মহড়া: উইম্বলডনের প্রস্তুতিতে জোকোভিচ ও নাদাল। রয়টার্স, গেটি ইমেজেস
কে আটকাবে টেনিস বিশ্বের ‘বিগ থ্রি’-কে? এই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে বছরের তৃতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম উইম্বলডন শুরু হওয়ার আগে। বিগ থ্রি অর্থাৎ নোভাক জোকোভিচ, রজার ফেডেরার এবং রাফায়েল নাদাল। যে তিন জন গত ৬৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে ৫৩টি জিতেছেন।
বিশ্বের এক নম্বর জোকোভিচ গত বারের চ্যাম্পিয়ন এবং অল ইংল্যান্ড ক্লাবে পাঁচ নম্বর খেতাব জয়ের দৌড়ে নামবেন। দ্বিতীয় বাছাই ফেডেরার নবম ট্রফি জয়ের রেকর্ড তাড়া করছেন। পাশাপাশি নাদাল যদি খেতাব জিততে পারেন তা হলে পর পর ফরাসি ওপেন এবং উইম্বলডন জয় করবেন আবারও। ঠিক এক বছর আগে জোকোভিচ যখন উইম্বলডনে নেমেছিলেন, তাঁর খেলোয়াড় জীবন বড় প্রশ্নের মুখে ছিল। ডান হাতের কনুইয়ে অস্ত্রোপচারের পরে কোর্টে ছন্দ খুঁজে পাওয়ার লড়াইয়ে ছিলেন সার্বিয়ান তারকা। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে গিয়েছিলেন ২১ নম্বরে। ১০ বছরে তাঁর সব চেয়ে খারাপ র্যাঙ্কিং। কিন্তু দু’সপ্তাহ পরে জোকোভিচ খেতাব জিতে নেন। ২০১১, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের পরে তাঁর চতুর্থ ট্রফি। এই জয়ে জোকোভিচ একটা নজিরও গড়েছিলেন। ১৯৯২ সালে আন্দ্রে আগাসির পরে সব চেয়ে বেশি র্যাঙ্কিংয়ে থাকা কোনও খেলোয়াড়ের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির।
উইম্বলডন জেতার পরেই হারানো ছন্দ খুঁজে পান জোকোভিচ। এর পরে তৃতীয় যুক্তরাষ্ট্র ওপেন এবং সপ্তম অস্ট্রেলিয়ান ওপেনও জেতেন তিনি। এক মাত্র ধাক্কা খান ফরাসি ওপেনে বৃষ্টি বিঘ্নিত সেমিফাইনালে দমিনিক থিমের বিরুদ্ধে হেরে। থেমে যায় দ্বিতীয় বার টানা চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার রেকর্ড গড়ার দৌড়। ‘‘অস্ত্রোপচার হওয়ার পরে ধারাবাহিকতা দেখাতে পারছিলাম না। সেই সময় উইম্বলডন আমাকে আবার আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে সাহায্য করেছে গত বার,’’ বলেছেন জোকোভিচ। সোমবার প্রথম রাউন্ডে যিনি ফিলিপ কোলস্রাইবারের মুখোমুখি হচ্ছেন। যাঁর বিরুদ্ধে মুখোমুখি লড়াইয়ে জোকোভিচ ১০-২ এগিয়ে।
২১ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার দৌড়ে থাকা ৩৮ বছর বয়সি ফেডেরার যদি এ বার সফল হন তা হলে সব চেয়ে বেশি বয়সি গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির গড়বেন। সুইস মহাতারকা আবার এখানে পাঁচটি ম্যাচ জিতলেই প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে একই গ্র্যান্ড স্ল্যামে ১০০টি জয়ের রেকর্ড গড়ার পথেও আছেন। এ বারের উইম্বলডন অভিযানে নামার আগে ফেডেরার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী জোকোভিচ এবং নাদালের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় আমাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাটাই প্রত্যেককে আরও উন্নত করে তুলেছে।’’ মঙ্গলবার ফেডেরার নামবেন দক্ষিণ আফ্রিকার লয়েড হ্যারিসের বিরুদ্ধে। যিনি এ বার এসডব্লিউ নাইনটিনে অভিষেক ঘটাবেন।
নাদাল আবার ১২ নম্বর ফরাসি ওপেন খেতাব জিতে নামছেন উইম্বলডনে। যে ট্রফি জয়ের অর্থ ফেডেরারের সর্বাধিক ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যম স্পর্শ করা থেকে মাত্র দু’ধাপ দূরে আছেন তিনি। তবে উইম্বলডনে নামার আগেই বিরক্ত নাদাল। বিশ্বের দু’নম্বর হয়েও তাঁকে তৃতীয় বাছাই হিসেবে নামতে হচ্ছে বলে। যদি নাদাল খেতাব জিততে পারেন তা হলে তৃতীয় বার ফরাসি ওপেন এবং উইম্বলডন টানা জিতে বিয়র্ন বর্গের নজিরকে স্পর্শ করবেন। নাদাল বলেছেন, ‘‘২০১০ সালে আমি এখানে জিতেছিলাম, প্রথম কয়েকটা রাউন্ডে কড়া প্রতিপক্ষদের সামলাতে হয়েছিল। অনেক সময় উইম্বলডনে নামার আগে ঘাসের কোর্টে বেশি না খেলাটা সাহায্য করে।’’ নাদালের প্রথম রাউন্ডের প্রতিপক্ষ বিশ্বের ২৫৮ নম্বর উইচি সুগিতা।
ভারতীয় সমর্থকদের নজর থাকবে আবার প্রজ্ঞেশ গুণেশ্বরনের উপর। ভারতীয় তারকাও সোমবার প্রথম রাউন্ডের লড়াইয়ে নামছেন। যদিও তাঁর সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। তাঁকে খেলতে হবে ১৫ নম্বর বাছাই কানাডার মিলোস রাওনিচের বিরুদ্ধে। ভারতীয়দের মধ্যে শুধু প্রজ্ঞেশই সিঙ্গলসে লড়াই করছেন। যোগ্যতা অর্জন পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছেন রামকুমার রামনাথন, সাকেত মিনেনি ও অঙ্কিতা রায়না।