন করেছিলাম। সেই অনুশীলনের ফল পেয়েছি।’’
উত্তরপ্রদেশ থেকে মুম্বইয়ে চলে আসার পরে জ্বালা সিংহের কোচিংয়েই নিজেকে তৈরি করেন যশস্বী। যুব বিশ্বকাপে তাঁর ব্যাটিং প্রশংসা কুড়িয়েছে প্রাক্তন ক্রিকেটারদেরও। বিশ্বকাপে খেলে তিনি যে চাপ সামলাতেও শিখেছেন, সে কথা বলেছেন যশস্বী। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতাটা দারুণ। অন্য একটা দেশে গিয়ে খেলা, যেখানকার উইকেটের চরিত্র আমাদের থেকে আলাদা। খেলতে খেলতে আমি অনেক কিছু শিখেছি। শিখেছি, কী ভাবে চাপ সামলে ব্যাট করতে হয়। কারণ বেশিরভাগ ম্যাচেই চাপের মধ্যে ব্যাট করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে ব্যাটিংটা খুব উপভোগ করেছি।’’
বিশ্বকাপে চারটে হাফসেঞ্চুরি এবং একটা সেঞ্চুরি এসেছে যশস্বীর ব্যাট থেকে। তরুণ এই ব্যাটসম্যান মনে করেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরিটা তাঁর জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ইনিংস। ওই ম্যাচে ভারতের দুই ওপেনার— যশস্বী এবং দিব্যাংশ সাক্সেনা দলকে জিতিয়ে দিয়েছিলেন। বিশ্বকাপে এই দুই ওপেনার ভাল শুরু করেছেন অনেক ম্যাচেই। যশস্বী বলেছেন, ‘‘যখনই আমি তাড়াহুড়ো করতাম বা ধৈর্য হারিয়ে বড় শট খেলতে যেতাম, তখনই নিজেদের মধ্যে কথা বলে নিতাম। ওই সময় দিব্যাংশের পরামর্শ অনেক কাজে দিয়েছে।’’ কী বলতেন দিব্যাংশ? যশস্বীর জবাব, ‘‘দিব্যাংশ আমাকে বলত, ‘খেলে যাও। ম্যাচে অনেক সময় বাকি আছে। ধৈর্য হারিয়ো না। আমরা বড় রানই করব।’ ওর কথা শুনে আমার লাভই হয়েছে।’’
বাইশ গজের বাইরেও কম লড়াই করতে হয়নি যশস্বীকে। ক্লাব তাঁবুতে শুয়ে থাকতে হয়েছে। ফুচকা বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে হয়েছে। কিন্তু লড়াই থেকে সরে আসেননি। তাঁর উঠে আসার জ্বালা স্যর ছাড়াও যশস্বী কৃতিত্ব দিচ্ছেন জুনিয়র নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান আশিস কপূরকে। তিিনই তাঁকে ইনিংস ওপেন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।