‘এই বেলজিয়াম অনেক দূর যাবে, বোঝালেন লুকাকুরা’

আইসল্যান্ড, সুইৎজারল্যান্ড, মেক্সিকোর পর পানামা সোমবার বোঝাল ফিফার তালিকার নম্বর একটা সংখ্যা মাত্র। মাঠে নামলে সমানে সমানে যুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে সব দলই। সেখানে কারও সঙ্গে কারও ফারাক নেই।

Advertisement

শিশির ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৮ ০৪:২৯
Share:

দুরন্ত: বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে পানামার বিরুদ্ধে নিজের দ্বিতীয় গোল করতে চলেছেন বেলজিয়ামের জয়ের নায়ক লুকাকু। সোচিতে। ছবি: গেটি ইমেজেস

বেলজিয়াম ৩ : পানামা ০

Advertisement

বেলজিয়ামকে বলা হচ্ছে রাশিয়া বিশ্বকাপের কালো ঘোড়া।

কেন বলা হচ্ছে সেটা গ্রুপ লিগের প্রথম ম্যাচেই বুঝিয়ে দিল ‘রেড ডেভিলস’। জার্মানি, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলের খেলা দেখে হতাশ হওয়ার পর এ যেন এক ঝলক মুক্ত বাতাস। উদ্বোধনী ম্যাচে রাশিয়ার পাঁচ গোলের চমকপ্রদ জয়ের পরে কোনও দেশকে এত মসৃণভাবে জিততে দেখিনি। রোমেলু লুকাকুর জোড়া গোলের জন্য শুধু নয়, মাটিতে বল পড়ার আগে দ্রিস মের্তেন্সের ভলিতে করা গোলটার সৌন্দর্যের জন্যও নয়, রবের্তো মার্টিনেসের দলকে বিরতির পর দেখাল যেন সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো সাবলীল। কেউ বাধা দিলেই যেন দুমড়ে মুচড়ে দেবে। আক্রমণেও নানা বৈচিত্র্য ছিল কেভিন দ্য ব্রুইনদের খেলায়। কখনও উইং ধরে, কখনও ডাউন দ্য মিডল দিয়ে এডেন অ্যাজাররা তুলে আনছিলেন আক্রমণ। যা দেখে মুগ্ধ হতেই হয়। লুকাকুরা আরও কৃতিত্ব পাবেন বিরতি পর্যন্ত সাত-সাতটা কর্নার, তিনটে নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পরও হত্যোদম না হওয়ার জন্য। চাপ মুক্ত থাকার জন্য। এখানেই লুকাকুদের দেখাল আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, জার্মানির থেকে আলাদা।

Advertisement

এমনিতে চার দিন ধরে দেখছি রাশিয়া বিশ্বকাপ যেন ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের পার্থক্যকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে! সেটা এ দিনও প্রমাণিত।

আইসল্যান্ড, সুইৎজারল্যান্ড, মেক্সিকোর পর পানামা সোমবার বোঝাল ফিফার তালিকার নম্বর একটা সংখ্যা মাত্র। মাঠে নামলে সমানে সমানে যুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে সব দলই। সেখানে কারও সঙ্গে কারও ফারাক নেই।

এ বারই প্রথম বিশ্বকাপে খেলছে পানামা। তাদের সমর্থকদের তাই দেখলাম বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে বিরতি পর্যন্ত দল গোলশূন্য অবস্থায় রয়েছে সেটা দেখেই গ্যালারিতে নাচছেন, গাইছেন, আনন্দে উদ্বেলিত হচ্ছেন। হবে নাই বা কেন? সোনালি প্রজন্ম বলা হচ্ছে এ বারের বেলজিয়ামকে। এডেন অ্যাজার, কেভিন দ্য ব্রুইন থেকে গোলকিপার থিবো কুর্তোয়া— তারকা ফুটবলারের ছড়াছড়ি। ফিফার তালিকায় তিন নম্বরে থাকা সেই দলকে গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হল বিরতি পর্যন্ত। মনে রাখতে হবে পানামা দলটার ফিফা নম্বর ৫৫। অকুতোভয় হয়ে তাঁরা সামাল দিল লুকাকুদের দৌরাত্ম। প্রথমার্ধে শুধু পানামা গোলকিপার জেইমে পেনেডু একাই বাঁচালেন দুটো নিশ্চিত গোল। অ্যাজারের শট যেভাবে পানামা গোলকিপার রুখলেন তার জন্য একটা শব্দই ব্যবহার করা যেতে পারে—অসাধারণ। পুরো দলটার মধ্যেই একটা অকুতোভয় ব্যাপার কাজ করল। তিন গোল হয়ে যাওয়ার পরও রক্ষণ জমাট না করে পানামা পাল্টা গোলের চেষ্টা করে গেল। হারানোর কিছু নেই, এই মনোভাবটা মুরিলো, পেনেডুদের মধ্যে কাজ করছিল।

বেলজিয়ামের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা দেখার পর আমার মনে হচ্ছে খেতাব যুদ্ধে তারা থাকতেই পারে। দলটা বেশ শক্তিশালী। তাও বলব, অ্যাজার ছাড়া দলের বাকি কেউ ক্লাবে যে রকম খেলেন সেই উচ্চতায় পৌঁছতে পারেননি। সেটা লুকালু, ব্রুইনরা করতে পারলে অনেক অঙ্কই বদলে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement