প্রশ্ন: নতুন দায়িত্বে আপনাকে স্বাগত। আবার বিশ্বকাপের জন্য সমর্থকরা বল-ভরসা পাবে।
শাস্ত্রী: ধন্যবাদ। তবে বিশ্বকাপ পর্যন্ত ব্যাপারটা বুঝলাম না।
প্র: এখন দায়িত্ব নিলে তো বিশ্বকাপ অবধি থাকবেনই।
শাস্ত্রী: একেবারেই নয়। আমি এটাও নিতে রাজি হচ্ছিলাম না।
প্র: তার পর কি শ্রীনি অনুরোধ করায় রাজি হলেন?
শাস্ত্রী: আমাকে ফোন করেছিলেন বোর্ড সেক্রেটারি। উনি বললেন, প্লিজ না কোরো না। কথা শুনে মনে হল বোর্ডের অনেকের সঙ্গে আগে ওঁর ফোনে কথা হয়েছে। যাক, ছোট সিরিজ বলে রাজি হলাম।
প্র: ধোনির সঙ্গে কথা বলেননি?
শাস্ত্রী: এই তো হল। ধোনি আর ফ্লেচারের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা মিটিং করলাম।
প্র: কিন্তু নানান চ্যানেলে তো দেখাতে শুরু করেছে ফ্লেচারের বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। ওঁর সঙ্গে মিটিং করে কী লাভ?
শাস্ত্রী: আমি এ রকম কোনও খবর জানি না। আমি তো জানি ফ্লেচার দায়িত্বে থাকছেন।
প্র: কিন্তু আপনাকে তো আনা হয়েছে ফ্লেচারের মাথার ওপর।
শাস্ত্রী: মাথার ওপর মানে কী? আমার কাজটা হল সব কিছু দেখে দেওয়া। নজরদারি করা। ফ্লেচার ইজ ভেরি মাচ দেয়ার।
প্র: আপনি বিশ্বকাপ অবধি থেকে গেলে তো ফ্লেচারের দরকারই নেই।
শাস্ত্রী: আমার পক্ষে সেটা সম্ভব নয়। আমার পারিবারিক ব্যস্ততা আছে। এই দায়িত্বটা না চাপলে ওয়ান ডে সিরিজে আমার দেশে থাকার কথা ছিল।
প্র: কিন্তু ডালমিয়ার আমলে যখন ভারতীয় কোচ হওয়ার জন্য আপনাকে অফার দেওয়া হয়েছিল তখন তো আপনি রাজি ছিলেন। নিজস্ব কিছু শর্তও দিয়েছিলেন যা বোর্ড না মানায় আপনার কোচ হওয়া হয়নি। এখন তো যা পরিস্থিতি, আপনি যা বলবেন বোর্ড তাই শুনবে।
শাস্ত্রী: সেটা অন্য সময় ছিল। এখন পরিস্থিতি অন্য। আমার মেয়ে বড় হচ্ছে। ওকে সময় দিতে হবে। এই সিরিজের মধ্যেই আমি তিন বার মুম্বই আসা-যাওয়া করেছি। টানা লম্বা সময় টিমের সঙ্গে পড়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
প্র: কিন্তু আপনার যে কলাম আমাদের কাগজে বেরোয় তারা তো নোট পাঠিয়েছে, এখন আর লেখা আসবে না। তা থেকে তো আরও ধারণা হওয়া সম্ভব আপনার চুক্তিটা দীর্ঘমেয়াদি হবে।
শাস্ত্রী: না। ওয়ান ডে সিরিজ লিখতে পারব না। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে আবার কমেন্ট্রি করব, লিখব।
প্র: টিমের সঙ্গে আপনি ঢুকে পড়ছেন কবে?
শাস্ত্রী: এই শনিবার। শনিবার দিন বাঙ্গার আর ভরত অরুণেরও পৌঁছে যাওয়ার কথা।
প্র: এই যে বোলিং আর ফিল্ডিং কোচকে ছাঁটাই করে দেওয়া হল, আপনার কী মত?
শাস্ত্রী: ভালই হল। বাঙ্গার আর অরুণ দু’জনে ‘এ’ টিম বা আইপিএলের সঙ্গে টাচে থেকেছে। ইয়ং প্লেয়াররা কোথায় কেমন খেলছে, ওরা জানে।
প্র: টেস্ট সিরিজে আমরা এমন ধ্যাড়্যালাম কেন? ডিরেক্টর হিসেবে আপনার প্রথম কাজটাই বা কী হবে?
শাস্ত্রী: আমার প্রথম কাজ হবে ওদের মানসিকতাটাকে মেরামত করা। ঠিক এই মুহূর্তে ছেলেদের কনফিডেন্সটা খুব কম রয়েছে।
প্র: ২০০৭-এ গ্রেগ চ্যাপেল-পরবর্তী টালমাটাল সময়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দায়িত্ব নেওয়া। আর এ বারের চাপ। কোনটা বেশি ঝকমারি?
শাস্ত্রী: সে বারে টিমে অনেক অভিজ্ঞ প্লেয়ার ছিল। এ বার তরুণদের সংখ্যা বেশি। দেখি কী হয়।
প্র: কিন্তু মাত্র দশ দিনে কতটা কী করতে পারবেন?
শাস্ত্রী: বাংলাদেশেও মোটামুটি এ রকমই সময় পেয়েছিলাম। দেখি না চেষ্টা করে। আমার তো কাজ হল ট্র্যাকের বাইরে বেরিয়ে যাওয়া ছন্দহীন টিমকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনা। একটা অটোপাইলট মোডে যদি টিমকে নিয়ে আসা যায়, তা হলে তো আপনাই ওটা কাজ করবে।
প্র: কনফিডেন্স ছাড়া এই টিমের আর কী ঠিক করতে হবে?
শাস্ত্রী: ওয়ার্ক এথিক আরও ভাল করতে হবে। আমি এই জায়গাটায় মন দেব।
প্র: ওয়ান ডে-তে তো আমাদের টিম ভাল।
শাস্ত্রী: ভাল ঠিকই। কিন্তু ইংল্যান্ড রক্তের স্বাদ পেয়েছে। আমার কাছে যা খবর, ওরা ওয়ান ডে-তেও ঘাস রাখবে। আর ঘাস রাখলে ওদের অ্যাটাক কিন্তু খুব ভাল।
প্র: মনে করা যাক, ওয়ান ডে-তে টিম ভাল খেলল। তার পর শ্রীনি বললেন, রবি তুমি থেকে যাও। সামনে বিশ্বকাপ আছে। তখন কী করবেন?
শাস্ত্রী: বিশ্বকাপ অনেক দূরে। সেই ফেব্রুয়ারি মাসে। বললাম তো টানা পারব না।