সেই ১৮৩-র আবেগকে স্কিল দিয়ে দুমড়ে দিল ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়া

কার সঙ্গে আজ সবার আগে কথা বলার চেষ্টা করা উচিত? মিডিয়ার অনেককে ছুটতে দেখলাম মাইকেল ক্লার্ক ছেড়ে ধূসর স্যুটের পিছনে। কিন্তু কে বেশি উপযুক্ত আজ? ধূসর স্যুটের তিনি কপিল দেব? না কি এক হাত দূরে কালো কোটের ক্লাইভ লয়েড? না, ওপরের বক্সে বসা ভিভ রিচার্ডস?

Advertisement

গৌতম ভট্টাচার্য

মেলবোর্ন শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৫ ০৩:০৬
Share:

কার সঙ্গে আজ সবার আগে কথা বলার চেষ্টা করা উচিত? মিডিয়ার অনেককে ছুটতে দেখলাম মাইকেল ক্লার্ক ছেড়ে ধূসর স্যুটের পিছনে।

Advertisement

কিন্তু কে বেশি উপযুক্ত আজ? ধূসর স্যুটের তিনি কপিল দেব? না কি এক হাত দূরে কালো কোটের ক্লাইভ লয়েড? না, ওপরের বক্সে বসা ভিভ রিচার্ডস?

নিউজিল্যান্ড কী ভাবে ১৮৩ পুঁজি নিয়েও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে পারত, কপিলকে তো প্রশ্ন করাই যায়। তার চেয়েও প্রাসঙ্গিক বোধহয় লয়েড-ভিভের কাছে একটা জিজ্ঞাসা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এ বারের পারফরম্যান্সে বেশি যন্ত্রণা পেলেন, না কি আজ অজিদের রান তাড়া করা দেখে?

Advertisement

বত্রিশ বছর আগে আপনারাও তো লর্ডসে ঘণ্টাদেড়েক আগে ম্যাচ শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন। এদের ভঙ্গিটা দেখে কি নিজেদের জন্য অনুশোচনা হল?

মাইকেল ক্লার্কের টিম সত্যিই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বিশ্বের সর্বকালের সেরা ক্রিকেট দেশ কেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ নয়! ইংল্যান্ড নয়! দক্ষিণ আফ্রিকা নয়! অস্ট্রেলিয়াই!

অস্ট্রেলিয়াই যেন বিশ্ব ফুটবলের জার্মানি! যারা আবেগ নয়, স্কিল আর ফিটনেসে বিশ্বাস করে। মাইকেল ক্লার্ককে কাল যখন জিজ্ঞেস করা হচ্ছিল যে, তাঁর অবসরের সিদ্ধান্তের নাটকীয়তা অস্ট্রেলিয়ার ফাইনাল ফোকাসকে ঘেঁটে দেবে কি না? তখন ক্লার্ক বলেছিলেন, মাঠে স্কিল দেখাব, আবেগ কেন! কথাটার মর্যাদা রেখে আজ জাস্ট উড়িয়ে দিলেন নিউজিল্যান্ডকে।

বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে লয়েড-ভিভরা আজকের বিদায়ী বিশ্বজয়ী অধিনায়কের তুলনায় হয়তো বেশি জায়গাই পাবেন। কিন্তু ক্লার্কের টিম বোধহয় বত্রিশ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের টাইম মেশিনে ফিরিয়ে এনে শিক্ষা দিল, আপনাদেরও ১৮৩-টা এই ভঙ্গিতে তাড়া করা উচিত ছিল। মারতেন আবার ধরতেনও।

বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে রেকর্ড সংখ্যক দর্শক রোববারই এমসিজিতে হয়েছিল। তিরানব্বই হাজারেরও বেশি। আর তাদের সামনে বিদায়ী ক্লার্ক যেন সম্মোহনী চেহারা নিয়ে দেখা দিলেন! যখন ব্যাট করতে নামছেন সবাই সসম্মান দাঁড়িয়ে। যখন ম্যাচ জেতানো ৭৪ করে ফিরছেন, তখনও গোটা মাঠ প্রচণ্ড হাততালির মধ্যে বিদায়ী গার্ড অব অনার দিল। একশো ওভারের ফাইনাল চরম একপেশে ভাবে সাড়ে ষোলো ওভার আগে শেষ করেও ক্লার্ক বিশ্রাম নেননি। বলতে উঠে প্রথমেই বিজিত নিউজিল্যান্ডের প্রশংসা করলেন। নিজের টিম আর সাপোর্ট স্টাফকে ধন্যবাদ দিলেন। তার পর বললেন, “বন্ধু ফিল হিউজের কথা আজকের দিনে বারবার মনে পড়ছে।” কানায় কানায় ভর্তি এমসিজিতে যেন মুহূর্তে আবেগের বড় বড় হিমশৈল নেমে এল। শেন ওয়ার্ন বাদে যাবতীয় প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় তারকা তাঁর বিপক্ষে। বিপক্ষে গোটা অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়া। এমনকী তাঁর মালিকপক্ষ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। সাউদি-বোল্টের সঙ্গে এ হেন ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে জীবনের শেষ ওয়ান ডে ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছিলেন ক্লার্ক। অথচ এক বারের জন্যও মনে হয়নি তাঁর ওপর কোনও চাপ রয়েছে বলে। রাজসিক হল তাঁর চলে যাওয়া! স্টিভ ওয়র ক্রিকেটীয় শেষযাত্রায় আরও রং ছিল। আরও নাটক ছিল। আরও ঘটনা ছিল। কিন্তু ক্লার্কেরটা আরও সম্ভ্রান্ত। আরও প্রভাবশালী সাফল্যের মধ্যে যাওয়া!

আইসিসি প্রেসিডেন্ট মুস্তাফা কামাল যেমন বিশ্বকাপ হাতে না তুলে দিতে পারার ক্ষোভে পুরস্কার বিতরণের সময়ই গ্যালারিতে নীচে নামতে শুরু করে দিয়েছিলেন, তেমনি মার্টিন ক্রো-ও কি আগে বেরিয়ে গেলেন? ডাক্তারি পরামর্শ উপেক্ষা করে তিনি অকল্যান্ড থেকে উড়ে এসেছিলেন। সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে অনেক আড্ডাও মেরে গেলেন। হয়তো বা শেষ বারের মতোই। কিন্তু যা দেখতে চেয়েছিলেন তিনি বা হ্যাডলি, সেটা ঘটল না। অস্ট্রেলিয়া সাত উইকেটে জিতেছে এটা রেকর্ডে মিথ্যে লেখা হল। আসল স্কোর হল অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হল ব্রেন্ডন ম্যাকালামের টিমকে এটা বলতে বলতে যে, বাপ বাপ হয়! ছেলে ছেলেই হয়!

সকাল থেকেই দিনটা অস্ট্রেলিয়াময়। এমসিজিতে ঢুকতে গিয়ে দেখি অষ্টমী পুজোর ভিড়। শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল করে লোক ঢুকছে। এগুলো ফ্যান জোন থেকে আইসিসি নিয়ন্ত্রিত মিছিল। স্টেডিয়ামের বাইরে ফক্স স্পোর্টস আবার আজ কভারেজে অভিনবত্ব আনার জন্য লিলি মূর্তির বাইরে তাদের অ্যাঙ্করদের বসিয়ে শো করল। লারা, পিটারসেন, মার্ক ওয়রা জনতার এক হাতের মধ্যে থেকে উন্মাদনা আরও বাড়িয়ে দু’ঘণ্টার ক্রিকেট শো করলেন। রণ-পা পরা একটি লোক দেখা গেল অস্ট্রেলিয়ান জার্সিতে ঘুরছে। জনতার মধ্যেই একটা দল গান গাইছে, ‘কাম অন অজি, কাম অন’। দুই-তৃতীয়াংশের পরনে হলুদ জার্সি। খুব অবাকই লাগল এত সমর্থক আগের অস্ট্রেলিয়া ম্যাচগুলোয় কোথায় ছিল? সিডনিতেই বা সে দিন সংখ্যালঘিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিল কী করে?

