প্রথম রাউন্ডে হারলেও মন কাড়লেন সেরিনা। ছবি রয়টার্স
তিনি কোর্টে নামার পর দেখা যায়, ডান চোখের নীচে কালো রঙের একটা দাগ। প্রথমে বোঝা না গেলেও পরে জানা যায়, সেটি এক ধরনের প্লাস্টার। সাইনাসের সমস্যা থেকে বাঁচতেই বিশেষ ধরনের প্লাস্টার পরে নেমেছেন তিনি। উইম্বলডন খেলতে কতটা মরিয়া ছিলেন, এই একটি ঘটনাই তার প্রমাণ দিয়েছে।
বয়স চল্লিশের কোঠা পেরিয়েছে। সেপ্টেম্বরে ৪১ পূর্ণ করবেন তিনি। এক বছর পর খেলতে নেমেছিলেন উইম্বলডনের ঘাসের কোর্টে। গত বছর প্রথম রাউন্ডে চোট পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বিদায় নিতে হয়েছিল। মাঝের একটি বছরে সে ভাবে টেনিস কোর্টে নামেনইনি। ফলে প্রথম রাউন্ডেই অখ্যাত খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে তিন ঘণ্টা ১১ মিনিটের লড়াই, সেরিনার পক্ষে বোধহয় সামলে নেওয়া সম্ভব ছিল না। প্রচণ্ড লড়াই করেও দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠা হল না তাঁর।
উইম্বলডনে এটাই কি তা হলে শেষ অভিযান ছিল? প্রশ্নটা করতেই ফুঁসে উঠলেন সেরিনা। বললেন, “এই প্রশ্নের উত্তর তো এখন দিতে পারব না। আমি নিজেই উত্তর জানি না। কে বলতে পারে পরের বছরও আমি খেলব না। এখানে আসার আগেই বলেছিলাম, টেনিসে ফিরে কী রকম লাগছে সেটা আগে দেখতে চাই। অনুভূতিটা উপভোগ করতে চাই। তার পরে বাকি সিদ্ধান্ত।”
টেনিস উপভোগ করবেন বলেই সেরিনা জানিয়েছেন, বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ইউএস ওপেনে তাঁকে দেখা যাবে। যে কোর্ট তাঁর হাতের তালুর মতো চেনা। নিউ ইয়র্কে আরও এক বার নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করতে চান। বলেছেন, “ওখানেই আমি গ্র্যান্ড স্ল্যাম যাত্রা শুরু করেছিলাম। নিউ ইয়র্কে ইউএস ওপেনে ফেরা মানে নিজের ঘরে ফিরছি। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করে বোঝানো সম্ভব নয়। ঘরের মাঠে খেলতে পারব ভেবে আমি বেশি অনুপ্রাণিত।”
উইম্বলডনে নামার আগে ইস্টবোর্নে ডাবলস ম্যাচ খেলেছেন ওন্স জাবেউরের সঙ্গে জুটি বেঁধে। প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ দেখে মনে হয়েছে তাঁর অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। বিপক্ষ হারমনি ট্যানের বিরুদ্ধে তিন ঘণ্টা ১১ মিনিট হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছেন। প্রতিটি গেমের পিছনে ছুটেছেন। দ্বিতীয় সেটে দ্বিতীয় গেমের খেলা চলেছে প্রায় ২০ মিনিট ধরে। ১২টি ‘ডিউস’ হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ৬-১ গেমে সেট জিতেছেন। কিন্তু ম্যাচ বাঁচাতে পারেননি। ম্যাচের পর সেরিনা মেনেই নিলেন, দীর্ঘ দিন না খেলার কারণেই হারতে হয়েছে। বলেছেন, “যদি প্রতি সপ্তাহ, প্রতি দিন খেলি, তা হলে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলার মতো মানসিকতা তৈরি হয়ে যায়। এখানে সেটার অভাব ছিল। কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গা কাজে লাগাতে পারলে ম্যাচটা হয়তো জিতেই যেতাম।”
সে জন্যেই উইম্বলডনে হারের পর সেরিনার কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে না। কিছু দিনের মধ্যেই তিনি আবার নেমে পড়বেন অনুশীলনে। বলেছেন, “ভাল খেলেও হেরে গিয়েছি। এটা মানতে পারছি না। হয়তো অন্য কোনও প্রতিপক্ষ থাকলে জিতে যেতাম। তাই অনুশীলনে নেমে পড়ব শীঘ্রই।”