পরে মনে হল ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়া যেন মার্চ মাসের শেষ রোববারটা অ্যাকাউন্ট ক্লোজ করার দিন হিসেবে রেখে দিয়েছিল। যে দিন সে সব হিসেব চুকিয়ে দেবে। নিউজিল্যান্ড গিয়ে এক উইকেটে হেরে গিয়েছিল। সেটার কর মেটাবে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং, কিপিং এবং অধিনায়কত্বে সব রেটিং উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের এক নম্বর দেখাবে। এমনকী এই যে হাওয়া বিশ্বকাপ জুড়ে চলছে যে, সমর্থক মানেই ভারতীয়। সেই ধারণাকে ইয়ারায় ফেলে দেবে। ফাইনালের দিন অবিশ্বাস্য জনসমর্থন দেখাল অস্ট্রেলিয়া। এমসিজি আকারে ইডেনের চেয়েও বড়। সেই এত বড় মাঠ জুড়ে শুধু হলুদের ফুটকি। যেন ব্রাজিল খেলছে! আসলে ব্রাজিলের অবয়বে কঠোর সংঘবদ্ধ এবং অসমসাহসী জার্মানি!

গোটা ম্যাচটা যদি কারও নতুন করে দেখতে ইচ্ছে না করে শুধু প্রথম ওভারটা ইউ টিউবে দেখে নিলেই যথেষ্ট। বোলার ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট মিচেল স্টার্ক। যাঁর প্রতিটা ডেলিভারি ১৪৭-১৪৯ কিমির মধ্যে আছড়ে পড়ল। প্রথম ওভারেই মহানাটক। গাপ্টিল কোনও রকমে এই প্রান্তে পৌঁছেছিলেন। এ বার সামনে ম্যাকালাম। সবে ওভারের তৃতীয় বল হচ্ছে। এ বার তাঁকে নিয়ে স্টার্ক যা করলেন, একাশি সালের বার্বেডোজ টেস্টে হোল্ডিংয়ের করা বয়কটকে একটা ওভার মনে করিয়ে দিল। প্রথম পাঁচটা ডেলিভারি বয়কট ব্যাটে ছোঁয়াতে পারেননি। শেষ বলটা তাঁর অফস্টাম্প হেলিয়ে দেয়। এখানে ম্যাকালাম তিনটে বল পেয়েছিলেন। দু’টো এত জোরে গেল যে ছোঁয়াতে পারেননি। তিন নম্বরটা ইনসুইং ইয়র্কার ছিল, তির বেগে স্টাম্প উপড়ে দেয়। ওয়াসিম আক্রমের বিরানব্বই ফাইনালের সেই অমর ডেলিভারির পাশে এটা পরম স্বচ্ছন্দে বসতে পারে। দু’টো ডেলিভারিই প্যাভিলিয়ন প্রান্ত থেকে। কিন্তু স্টার্কেরটা তুলনায় রোমহর্ষক এবং আরও বেশি ম্যাচের মোড় ঘোরানো! একে তো প্রথম ওভার, তাও ম্যাকালাম। যাঁর এই টুর্নামেন্টে স্ট্রাইক রেট ১৯১!

তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পর দ্রুত আলোচনা শুরু হয়ে যায়, ম্যাচটা নিরানব্বই বিশ্বকাপ ফাইনালের রিপ্লে হবে কি না? লর্ডসে সে দিন আক্রমের পাকিস্তান টস জিতে ব্যাট করে ১৩২ রানে বান্ডিল হয়ে যায়। আসলে অস্ট্রেলিয়া এমনই টিম যে তাদের সামনে আগে ব্যাট করলে এমসিজির নিউজিল্যান্ড। পরে ব্যাট করলে সিডনির ভারত। দেখা গেল জন বুকানন এবিপির পূর্বাভাসে একেবারে অভ্রান্ত ছিলেন যে, অ্যাডিলেডের ড্রপ ইন উইকেট আর সাইড বাউন্ডারিতেই একমাত্র অস্ট্রেলিয়াকে পেড়ে ফেলা সম্ভব। ওটা পেরিয়ে গেলে আর সিডনি-মেলবোর্নে ওদের রোখা যাবে না। ঠিক তাই হল। একমাত্র পাকিস্তান ম্যাচে ওয়াহাব রিয়াজের স্পেল আর রহমত আলির ক্যাচ ফেলার সময়টুকু ক্লার্কের টিমকে সমকক্ষ মনে হয়েছে। বাকি নক আউটে তাদের যা দাপট, দর্শকদের এ বার থেকে দাবি করা উচিত অস্ট্রেলিয়া খেললে টিকিটের দাম কম রাখতে। কারণ ক্রিকেট এমন একপেশে হয়ে পড়ে যে রোববারের মতো বিনোদনের মাত্রা কমে যায়। আর দাবি করা উচিত একটা তদন্ত কমিটির যে, কোন বিজ্ঞানে অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আজও জেতেনি?

স্টার্ক আর জনসন সকালে যেমন দেড়শো কিলোমিটারের আশেপাশে আগুন ঝরাচ্ছিলেন তাতে তাঁদের মনে হচ্ছিল বাঁ হাতি লিলি-টমসন! নিউজিল্যান্ড খেলাটা ধরল ইলিয়ট আর টেলরের সেঞ্চুরি পার্টনারশিপের মাধ্যমে। দ্রুত গুঞ্জন ছড়াচ্ছে মাঠে— নিউজিল্যান্ড ২৭০ তুলে দিলে ম্যাচ আছে। কারণ সেকেন্ড পাওয়ার প্লে-র শুরুতে তারা ১৫৩-৩। ম্যাক্সওয়েল ছাড়া কোনও স্পিনার নেই। কাজেই বাকি ১২০ না ওঠার কারণ নেই।

এ ক্ষেত্রে আছে কারণ, বিপক্ষের নাম অস্ট্রেলিয়া। জেমস ফকনার তাদের যেই খেলায় ফেরালেন। বাকিরা আবার হুড়মুড়িয়ে চেপে বসলেন ব্ল্যাক ক্যাপসের ওপরে। টিম সাউদি আর ট্রেন্ট বোল্ট তো গোটা বিশ্বকাপ ঝলমল করেছেন। কিন্তু তাঁদের কীর্তি মূলত সিমিং পিচে। এখানে সাধারণ ওয়ান ডে উইকেটে যে লুকনো গতি আজ ব্যবহার করে গেল অস্ট্রেলিয়া, তার সঙ্গে পারবেন কী করে তাঁরা? বিশেষ করে যখন ব্যাটসম্যানরা এত কম রান হাতে দিয়েছে! ফিঞ্চ দ্রুত ফিরে গেলে কী হবে, স্টিভ স্মিথকে আউট করবে কে! তিনি তো অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের নতুন রিকি পন্টিং হয়ে দেখা দিয়েছেন। কেউ নড়াতেই পারছে না। ‘পন্টিং’ আর ওয়ার্নার ম্যাচটাকে নিয়মরক্ষার ফাইনালে নিয়ে গেলেন। তার পর ক্লার্ক এসে আরওই বিরক্তিকর করে দিলেন। এক এক সময় মনে হচ্ছিল, ফাইনালে একটা দেশই খেলছে।

বড় ম্যাচে এমন ফুঁসে উঠে খেলল অস্ট্রেলিয়া যে প্রত্যেকে অদ্ভুত ভাবে রূপান্তরিত। ব্র্যাড হাডিন ভারতের দিন ধবনকে ছেড়েছিলেন। আজ বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে এমন একটা বাই চার বাঁচালেন যা অস্ট্রেলিয়ার এক নম্বর জিমন্যাস্টকেও কমপ্লেক্স দেবে। আর পাওয়ার প্লেতে দারুণ ক্যাচ ধরলেন সামনে ঝাঁপিয়ে। হলুদ জার্সির এমনই দাপট যে ওয়ান ডে-তে তাদের সেরা স্ট্রাইক রেট-সম্পন্ন ম্যাক্সওয়েল সেমিফাইনাল-ফাইনালে কিছু না করাতেও তারা সেই হাসতে হাসতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল। এই নিয়ে পাঁচ বার বিশ্বকাপ জলিমন্ট স্ট্রিটে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার অফিসে ঢুকল বললে ঠিক বোঝা যায় না। বলা উচিত, গত পাঁচটা বিশ্বকাপে চার বার ঢুকল! তবেই তো বিশ্ব ক্রিকেটে অস্ট্রেলীয় মহিমা বোধগম্য হয়!

ম্যাচের এক ঘণ্টা পরেও মেলবোর্নের রাজপথ থেকে বোঝার কোনও উপায় ছিল না সংগঠক দেশ বিশ্বকাপ জিতেছে। অথচ ভারত দু’হাজার এগারোর বিশ্বকাপ জেতার পর মেলবোর্নের রাস্তায় রাস্তায় ভারতীয় সমর্থকরা নেমে পড়েছিলেন। কোনও কোনও জায়গায় রাস্তা বন্ধ করে নাচগান হয়েছিল। আজ সে সব কিছু দেখা গেল না। ভাল জয় ঠিক আছে। কিন্তু কাল সকালে অফিস আছে। আবার একটা সপ্তাহের শুরু।

খুব কৌতূহল হচ্ছে ম্যাচ চলাকালীন সচিন তেন্ডুলকরই বা কী ভাবছিলেন? পুরস্কার বিতরণে যেমন শ্রীনিকে এমসিজি দর্শক প্রবল মাঠভর্তি টিটকিরি দিল। ততটাই প্রাণঢালা সংবর্ধনা পেলেন সচিন। দেখা গেল গ্রেগ চ্যাপেলের বিরুদ্ধে তাঁর বইয়ে লেখা অস্ট্রেলীয় মহাদেশে জনপ্রিয়তায় কোনও গ্রহণ আনতে পারেনি। বরং গ্রেগই তো যেন বিশ্বকাপে পালিয়ে-পালিয়ে বেড়ালেন। কিন্তু গ্রেগ-যুদ্ধে যতই জিতুন, সচিনেরও তো আজ যন্ত্রণায় আক্রান্ত থাকা উচিত। তাঁরও তো নতুন করে উপলব্ধির দিন যে আমি যত বড় মহাতারকাই হই না কেন, যতক্ষণ না সবাই মিলে এগোতে পারছি, এমন একটা টিমের বিরুদ্ধে আমার ট্যালেন্টও অসহায়!

ক্লার্কের এই অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর মতো সাম্প্রতিক বিশ্বকাপে একটাই টিম খুঁজে পাচ্ছি। পন্টিংয়ের দু’হাজার সাতের অস্ট্রেলিয়া!

লিখতে ভুলে গেলাম, একমাত্র যন্ত্রণাকাতর কাদের থাকা উচিত নয়, তাদের কথা। সম্ভবত ধোনির ভারত! অস্ট্রেলিয়া কী বস্তু রোববার প্রমাণ হয়ে তাদের জন্য ভালই হল। অন্ধ ভারতীয় সমর্থক আর ওই হাইপ করতে চাওয়া নিউজ চ্যানেলগুলো নিশ্চয়ই বুঝল সিডনির হারটা কেন জাতীয় লজ্জা ছিল না!

সংক্ষিপ্ত স্কোর

নিউজিল্যান্ড ১৮৩ (ইলিয়ট ৮৩, টেলর ৪০, জনসন ৩-৩০, ফকনার ৩-৩৬)

অস্ট্রেলিয়া ১৮৬-৩ (ক্লার্ক ৭৪, স্মিথ ৫৬ ন.আ, হেনরি ২-৪৬, বোল্ট ১-৪০)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement